মহানগর ডেস্ক: ফের হাতির তান্ডব । মালবাজার মহকুমার নাগরকাটায় হাতির হানা। হাতির দাপটে ক্ষতি প্রায় ৬০ বিঘা জমির আলু সহ প্রচুর শাকসবজির। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার গভীর রাতে নাগরাকাটার অঙ্গরভাষার ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত পূর্ব খয়েরকাটায়। প্রায় ৬০ বিঘা জমির আলু নষ্ট করেছে হাতির পাল। এছাড়া বেশ কয়েক বিঘা জমির শাক-সবজি যেমন শিম, মটর, মুলো ইত্যাদিরও ক্ষতি করেছে। অন্তত ৩০ জন কৃষকের জমির ফসলের আলু নষ্ট হয়েছে এই হাতির দলের আক্রমণে। বহু কৃষকই টাকা ধার করে আলু চাষ করেছিলেন , যার জেরে এক কৃষক হৃদরোগেও আক্রান্ত হয়েছেন।
স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, এই ঘটনায় ওই এলাকার দুলাল রায় নামে এক কৃষক দিশেহারা হয়ে পড়েন, চিন্তায় রাতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হন। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের অভিযোগ, এলাকায় হাতি ঢুকলেও বন দফতর কনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না । স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাশের নাথুয়া জঙ্গল থেকে ৮-১০টি হাতির একটি দল আলু চাষের জমিতে ঢুকে পড়ে গতকাল রাতে। প্রচণ্ড শীতে এই সময় আলু রক্ষা করাই কৃষকের পক্ষে একটা কঠিন কাজ হয়ে দারায়। উপরন্তু হাতির পাল নির্বিচারে বিঘার পর বিঘা আলু ও সবজি নষ্ট করে দিয়েছে। নিরঞ্জন সরকার নামে এক কৃষক বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই জমিতে হাতি ঢুকেছে। তবে গতকাল রাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি। কেউ জমি লিজ ব্যাংকে রেখেছিলেন আবার কেউ মহাজন থেকে ঋণ নিয়ে আলু চাষ করেছেন। অভিযোগ, সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হল বন বিভাগ নীরব।
গত ২ বছরে এখানে হাতির অত্যাচার চরমে পৌঁছেছে। ভয়ে রাতে চোখের পাতা এক করা যায় না। কৃষকরা কীভাবে তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে পারে তা প্রশাসনের দেখতে হবে বলে দাবি জানিয়েছেন কৃষকরা। এদিন অনেক কৃষক বন বিভাগের নাথুয়া রেঞ্জে পৌঁছে ক্ষোভ প্রকাশও করেন। নাথুয়া রেঞ্জের রেঞ্জার চন্দন ভট্টাচার্য বলেন, কৃষকরা আবেদন করলে নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ পাবেন। টর্চ লাইট দেওয়ার দাবির বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও জানান রেঞ্জার।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই খাবারের সন্ধানে রাতের অন্ধকারে লোকালয়ে হানা দিয়েছিল হাতি। জঙ্গল থেকে নদী পার হয়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে হাতি। বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাঙে। গভীর রাতে হাতি ঘর ভাঙ্গা শুরু করতেই, কোনওমতে ঘরের পেছন দিক দিয়ে পালিয়ে প্রাণে বাঁচেন বাসিন্দারা। ঘটনাটি ঘটে জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ির পূর্ব মাগুরমারিতে। তার আগে খাবারের সন্ধানে শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের রান্না ঘরের দেওয়ালও ভেঙে দেয় হাতি। রাত ২টো নাগাদ হানা দেয় হাতি। মালবাজারের খারিয়ার বান্দার জঙ্গল থেকে একটি হাতি বের হয়ে ঢুকে পড়ে এলাকায়। হাতিটি ওই এলাকার শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের রান্না ঘরের দেওয়াল ভেঙে ঢুকে যায়। কিন্তু রান্না ঘরে কোনও খাবার মজুত ছিল না। তাই হাতিটি আর কিছু খেতে পারেনি। শেষে স্থানীয় বাসিন্দাদের চিৎকারে আবার জঙ্গলে ফিরে যায় হাতিটি।