মহানগর ডেস্ক: রাহুল গান্ধীর ন্যায় যাত্রায় এবার সরাসরি বিরোধীতা শুরু করল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসন। বীরভূমে শুক্রবার রাহুল গান্ধির “ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা” প্রবেশ করবে। পুলিশের পক্ষ থেকে সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছে, মাধ্যমিক পরীক্ষা আজ থেকে শুরু হচ্ছে। তাই রাহুল গান্ধীর ন্যায় যাত্রার অনুমতি দেওয়া যাবে না। রাহুল গান্ধী যদি নিয়ম এবং নির্দেশ ভাঙেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বীরভূমের পুলিশ সুপারের দফতর থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, রাহুল গান্ধির “ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা”-র কোনও অনুমতি নেই। এর ফলে রাহুল গান্ধী বীরভূমে পদযাত্রা ও সভার মতো জনসংযোগ অভিযান করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে বড় রকমের সংশয় দেখা দিয়েছে।
বীরভূম পুলিশ সুপারের দফতরের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কংগ্রেসের তরফে রাহুল গান্ধির “ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা”র জন্য আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য পুলিশের তরফ থেকে সেই আবেদনে অনুমতি না দিয়ে আনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে।। কিন্তু তা সত্ত্বেও আজকে বীরভূম জেলায় প্রবেশ করছে রাহুল গান্ধির ভারত জড়ো ন্যায় যাত্রা। সে ক্ষেত্রে, পরিস্থিতি বুঝে পুলিশের তরফ থেকে বাধা দেওয়া হবে বলে বীরভূম জেলার পুলিশ সুপার জানিয়েছেন। পাশাপাশি, কোনও পথসভা বা জনসভা করলেও রাহুল গান্ধির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় বলে জানানো হয়েছে পুলিশ প্রচাসনের তরফে। আজ, শুক্রবার, রাহুল গান্ধির “ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা” মুর্শিদাবাদ জেলার খড়গ্রাম, আওগ্রাম, এড়োয়ালি, পারুলিয়া হয়ে শুক্রবার বীরভূমের তারাপীঠ থানার বুধিগ্রাম অঞ্চলের মাঝিপাড়ায় পৌঁছনোর কথা। রাহুলের সঙ্গে থাকবেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। আগে রাহুলের আসার কথা ছিল সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ। কংগ্রেস সূত্রের খবর, মাধ্যমিক পরীক্ষার কথা মাথায় রেখে তা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রদেশ কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, সফর সূচি অনুযায়ী, বিকেল সাড়ে ৪টে পর্যন্ত বীরভূমে থাকার কথা কংগ্রেস সাংসদের। ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে, রামপুরহাট থানার মনসুবা মোড় ও বগটুই মোড় হয়ে রাহুল গান্ধির গাড়ি ভাঁড়শালাপাড়া মোড়ে আসবে। সেখানে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে গাড়ি থেকেই ধন্যবাদ জ্ঞাপন করার কথা রাহুল গান্ধীর। সেই কারণে ভাঁড়শালাপাড়া মোড়ে রাহুলের গাড়ি কিছু ক্ষণের জন্য দাঁড় করানো হতে পারে। জেলা কংগ্রেস সভাপতি মিল্টন রশিদ জানান, রাহুলের যাত্রাপথে জেলার ২৫০ জন দলীয় কর্মী থাকবেন। মাড়গ্রাম থানার ভোল্লা ক্যানাল মোড় পেরিয়ে একটি বেসরকারি স্কুলে রাহুলের দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর পরে জাতীয় সড়ক ধরে নলহাটি ও মুরারইয়ের রাজগ্রাম পেরিয়ে ‘ন্যায় যাত্রা’ চলে যাবে ঝাড়খণ্ডে। এখন দেখার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ রাহুল গান্ধীর সঙ্গে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ও তাঁর প্রশাসনের মতো আআরণ করে কি না। কেন না অসমে রাহুল গান্ধিকে ন্যায় যাত্রায় সব রকমের বাঁধা দেওয়া হয়েছে। এফআইআর করা হয়েছে তাঁর নামে।
বাংলাতেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাহুল গান্ধীর উত্তরবঙ্গে আসার দিনই নিজের কর্মসূচি রেখেছেন। তাঁর জন্য মালদার রতুয়া থানা এলাকার ভালুকায় গেস্ট হাউসে মধ্যাহ্নভোজের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল কংগ্রেসের তরফে। কিন্তু সেই অনুমতি দেয়নি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জেলা প্রশাসন। অন্যদিকে আবার, মুর্শিদাবাদের বহরমপুর স্টেডিয়ামে রাহুল গান্ধির রাত্রিবাসের অনুমতিও দেয়নি রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। কংগ্রেস জানিয়েছে, দুই ক্ষেত্রেই লিখিতভাবে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রশাসনের তরফে তা নাকচ করে দেওয়া হয়েছে। এর আগেই মল্লিকার্জুন খাড়গে মমতাকে চিঠি লিখে রাহুল গান্ধির ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রার জন্য নিরাপত্তা চেয়েছিলেন। তার পরেও রাহুল গান্ধির ফ্লেক্স ছেড়া হয়েছে, রাস্তার বাঁধা দেওয়া হয়েছে। এবার বীরভূমে সরাসরি রাহুলের ন্যায় যাত্রার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁচিয়ারি দিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসন।