মহানগর ডেস্কঃ একেবারে যেন কোন সিনেমার কাল্পনিক ট্রেলার।ঠাণ্ডা মাথায় সাজানো নিপুণ ছক। প্রায় ৫৬ দিনের মাথায় যখন শেখ শাহাজান ধরা দিল, ততক্ষণে সন্দেশখালি জুড়ে ঘটে গিয়েছিল নানান চাঞ্চল্যকর ঘত্না।তবে ওই ৫৬ দিন সন্দেশখলির ‘বাদশা’ কোথায় ছিল, কিভাবে ছিল আর তাঁর সঙ্গী বা কে ছিলেন তা জানেন কি?CBI জেরায় সেই সমস্ত তথ্যই এবার সামনে এলো। জেরায় শাহাজাহান জানিয়েছেন নিজস্ব নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যেই দিব্যি ছিলেন তিনি। আকুঞ্জিপাড়া এলাকাতেই বারে বারে জায়গা পরিবর্তন করে সেখানেই ৫৬ দিন ধরে স্বেচ্ছায় নিখোঁজ ছিলেন শাহাজাহান। এমনিই বিস্ফোরক দাবি সিবিআই আধিকারিকদের।
জানা যাচ্ছে, গত ৫ জানুয়ারি ইডি আধিকারিকদের আক্রমণের পরে আকুঞ্জিতে শাহজাহানের বাড়িতে সকাল সাড়ে নটা নাগাদ পৌঁছে যান ফারুক। এরপরে ফারুকের বাইকে চেপেই শাহাজাহান নিজের বাড়ি ছেড়ে আকুঞ্জিতে ফারুকের বারিতে পৌঁছে যায়। তার কিছু সময় পরেই শাহাজানের দুই ভাই সিরাজ ও আলমগির পরিবারের বাই সদস্যদের নিয়ে বেড়িয়ে পৌঁছে যায় ফারুকের বারিতে। এরপরে ৫ জানুয়ারি বিকেলে দক্ষিণ ২৪ পরগণার জীবনতলায় পৌঁছে যান শাহজাহান।সেখানকার এক স্থানীয় তৃণমূল নেতা শাহাজাহানের আপৎকালিন গা ঢাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেন। এরপরে জীবনতলায় ওই তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে দুদিন গা ঢাকা দিয়ে থাকার পরে ফের শাহাজাহান ফিরে আসেন আকুঞ্জিতে। ১৭ জন নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষীর সাহায্যেই নিজের এলাকায় ৪টি বাড়ি বদল করে থাকতে শুরু করেছিল শাহাজাহান। সেই ৫৬ দিনের মধ্যেই একাধিকবার আব্বাস মীর, সঈফুদ্দিন শেখ, আব্বাসউদ্দীন ও ফারুকের বাড়িতে গা ঢাকা দিয়েছিলেন তিনি।সন্দেহখালির সমস্ত হাল-হকিকত আকুঞ্জিপাড়াতে বসেই জানতে পারত সন্দেশখালির বাদশা। মাঝেমধ্যে দিনের আলো নিভে গেলে বাইক ও একটি চারচাকা নিয়ে রাস্তায় বেরতেন তিনি। জানা যাচ্ছে এর মধ্যেই নাকি নিউটাউনের একটি ফ্ল্যাটেও বেশ কয়েকবার যাতায়াত করেছেন তিনি। তবে সেই ফ্ল্যাটটি শাহাজাহানের নয় বলেই দাবি করেছে সে। ফলে ওই ফ্ল্যাটের মালিকানা কার হাতে, তা নিয়েও তদন্ত শুরু করেছে তদন্তকারী আধিকারিকেরা।
সিবিআই এর জেরায় সামনে উঠে এসেছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। নিখোঁজ থাকাকালীন দিন কয়েক মার্কেটের কাছে একটি গেস্ট হাইসেও আস্তানা গেড়েছিল শাহাজাহান। রাজবাড়ির, বয়ারমাড়ি, কানমাড়ি, হাটগাছি এলাকাতেও যাতায়াত ছিল তাঁর। দলের কয়েকজন নেতার সঙ্গে ফেব্রুয়ারি মাসে হাটগাছির এক স্কুলে বৈঠকও করেছিলেন শাহজাহান।