মহানগর ডেস্ক : শুভেন্দু অধিকারীকে সন্দেশখালি যাওয়ার অনুমতি দিল কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। আদালত জানায়, শুভেন্দু অধিকারী এবং শঙ্কর ঘোষ সন্দেশখালি যেতে পারবেন। তাঁদের সঙ্গে কোনও সমর্থক বা দলীয় কর্মী যেতে পারবেন না। তা নিশ্চিত করতে হবে। এলাকায় যেন শান্তি ভঙ্গ না হয়, সেটা দেখবে রাজ্য পুলিশ।
এদিকে ধামাখালিতে প্রাথমিক ভাবে পুলিশি বাধা পেলেও সন্দেশখালিতে শেষ পর্যন্ত পৌঁছলেন সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য বৃন্দা কারাত। মঙ্গলবার ডিভিশন বেঞ্চের এই নির্দেশের পর এদিন সকালে যে পুলিশ শুভেন্দু অধিকারীকে সন্দেশখালি যেতে বাধা দিয়েছিল, সেই পুলিশই ব্যারিকেড তুলে দিয়ে শুভেন্দু অধিকারীকে সন্দেশখালি যাওয়ার অনুমতি দিল। কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের এই রায়ে রাজ্য সরকারের মুখ পুড়ল। শুভেন্দু অধিকারী সন্দেশখালিতে পৌঁছেই প্রথমে এখানকার মা-বোনেদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। জানতে চান, “আপনারা ভালো আছেন?” শুভেন্দু অধিকারীকেও ফুল ও মালা দিয়ে অভিবাদন জানান গ্রামবাসীরা। শুভেন্দু পায়ে হেঁটে, টোটোয় চড়ে সন্দেশখালির গ্রামে গ্রামে পরিক্রমা করেন, মহিলা ও পুরুষদের অভিযোগ শোনেন। যে মহিলাদের হাতে গত ৭ ফেব্রুয়ারি লাঠি, বাঁশ ছিল এদিন শুভেন্দুকে তারা ফুল-মালা দিয়ে বরণ করে নেন। গ্রামবাসীরা শুভেন্দুর কাছে শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতারের দাবি জানান। কেউ কেঁদে, কেউ শুভেন্দুর হাতদুটো ধরে নিজেদের সমস্যার কথা কথা জানান। শুভেন্দু বলেন, “আমি গ্রামে ঢুকলে সব জানতে পারব, গ্রামের মহিলারা সব বলে দেবেন, তাই আমাকে সন্দেশখালিতে ঢুকতে দিচ্ছিল না মমতা পুলিশ।”
শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বিজেপির আর এক বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ সন্দেশখালিতে যান। শুভেন্দু অধিকারী এখানকার মানুষদের বলেন, “আপনারা মাথানত করবেন না। লড়াই করুন। শেখ শাহজাহানের ফাঁসি চাই।” গ্রামের মহিলা-পুরুষ নিবিশেষে শুভেন্দু অধিকারীকে কাছে পেয়ে যে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন সেটা সন্দেশখালির মহিলাদের আচরণে প্রকাশ পায়। শুভেন্দু অধিকারী এদিন সন্দেশখালিতে পৌঁছতেই তাঁর কাছে ক্ষোভ উগরেনদেন মহিলারা। শুভেন্দু পায়ে হাত দিয়ে মহিলাদের প্রণাম করেন। মহিলাদের যাবতীয় নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করে শুভেন্দু বলেন, আপনারা কোনও অবস্থাতেই নিজেদের অবস্থান থেকে পিছনে সরবেন না।
এদিকে কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি বলেন, “শেখ শাহজাহানকে যদি পুলিশ গ্রেফতার করতে না পারে তাহলে সন্দেশখালিতে ১৪৪ ধারা প্রয়োগের দরকার কি? প্রয়োজনে শেখ শাহজাহানকে কলকাতা হাই কোর্টে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হবে। সেদিন সিবিআই, ইডি, রাজ্য পুলিশ সবাই উপস্থিত থাকবে। শেখ শাহজাহানকে ধরতে না পারার দায় রাজ্য সরকার এবং পুলিশের। এই কারনেই বিভিন্ন সংস্থাকে সন্দেশখালিতে আটকে দেওয়া হচ্ছে। শেখ শাহজাহানের জন্যই সন্দেশখালির আজ এই পরিস্থিতি।”