Home Bengal বিকাশের মামলার জন্যই চাকরি আটকে, দাবি এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীদের

বিকাশের মামলার জন্যই চাকরি আটকে, দাবি এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীদের

by Mahanagar Desk
48 views
slst-candidate-against-bikash-ranjan-bhattacharya

তৃণমূলের তরফে বারবার বলা হচ্ছে রাজ্য শিক্ষক নিয়োগের চাকরির জট মামলার জন্য। আর এই জট সৃষ্টি করেছেন সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ ও আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। এসএলএসটি চাকরি প্রার্থীদের আগেও এই কথা বুঝিয়েছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। রবিবার কুণাল ঘোষের সঙ্গে তৃণমূল ভবনে দেখা করার পর এসএলএসটি চাকরীপ্রার্থীরা দাবি করলেন, বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য মামলা করার জন্যই তাঁদের হয়ে যাওয়া চাকরি আটকে রয়েছে। কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষার চাকরিপ্রার্থীরা রাজ্যসরকারের কাছে দ্রুত আদালতে হলফনামা দিতে আবেদন জানান। কারণ আদালতের স্থগিতাদেশের ফলে তাঁদের নিয়োগ আটকে রয়েছে। চাকরীপ্রার্থীরা আশাবাদী কুণাল ঘোষের সহায়তায় তাঁরা চাকরি অবশ্যই পাবেন।
কুণাল ঘোষ বলেন, “কী্নশুক্ষা, শারীরশিক্ষা চাকরিপ্রার্থীদের চাকরির সুপারিশপত্র মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে হয়ে যায়। তারপর বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য একজন চাকরীপ্রার্থীকে দিয়ে একটা বেসলেস আবেদন করিয়ে চাকরিগুলিকে স্টে করিয়ে রেখেছেন।”

রবিবার তৃণমূল ভবনে রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের সঙ্গে দেখা করেন শারীরশিক্ষা ও কর্মশিক্ষার চাকরিপ্রার্থীরা। প্রায় ২৫ মিনিটের মতো সময় ধরে তাঁদের মধ্যে কথা হয়। চাকরিপ্রার্থীরা অভিযোগ করেন, “বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের আচমকা মামলার কারণে তাঁদের হওয়া চাকরি আটকে রয়েছে।”

তবে এই প্রসঙ্গে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য তাঁর পুরনো এবং প্রথম থেকে বলে আসা সেই একই বিষয় উল্লেখ করে রবিবার বলেন, “পরিষ্কার কথা হল আইনি পথে চাকরি হবে। বেআইনি চাকরি বাতিল হবে। আমি সবসময়ই যোগ্য প্রার্থীদের সুযোগ পাওয়ার জন্য মামলা করেছি। এখনও তাই করছি। যদি কেউ বলে থাকে আমি অযোগ্য প্রার্থীদের মামলা করছি, তাঁরা সত্যের অপলাপ করছেন। যাঁরা সুপার নিউমেরিক পোস্টের চাকরির জন্য হইহই করছেন, তাঁরা আসলে তৃণমূলেরই এজেন্ট। কারণ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আদালতে পরিষ্কার বলেছেন, বেআইনিভাবে যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের চাকরিও থাকবে, তারপর সুপার নিউমেরারি পোস্ট তৈরি করে এই কয়েকজনকে চাকরি দেবেন। এটা আরেকটা দুর্নীতি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই চাকরি প্রার্থীরা কুণাল ঘোষের মিথ্যা কথায় পরিচালিত হয়ে দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ছেন। বুঝতে পারছেন না কত বড় দুর্নীতিতে ওনাদের জড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।”

প্রসঙ্গত, গত ২০১৬ সালে শারীরশিক্ষা ও কর্মশিক্ষা পদে শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগের পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছিল। সেই পরীক্ষা হয় ২০১৭ সালে এবং পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয় ২০১৮ সালে। তবে সেই ফলাফল সন্তোষজনক নয় বলে তখন আদালতে যান ১২৮০ জন এসএলএসটি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থী। ২০১৯ সালে বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্যের বেঞ্চে এই চাকরিপ্রার্থীদের হয়ে মামলা লড়েন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। সেই সময় সংশ্লিষ্ট সিঙ্গল বেঞ্চ এই চাকরিপ্রার্থীদের পক্ষে রায় দেয়।

এখন চাকরি চাকরিপ্রার্থীরা অভিযোগ করছেন, যখন তাঁদের চাকরিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর হতে চলেছে ঠিক তখনই পুনরায় মামলা করে বসেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তখন বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য মামলা করেনবতাঁদের হয়ে যাঁরা পরীক্ষা দেননি বা অযোগ্য। এই মামলার ফলে ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে তাঁরা চাকরির সুপারিশপত্র পেয়ে গেলেও চাকরি পাওয়া আটকে যায়। চাকরীপ্রার্থীদের অভিযোগ, এর ফলে তাঁরা এখন চূড়ান্ত সমস্যার আইনি জটে ঝুলে রয়েছেন, অনিশ্চিত তাঁদের ভবিষ্যৎ।
এদিকে ৫ ফেব্রুয়ারি, সোমবারের মধ্যে রাজ্যের কাছে এই মামলার জন্য হলফনামা চেয়েছেন বিচারপতি। কমিশনের তরফে ইতিমধ্যে যাবতীয় তথ্য দিয়ে দেওয়া হয়েছে। ৫ ফেব্রুয়ারি হলফনামা জমা দেওয়া হলে ৭ ফেব্রুয়ারি এই চাকরিপ্রার্থীদের যাবতীয় মামলা শুনানি হবে বলে চাকরিপ্রার্থীরা জানিয়েছেন।

চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ , “বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য সবসময় আমাদের পক্ষেই ছিলেন। ২০১৯ সালে উনিই প্রমাণ করেছিলেন আমাদের প্যানেলটা বৈধ। কিন্তু এখন তাঁর প্রতি আমাদের প্রশ্ন, যখন বৈধ প্যানেল থেকে আমরা চাকরি পাচ্ছি, সেই সময় প্যানেলের বাইরের প্রার্থীদের নিয়ে এসে আপনি কী প্রমাণ করতে চাইছেন? বিকাশবাবু আপনার উদ্দেশ্যটা কী? একজন চাকরি পেতে হলে তাঁকে লিখিত ও ভাইভার বসতে হয়, যাঁরা এই প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করেননি তাঁদের আপনি কীভাবে পাশ করাবেন?”

তৃণমূলনেত্রী থেকে তৃণমূল মুখপাত্র বরাবরই কোনও আমল দিচ্ছেন না টাকার বিনিময়ে এবং বেআইনি নিয়োগের অভিযোগের। তাঁরা বারবার বলে আসছেন আইনি সমস্যা সৃষ্টি করে মামলাবাজরা হওয়া চাকরি আটকে রেখেছেন। তবে বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য সহ সমস্ত বিরোধীরা রাজ্যের শাসকদলকে বলে আসছে, টাকার বিনিময়ে অযোগ্যদের চাকরি দেওয়া হয়েছে, এই অযোগ্যদের পদ থেকে সরিয়ে যোগ্য এবং যাঁরা চাকরির পরীক্ষায় পাশ করেছে রাজ্য তাঁদের চাকরি দিক। অযোগ্যদের পদে রেখে সুপারনিউমেরিক পদ সৃষ্টি করে চাকরি দেওয়া যাবে না।

You may also like