Home Bengal কেন্দ্রে আটকে রেখেছে শিক্ষায় বরাদ্দ ১,০০০ কোটি,দেওয়া যাচ্ছে না পড়ুয়াদের স্কলারশিপ,অভিযোগ রাজ্যের! বিপাকে শিক্ষার্থীরা, দায় কার?

কেন্দ্রে আটকে রেখেছে শিক্ষায় বরাদ্দ ১,০০০ কোটি,দেওয়া যাচ্ছে না পড়ুয়াদের স্কলারশিপ,অভিযোগ রাজ্যের! বিপাকে শিক্ষার্থীরা, দায় কার?

by Mahanagar Desk
29 views

মহানগর ডেস্ক: রাজ্যের অভিযোগ, কেন্দ্র রাজ্যকে প্রাপ্য শিক্ষাক্ষেত্রের বরাদ্দের সাহায্যের অর্থ দেয়নি। অর্থদফতরের অনুমোদন থাকা সত্বেও ১০০০ কোটি বরাদ্দ হয়নি বাংলার জন্য। সাধারণত কেন্দ্র থেকে প্রতি রাজ‍্যের শিক্ষাক্ষেত্রে বরাদ্দ অঙ্কের পরিমাণ নির্দিষ্ট থাকে। এবারে বাংলাতে শিক্ষাক্ষেত্রে বরাদ্দ হয়েছে ১০০০ কোটি টাকা। কিন্তু সমগ্র শিক্ষা মিশনের গৃহীত অর্থ কেন্দ্র আটকে দিয়েছে বলে অভিযোগ রাজ্যের শাসকদলের। রাজ্যের বক্তব্য, কেন্দ্রের দাবি একটাই, পিএমশ্রীকে সমগ‍্র শিক্ষা মিশনের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে রাজ্যের এই প্রকল্প, তাহলেই কেন্দ্রের তরফে টাকা মিলবে। এখন প্রশ্ন ভোটের মুখে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে সমগ্র শিক্ষা মিশনের টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে বলির পাঠা হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন তিনিই এসভিএমসিএম, ওয়েসিস,নবান্ন স্কলারশিপের টাকা দেন রাজ্যের তহবিল থেকে। তাহলে কেন্দ্র টাকা দেয়নি বলে এখন কেন এই স্কলারশিপের টাকা আটকে রাখা হচ্ছে? এর আগে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতর থেকে বলা  হয়েছে, প্রথমে এসভিএমসিএম স্কলারশিপের নতুন আবেদনকারীদের টাকা দেওয়া হবে। সেই অনুযায়ী অনেকে টাকা পেয়েছেন। কিন্তু এখন বলা হচ্ছে কেন্দ্র ১০০০ কোটি টাকা রাজ্যকে দেয়নি, তাই এসভিএমসিএম, ওয়েসিস,নবান্ন স্কলারশিপের টাকা দেওয়া যাচ্ছে না। এই টাকায় বহু পড়ুয়াই তাঁদের ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিক্যাল পড়া এবং গবেষণা চালাবার খরচ মেটান। তাই তাঁরা এখন আর্থিক সঙ্কটের মুখে পড়েছেন।

প্রসঙ্গত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল নেতৃত্ব দাবি করেন, তাঁরা রাজ্যের পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষা সহ সব স্তরের শিক্ষায় এসভিএমসিএম বা বিবেকানন্দ মেরিট অ্যান্ড মিনস স্কলারশিপ, ওয়েসিস,নবান্ন স্কলারশিপ দেন যোগ্য ছাত্রছাত্রীদের। এটা ভোটের সময় প্রচারেও তুলে ধরা হয়। তাহলে এখন কেন রাজ্য বলছে কেন্দ্র টাকা না দেওয়ায় এসভিএমসিএম, ওয়েসিস,নবান্ন স্কলারশিপের টাকা দেওয়া যাচ্ছে না? তাহলে কী কেন্দ্রের টাকায় রাজ্য এই স্কলারশিপের টাকা উচ্চশিক্ষায় পাঠরত যোগ্য পড়ুয়াদের দেয়?
কেন এই টাকা আটকে রয়েছে?
শিক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা কেন দেওয়া স্থগিত থাকবে তার কারণ হিসেবে কেন্দ্র জানায়, পিএমশ্রীকে সমগ্র শিক্ষা মিশনের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে, সেটা করলেই ১০০০ কোটি টাকা রাজ্য পাবে। কিন্তু এর তীব্র বিরোধীতা করে বাংলা সরকার। ২২ ও ২৭ শে মার্চ দুবারেই বাংলা থেকে আধিকারিকদের একটি দলকে কেন্দ্রীয় সরকারের দফতরে পাঠানো হয়, কিন্তু তাদের ফেরত পাঠানো হয় এই বলে যে পিএমশ্রীকে শর্তসাপেক্ষ ভাবে সমগ্র শিক্ষা মিশনের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। তবে বাংলার প্রাপ‍্য অর্থ কেন এখনও অনুমোদন পায়নি তা নিয়ে মুখ্যসচিব, শিক্ষাসচিব ও শিক্ষামন্ত্রী দিল্লিতে চিঠি দিয়েছেন। পাশাপাশি বাংলার শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত‍্য বসু এবিষয়ে চরম বিরোধিতা জানিয়েছেন। বিজেপির প্রশ্ন কেন্দ্রের টাকায় রাজ্য স্কলারশিপ দেবে অথচ সেখানে কেন্দ্রের নাম যুক্ত না করে এই স্কলারশিপ প্রদান রাজ্যের সাফল্য বলে ভোটে তৃণমূল প্রচার করবে এটা কেমন দ্বিচারিতা? সবকটি কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নাম বদলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের নামে সেই প্রকল্পের টাকা রাজ্যের উপযুক্ত প্রাপকদের মধ্যে বিলি করে সেই কাজকে রাজ্যের সাফল্য বলে দাবি করছেন, এটা দ্বিচারিতা। যদি এসভিএমসিএম স্কলারশিপ রাজ্যের তহবিল থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য অনুযায়ী দেওয়া হয়, তাহলে ১০০০ কোটি টাকা কেন্দ্র না দেওয়ায় এসভিএমসিএম স্কলারশিপের টাকা দিতে পারছেন না কেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?

এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, সমগ্র শিক্ষা মন্ত্রকের অধীনে চলতি শিক্ষা বর্ষে রাজ্যের জন‍্য মোট অর্থ ধার্য হয়েছে ১৫০০ কোটি। এর মধ‍্যে ৫০০ কোটির অনুদান মিললেও এখনও মেলেনি ১০০০ কোটি টাকা। এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, সমগ্র শিক্ষা মিশনকে পিএমশ্রী এর সঙ্গে যুক্ত করতে হবে, তাহলেই রাজ্য ১০০০ কোটি টাকা পাবে।

পিএমশ্রী আসলে কী? এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখা দরকার যে সাধারণত প্রত‍্যেক প্রকল্পের খাতেই কেন্দ্র ও রাছ‍্য সরকারের অনুদানের পরিমাণ ৬০:৪০ অনুপাতে হয়। সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার সমগ্র দেশ জুড়ে বিভিন্ন সরকারি স্কুল স্থাপনের উদ‍্যোগ নিলেও স্কুলগুলির নামের আগে যুক্ত হবে পিএমশ্রী। আর এটি নিয়েই প্রতিবাদ করেছে বাংলা। কেননা সেক্ষেত্রে বাংলার ৪০% অনুদান থাকছে কিন্তু কেন শুধু প্রধানমন্ত্রীর নামেই হবে? শুধু বাংলা নয়, এই দাবি নিয়ে আরও দুটি রাজ‍্য ওড়িশা ও তামিলনাড়ুও প্রতিবাদ করেছে। তবে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে নৈতিকভাবে কেন্দ্রের আপত্তি রয়েছে। তবে কেন্দ্রের পিএমশ্রী লেখার দাবি নিয়ে একগুঁয়েমি এবং রাজ্যের পিএমশ্রী লিখতে না চাওয়ার টানাপোড়েনে নাজেহাল রাজ্যের বহু যোগ্য এবং আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া ইঞ্জিনিয়ারিং, ডাক্তারি পড়ুয়া এবং গবেষক। রাজনৈতিক বিবাদ ভুলে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের এই সমস্যা সমাধান করে দ্রুত এসভিএমসিএম স্কলারশিপের টাকা প্রাপকদের দেওয়া হোক বলে এসভিএমসিএম স্কলারশিপ প্রাপক পড়ুয়াদের রাজ্য ও কেন্দ্রের কাছে দাবি, না হলে মাঝপথে অনেকের পড়া থমকে যেতে পারে।

You may also like

Mahanagar bengali news

Copyright (C) Mahanagar24X7 2024 All Rights Reserved