শেখ শাহজাহান ছাড়া মঙ্গলবার প্রথম সন্দেশখালির কালীনগরে তৃণমূলের মিটিং হল। এদিন কালীনগরে যান রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক, তৃণমূল নেতা নারায়ণ গোস্বামী, হাজি নুরুল সহ কয়েকজন তৃণমূল নেতা। কালীনগরে পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘‘মা, বোনেরাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতীক। এটা উত্তরপ্রদেশ নয়। যেখানে ধর্ষণ করে নির্যাতিতাকে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলা, এখানে মায়েদের সম্মান নষ্ট হয় না।’’ এর পর পার্থ ভৌমিক ঘেষণা, “আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি সন্দেশখালিতে তৃণমূলের জনসভা হবে।”
সন্দেশখালিতে মঙ্গলবার ঢুকতে দেওয়া হয়নি যুব কংগ্রেসের প্রতিনিধি এবং বিজেপি প্রতিনিধিদের। রাস্তায় আটকে দেওয়া হয় কংগ্রেস নেতা অমিতাভ চক্রবর্তী এবং বসিরহাট এসপি অফিসের অদূরে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও বিজেপি কর্মীদের। সোমবার সন্দেশখালি থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে আটকে দেওয়া হয় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ বিজেপির ৬৭ জন বিধায়ককে। তার আগে সিপিএম নেত্রী কনীনিকা ঘোষ এবং মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় সহ সিপিএম প্রতিনিধি দলকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি সদেশখালিতে। তবে মঙ্গলবার শুধুমাত্র রাজ্যের শাসক দলের প্রতিনিধি বলেই কী পার্থ ভৌমিক, নারায়ণ গোস্বামীদের সন্দেশখালি কালীনগরে যেতে দিল পুলিশ? এই প্রশ্ন এখন রাজ্য রাজনীতিতে উঠছে। বিরোধীরা সন্দেশখালিতে অশান্তি করবে আর শাসকদল অশান্তি করবে না? এটা কি সত্যি? এ পর্যন্ত সন্দেশখালির মহিলারা কিন্তু যাবতীয় অভিযোগ করেছেন রাজ্যের শাসক দলের নেতা শেখ শাহজাহান, উত্তম সর্দার এবং শিবপ্রসাদ হাজরার বিরুদ্ধে। এই তিন তৃণমূলের যোগ্য নেতার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ শুনে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি পর্যন্ত চমকে উঠেছেন। তবে সন্দেশখালির এহেন তৃণমূল নেতাদের নিয়ে মুখ খোলেননি তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার সদস্য পার্থ ভৌমিক সন্দেশখালিতে দাঁড়িয়ে শেখ শাহজাহান, শিবপ্রসাদ হাজরা, উত্তম সর্দারের বিরুদ্ধে একটা শব্দ উচ্চারণ না করে বললেন, “এখানে মা,বোনেদের সম্মান নষ্ট হয় না”, রাজ্যের মানুষ পার্থ ভৌমিকের কাছে প্রশ্ন করছেন, ” তা হলে শেখ শাহজাহান, উত্তম সর্দার, শিবপ্রসাদ হাজরা তাহলে রাতে সন্দেশখালির মহিলাদের বেছে বেছে কি সম্মান জানাবার জন্য ডাকত?”
এই প্রসঙ্গে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, “এই রাজত্বে সম্ভব নয়, তা না হলে শেখ শাহজাহানদের এনকাউন্টারে মেরে ফেলা উচিত।”
এদিকে বসিরহাটে এসপি-র অফিসে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে সুকান্ত মজুমদারদের পুলিশের বাঁধার মুখে পড়তে হয়। পুলিশ ব্যাপক মারধর করে বিজেপি নেতাকর্মীদের। সুকান্ত মজুমদার এসপি অফিসের বাইরে অবস্থান করছেন ধৃত বিজেপি কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে। দলের কর্মীদের পুলিশ না ছাড়লে সারারাত অবস্থান করার কথা জানান সুকান্ত মজুমদার। অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করে জেনারেটর চালিয়ে মঞ্চে আলোর ব্যবস্থা করছে বিজেপি।