মহানগর ডেস্ক: সন্দেশখালির গণরোষ নিয়ন্ত্রণে বুধবারের পর শনিবার প্রথম পদক্ষেপ নিল রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি, ভীতি প্রদর্শন, স্থানীয়দের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার সহ একাধিক অভিযোগে শেখ শাহজাহান অনুগামী, উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্য উত্তম সর্দারকে ৬ বছরের জন্য সাসপেন্ড করলো তৃণমূল। শনিবার ধর্মতলায় তৃণমূলের ধরনামঞ্চ থেকে এই ঘোষণা করলেন রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। তিনি জানালেন, এ ধরনের অভিযোগ দল বরদাস্ত করে না। তাই দলের শীর্ষ নেতৃত্ব এবং সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায় উত্তম সর্দারকে সাসপেন্ড করা হল।
পার্থ ভৌমিক বলেন, “আমাদের দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশে এবং দলীয় অভ্যন্তরীণ কমিটিট রিপোর্টের ভিত্তিতে উত্তম সর্দারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।” এই কমিটিতে নারায়ণ গোস্বামী, ব্রাত্য বসু, সুজিত বসু, পার্থ ভৌমিকের মতো নেতারা ছিলেন। শনিবার বেলা ১২টা নাগাদ এই রিপোর্ট জমা পড়ে। তারপরই উত্তমকে ৬ বছরের জন্য ছেটে দেওয়া হয়। পার্থ ভৌমিক বলেন, “আমরা তৃণমূলকে ভালোবাসি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভালোবাসি। উত্তম সর্দার এলাকার মানুষের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করছে। তাই আমরা উত্তর ২৪ পরগণার জেলা পরিষদ সদস্য উত্তম হাজরাকে ৬ বছরের জন্য দলের উচ্চতর নেতৃত্বের নির্দেশে সাসপেন্ড করা হল। এই দলটা সিপিএম নয়।” এদিকে উত্তম সর্দারকে সাসপেন্ড করার পর বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “পার্থ ভৌমিক উত্তম হাজরাকে সাসপেন্ড করে কি প্রমাণ করতে চাইছেন? উত্তম মহিলাদের ইজ্জত, গরিবের জমি, শ্রমের টাকা লুঠ করেছে। তারপরও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করছে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুযমন্ত্রী,পুলিশমন্ত্রী, তাঁর পদত্যাগ করা উচিত।”
সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী এই প্রসঙ্গে বলেন, “উত্তম সর্দারকে সাসপেন্ড করা আসলে বাহানা। শাহজাহানকে ধরছে না কেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ।” এদিকে শেখ শাহজাহানকে কেন গ্রেফতার করা হয়নি সেই প্রশ্নের উত্তরে রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক বলেন, “আমরা দলীয় তদন্তের ভিত্তিতে উত্তম সর্দারকে সাসপেন্ড করেছি। শেখ শাহজাহানের কথা আসছে কেন? তার নাম কি এখানে এসেছে?” এদিকে গত বুধবার থেকে সন্দেশখালির সাধারণ মানুষ শেখ শাহজাহান ও তার দুই অনুগামী উত্তম সর্দার ও শিবপ্রসাদ হাজরার বিরুদ্ধে মহিলাদের সঙ্গে অশালীন ব্যবহার, গ্রামের মানুষের জমি লুঠ, কাজ করিয়ে মজুরি না দেওয়া, কাজের মজুরি চাইলে কোদালের বাট দিয়ে মারার অভিযোগ করছেন। এই ঘটনা থানায় বলতে গেলে পুলিশ আবার শেখ শাহজাহানের কাছেই তাদের পাঠিয়ে দিত বলেও পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে গ্রামবাসীরা। তবে এই গণরোষ প্রশমিত করতে, জনরোষের ক্ষতে প্রলেপ দিতে অবশেষে বাধ্য হয়ে শাসকদল উত্তম সর্দারকে ৬ বছরের জন্য দল থেকে সাসপেন্ড করলেও শেখ শাহজাহান ও শিবু হাজরার বিষয়ে এখনও তৃণমূল নেতৃত্ব সাফাই দিয়ে চলেছে।