Home Bengal “প্রতিবাদ করলে এনআইএকে ঢুকিয়ে দিচ্ছে মধ্যরাতে” পুরুলিয়া থেকে বিজেপিকে তোপ মমতার

“প্রতিবাদ করলে এনআইএকে ঢুকিয়ে দিচ্ছে মধ্যরাতে” পুরুলিয়া থেকে বিজেপিকে তোপ মমতার

by Mahanagar Desk
14 views

মহানগর ডেস্ক : পুরুলিয়ার হুড়ার জনসভা থেকে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কার্যকলাপ নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিজেপিকে বিঁধলেন। উত্তরবঙ্গের প্রচার শেষ করে রবিবার জঙ্গলমহলে প্রচার শুরু করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরুলিয়ায় তৃণমূল প্রার্থী শান্তিরাম মাহাতোর হয়ে এদিন তিনি প্রচারসভা করেন। ষষ্ঠ দফা অর্থাৎ ২৫ মে পুরুলিয়ায় ভোট হবে। গত ২০১৯ সালে এই পুরুলিয়া আসনে জিতেছিল বিজেপি। তাই এ বার পুরুলিয়ায় আগাম প্রচার শুরু করল তৃণমূল। পুরুলিয়ার হুড়ার জনসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপিকে একের পর এক তোপ দাগলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী এদিন তাঁর বক্তব্যে মেনে নিলেন, পঞ্চায়েতে কিছু ক্ষেত্রে ভুল হয়েছে। তব সব দায় তাদের নয়। কারণ অনেক পঞ্চায়েতই রয়েছে বিজেপির দখলে, কংগ্রেস, সিপিএমের দখলে। মমতা বলেন, “মোদীর গ্যারিন্টি মানে ইডি,সিবিআই এনআইএ,তৃণমূলের গ্যারিন্টি মানে লক্ষ্মীর ভান্ডার। এনআইএ,সিবিআই, বিজেপি ভাইভাই।”

রবিবার পুরুলিয়ায় জনসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, এখন পুরুলিয়ায় কত মানুষ আসছেন। হোমস্টে হচ্ছে। মাওবাদী হানায় যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে।

মমতা এদিন বলেন, ‘‘মণিপুরে দেখুন, মেয়েদের নগ্ন করে ঘোরানো হচ্ছে। মেয়েদের সম্মান নেই। রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ গুজরাতেও তাই। সারা ভারতে তাই। একমাত্র আমার দলিত ভাই-বোনেরা সম্মান পায় বাংলায়। আদিবাসী ভাই-বোনেরা জানে, আমি ওঁদের সঙ্গে ধামসা-মাদল বাজাই। ঝুমুর নাচ করি। আদিবাসী গুণিজনদরে সম্বর্ধনা, আদিবাসী উৎসব, করম পুজো আমরা সবাইকে নিয়ে করি।’’

মমতার বলেন, “আগে আদিবাসী স্কুল, আশ্রমে যে ছেলে-মেয়েরা থাকতেন, তাঁরা ১০০০ টাকা ভাতা পেতেন। এখন ১,৮০০ টাকা পান। তাঁদের টাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে যায়। বনবাসীদের পাট্টা দেওয়া হচ্ছে। সাঁওতালি ভাষাকে সরকারি ভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। উচ্চশিক্ষার জন্য তফশিলী আদিবাসীরা ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পেতে পারেন। বিদেশে গেলে ২০ লক্ষ টাকা।” মমতা এদিন স্পষ্ট জানিয়ে দেন, আদিবাসীদের জমি কেড়ে নেওয়া যাবে না। তাঁদের জমি তাঁদের হাতেই থাকবে। অরণ্যের তাঁরাই বড় সম্পদ। মমতা এদিন বলেন, “১০০ দিনের টাকা, আবাস যোজনার টাকা ওরা দেয়নি, আমরা দিয়েছি। আমি রাস্তা দিয়ে আসার সময় দেখলাম, মাটির বাড়ি, তার দুটোতে পদ্ম একটিতে তৃণমূলের প্রতীক আঁকা।

আবাস যোজনার টাকা কেন্দ্র দেয়নি, এই প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘‘১১ লক্ষ বাড়ির তালিকা পাঠিয়েছিলাম। বাড়ি দেওয়ার জন্য। ভোটের আগে কল সেন্টার থেকে সে সব বাড়িতে ফোন করছে। ফোন করে বলছে, নতুন করে বিজেপিতে আবেদন করো, ঘর পাবে। আমি বলেছি, না বন্ধু, ভোট হলে ১১ লক্ষ মানুষের ঘর তৈরি করব। মাটির বাড়িতে যাঁরা পদ্ম আঁকছেন, তাঁদের বলি, ওটা পদ্ম নয়, গদ্য নয়, ভাঁওতা, জুলুমবাজি। আমরা চাই গরিবের ভালবাসা। আমরা চাই আদিবাসী, মাহাতোদের নিয়ে একসঙ্গে থাকতে।’’

মমতা এদিনেী সভা থেকে স্পষ্ট করে বলেন, “যদি আমরা না থাকি তবে লক্ষ্মীর ভান্ডার, কন্যাশ্রী সহ কোনও ভাতা পাবেন না, সব বন্ধ হয়ে যাবে।” কিন্তু লোকসভার ভোটে কি ভাবে রাজ্যের শাসকদলের আসন কমলে রাজ্যের প্রকল্পগুলি বন্ধ হয়ে যাবে সেটা স্পষ্ট হল না।

মমতা সভামঞ্চ থেকে বলেন, ‘‘মানুষ প্রতিবাদ করলে এনআইএকে ঘরে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। মধ্যরাতে মহিলা ঘরে ঘুমাচ্ছেন। গদ্দারের এলাকায় মধ্যরাতে পুলিশকে না জানিয়ে চলে গেল। আগে পুলিশের উর্দি পরে সিঙ্গুর নন্দীগ্রামে অনেকেই বদমায়েশি করেছে। মেয়েরা কী করে বুঝবেন? মা-বোনেরা প্রতিবাদ করলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ডায়েরি করা হল। বলছে তৃণমূলের সব বুথ এজেন্টদের গ্রেফতার করো।’সব প্রার্থীদের গ্রেফতার করো। আবার রাম নবমী আসছে, একটা চকলেট বোম ফাঁটলেও এনআইএ চলে আসবে। সব হোটেলে হোটেলে এনআইএ খোঁজ করছে কোথায় তৃণমূল আছে। কেন অধিকারে এনআইএ এসব করছে?”
মমতা এদিন পুরুলিয়ার বিদায়ী বিজেপি সাংসদকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘ভোট তো দিয়ে দেখলেন। এখানকার সাংসদ কিছু করেছেন? দেখতে পেয়েছেন? তিনি কালো না সাদা? বিজেপি করলেই সাদা। তৃণমূল করলে কালো।”
মমতা এদিন নির্বাচন কমিশনকে লক্ষ্য করে বলেন, ‘‘আপনারা নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করুন। আমি আগেই কুর্নিশ করলাম। বিজেপি রোজ করে। নিরপেক্ষ ভাবে কাজ না করলে পৃথিবীর মানুষ ক্ষমা করবে না। আমরা দেশকে ভালবাসি বলে এখনও মুখ খুলিনি।’’

মমতা এদিন বলেন, “ওদের আছে দিল্লির ভান্ডার, আমাদের আছে লক্ষ্মীর ভান্ডার। ইডি, ইনকাম ট্যাক্স হচ্ছে ওদের ইনকাম বক্স।”

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক্ক্ষণ, অনেক বিষয় নিয়ে কথা বললেন কিন্তু কোথাও দেশের বেকার সমস্যা, কলকারখানা তৈরী, বেসরকারিকরণ রোধ, জীবনদায়ী ওষুধের দাম বৃদ্ধি নিয়ে একটি কথাও শোনা গেল না। শুধু আবেগ আর কেন্দ্র রাজ্য পাওনা দেনা নিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণ করেই সভা শেষ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

You may also like

Mahanagar bengali news

Copyright (C) Mahanagar24X7 2024 All Rights Reserved