নিজস্ব প্রতিনিধি: এবারের বিধানসভা ভোটে বিজেপি’র বেশ কয়েকজন সাংসদ ভোটে লড়েছিলেন। তাদের মধ্যে হেভিওয়েট তারকারা সবাই পরাজিত হলেও জিতে যান কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামানিক ও রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার। নিশীথ প্রামানিক জেতেন কোচবিহারের দিনহাটা কেন্দ্র থেকে। তিনি পরাজিত করেন তৃণমূলের অন্যতম প্রভাবশালী নেতা উদয়ন গুহকে। ফটো ফিনিশে মাত্র ৫৭ ভোটে দিনহাটা বিধানসভা কেন্দ্রে জেতেন নিশীথ প্রামানিক।
তিনি জিতে যাওয়ার স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠতে থাকে জনপ্রতিনিধিত্ব আইন মেনে তিনি কোন সদনের প্রতিনিধি থাকবেন। বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব চেয়েছে, যে দুই সাংসদ এবার ভোটে জিতেছেন, তারা বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করে সাংসদ থাকুন। সেই মতো গত বুধবার বিধানসভায় গিয়ে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে আসেন নিশীথ প্রামানিক ও জগন্নাথ সরকার। ওই দুই বিধানসভা কেন্দ্রে আবার উপনির্বাচন হতে চলেছে। কোভিড অতিমারি আবহে ভোটের কয়েক দিন পর আবার এই উপনির্বাচন হতে চলায় স্বভাবতই ক্ষুব্ধ সেখানকার ভোটাররা। তাদের বক্তব্য, কেনই বা নিশীথ প্রামানিক এখানে ভোটে দাঁড়ালেন, আর কেনইবা জেতার পর তিনি বিধায়ক পদ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। এবার সেই একই প্রশ্ন তুললেন তার কাছে পরাজিত তৃণমূল প্রার্থী উদয়ন গুহ।
কয়েকদিন আগে একটি রাজনৈতিক সংঘর্ষে জখম হয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী উদয়ন গুহ বেশ কয়েক দিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। চিকিৎসার পর এখন তিনি কলকাতা থেকে আবার ফিরে গিয়েছেন দিনহাটায়। সেখানে ফিরে তিনি নিশীথ প্রামাণিকের এই পদত্যাগ নিয়ে মুখ খুলেছেন। উদয়ন বলেন, কেনইবা তিনি ভোটে দাঁড়ালেন? আর ফল ঘোষণার ১০ দিনের মধ্যে কীসের জন্য পদত্যাগ করলেন জানি না। তবে এখানে উপনির্বাচন কবে হবে তা জানি না। আপাতত দিনহাটায় বিধায়ক নেই। এই সময় মানুষের বিধায়কের কোনও প্রয়োজন পড়লে তারা তার কাছে যাবে?
উদয়ন গুহ এই যে কথা বলেছেন, সেই একই কথা বলতে শোনা যাচ্ছে দিনহাটা বিধানসভায় এলাকার লোকজনকে। তাদের বক্তব্য, সাংসদ যখন ভোটে দাঁড়িয়েছেন তিনি হারলে কোনও কথা ছিল না। কিন্তু তিনি জিতলে তাঁকে যে কোনও একটি পদ ছাড়তে হতো। এটা জানা সত্ত্বেও তিনি ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। আর এখন সেই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সুতরাং এই অতিমারিপর্বে একটা ভোটের পর আবার একটা ভোটের সামনে পড়তে হলে স্বভাবতই সেটা খুব একটা সুখকর হবে না মানুষের কাছে। আর এই জন্যই ক্ষুব্ধ সেখানকার মানুষ।