মহানগর ডেস্ক: তুচ্ছ মশা। তার কামড়ে আমরা জ্বালা টের পাই । যে জ্বালা মাঝেমাঝেই আমাদের কিছুটা হলেও কাহিল করে দেয়। মশার কামড়ের (Mosquito bites) হাত থেকে বাঁচতে মশারি, ধূপ থেকে শুরু করে কতরকমের ব্যবস্থা নিয়ে থাকি।তবু মশার কামড় থেকে রেহাই মেলে না। ঘরে কিংবা বাইরে পোঁ পোঁ বিন বিন শব্দ তুলে ওরা দলবল নিয়ে আমাদের আক্রমণ করে। হাতিয়ার বলতে আমাদের হাত। তার থাপ্পড়ে তাদের প্রাণ যায় বটে কিন্তু তার ফাঁকেই কোনও কোনও মশা ঠিক কামড়ে দেয়।
ফলে ডেঙ্গি হানা দেয়। হানা দেয় ম্যালেরিয়া। আর এখন তো তার উপদ্রবে আমাদের প্রাণ ওষ্ঠাগত । আপাত নিরীহ দেখতে তুচ্ছ প্রাণী কোনও ঘাতক ভাইরাস বা প্যারাসাইট বয়ে (Virus Or Parasite) নিয়ে আসে। এমনই একটি মশা কামড়েছিল একজনকে। আর তারপরই তাঁকে চোদ্দদিন থাকতে হয়েছিল কোমায় (Comma)। এবং তুচ্ছ মশার কামড়ে করতে হয়েছিল তিরিশটি অস্ত্রোপচার।
এই ঘটনাটি ঘটেছে ইউরোপের রোয়েডারমার্কে। সেখানে সাতাশ বছরের সেবাস্টিয়ান রোটসচে নামে একজনকে এমনই একটি তুচ্ছ মশার কামড়েছিল। ডেলি স্টার রিপোর্ট জানিয়েছে, এশিয়ান টাইগার নামে একটি মশার কামড়ে ওই যুবকের প্রাণ সংশয় হয়ে উঠেছিল। ২০২১ সালে গরমের সময় মশাটি তাঁকে কামড়ায়।
প্রথমে ফ্লুয়ের মতো উপসর্গ দেখা দিয়েছিল তাঁর। যেটা ছিল সবে শুরু। তারপর সেবাস্টিয়ানের দুটো পায়ের চেটোর কিছু অংশ অস্ত্রোপচার করে বাদ দিতে হয়। মোট তিরিশটি অস্ত্রোপচার করতে হয় তাঁকে। তারপর তিনি চোদ্দদিনের জন্য কোমায় চলে যান। শুধু তাই নয়, মশার কামড়ের জেরে দূষিত হয় রক্তও। সেজন্য একাধিকবার তাঁর লিভার,কিডনি, হার্ট ও ফুসফুস আক্রান্ত হয়। বিপদের এখানেই শেষ নয়। থাই ফুলে ওঠায় তাঁকে তা বাদ দিয়ে নতুন করে ত্বক প্রতিস্থাপন করতে হয়। তিনি ভেবেছিলেন তাঁর বাঁচার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ কারণ শরীরের টিস্যুতে বাসা বেঁধেছিল ব্যাকটেরিয়া।
তারা বাঁ থাইয়ের অর্ধেকটাই খেয়ে ফেলেছিল। আক্রান্ত যুবক জানিয়েছেন বিদেশে নয়। তাঁর দেশ জার্মানিতেই ওই মশা কামড়েছিল। কামড়ানোর পরে বিষ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তারপর তিনি বিছানায় শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। প্রচণ্ড জ্বর। এমনকী বাথরুমেও যেতে পারছিলেন না। কিছু খেতেও পারছিলেন না। প্রচুর ভোগার পর ভেবেছিলেন দুর্ভোগ বুঝি শেষ হয়েছে। কিন্তু না।
একদিন হঠাৎ লক্ষ্য করলেন তার সোয়েটপ্যান্ট ফুলতে শুরু করেছে এবং তাঁর বাঁ পা প্রচণ্ড ফুলতে শুরু করেছে। চিকিৎসকরা এসব দেখে নিশ্চিত হন তাঁকে এশিয়ান টাইগার মশা কামড়েছিল। এখন অবশ্য সুস্থ রয়েছেন সেবাস্টিয়ান। অফিস থেকে ছুটি নিয়ে বাড়িতে আছেন। ছোট্ট মশার কামড়ের বিভীষিকা অবশ্য আজও তাঁকে তাড়া করে মারে।