মহানগর ডেস্ক: টাকা রোজগারের জন্য অনেক জিনিস বিক্রি করে বা ব্যবসা করে। তবে সোজা উপায় হচ্ছে পড়াশোনা শিখে চাকরি করে, যাতে তার প্রয়োজন মিটে যায়। তবে কোনও কোনও মানুষ এমন কিছু বিক্রি বা ব্যবসা করে, যা চেনা রাস্তার ধার ধারে না। ব্রিটেনের এক ছাত্রী যা বিক্রি করে মাসে প্রায় একচল্লিশ লাখ টাকা রোজগার করে, তা জানলে সবারই চোখ কপালে ওঠার জোগাড় হবেই হবে। ওই ছাত্রীটি নিজের থুতু বিক্রি করে মাসে এক চল্লিশ লাখ টাকা রোজগার করে (A Girl Earn More Than Forty Lakhs Selling Spit) ! কী বিশ্বাস হচ্ছে না? বিশ্বাস না হলে করার কিছু নেই। কারণ ঘটনাটা পুরোপুরি সত্যি। ওই ছাত্রীর নাম লাটিশা জোনস। যার ইচ্ছে সে বড় হয়ে ডাক্তার হবে।
আর সেই লক্ষ্যপূরণে সে বায়োমেডিকেল সায়েন্সে বিশ্ববিদ্যালয়ে নাম নথিভুক্ত করেছে। পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের খরচ তুলতে একটা পার্ট টাইম কাজও করে লাটিশা। আর যা করে সে রোজগারের পথ বেছে নিয়েছে,তাতে তার এখন প্রচুর টাকা। তাকে চোখ বুজে ধনী বলা যেতেই পারে। মিরর ইউকে জানিয়েছে বাইশ বছরের লাটিশার বাজারে অনেক ধার হয়ে গিয়েছিল। সে সেই ঋণ মিটিয়েছে। একটা বাড়িও কিনেছে।
কিন্তু তার ওই বিপুল বৈভবের রহস্যটা কি। এবার শুনেই নেওয়া যাক বিপুল রোজগারের রহস্য কি। লাটিশা জানতে পেরেছিল অনেকেই কাটা নখ,থুতু কিনতে আগ্রহী। সেজন্য তিনশো পাউন্ড থেকে দেড় হাজার পাউন্ড দিতে রাজি। আর পড়ে পাওয়া সুযোগ হাতছাড়া করেনি লাটিশা। চাকরি ছেড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াও বন্ধ করে পুরো সময়ের থুতু বিক্রির কাজ শুরু করে। লাটিশার দাবি স্রেফ থুতু বিক্রি করে সে ১১ লাখ টাকা ধার মিটিয়েছে।
ওই টাকায় নতুন একটি ফ্ল্যাটও কিনেছে। চার বছর বোতলে থুতু বিক্রির পর সে জানিয়েছে ঘটনাটা যেন বিদ্যুতের ঝলকের মতোই ঘটেছে। ম্যানচেস্টারে থাকার সময় ঘটনাটি ঘটেছে। চাকরি করার সময় ওয়েবসাইটে অদ্ভুত কিছু চাহিদার কথা জানতে পেরেছিল সে। ওয়েবসাইটে ওরকম অদ্ভুতুরে চাহিদার কথা জানতে পারে। ওই ওয়েবসাইটে একজন থুতু বিক্রির কথা জানায়। ব্যাপারটা প্রথমে মজা বলেই লাটিশা মনে করেছিল।
তবে যাই হোক সে ওই অদ্ভুত প্রস্তাবে রাজি হয়, কারণ তার টাকার খুবই দরকার ছিল। ব্রিটেনের সেই মহিলার কাছে থুতুর জন্য তিনশো পাউন্ড চেয়েছিল। মহিলাটি রাজি হন এবং তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চাহিদামতো তিনশো পাউন্ড পাঠিয়ে দেন। সেসময় অদ্ভুত কিছু প্রস্তাবও লাটিশা পায়। অনেকে সে যে কাগজের ওপর এক সপ্তাহ ধরে রাতে ঘুমোয় সেই কাগজ কিনতে চায়।
তাদের চাহিদাগুলোও মাথা ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো যে কাগজের ওপর সে স্নান করেছিল, সেই ভেজা কাগজ, মাজার পরে টুথব্রাশ ও টুথব্রাশে লেগে থাকা থুতুও কিনতে চায়। তবে ওসব বদখত ব্যাপারের মধ্যে থুতুটাই মোটের ওপর জনপ্রিয়। প্রতি সপ্তাহে বারবার থুতু জমিয়ে সে বিক্রি করে থাকে। সে জন্য লাটিশা আড়াইশো পাউন্ড চার্জ করে না। পুরোটাই ক্রেতাদের ওপর ছেড়ে দেয় সে। এ নিয়ে দরাদরি চলে।
তবে দুশো পাউন্ডের নীচে লাটিশা রাজি হয় না। জীবনে কোনওদিনই সে ভাবেনি এটা তার পেশা হবে। এখন ব্যাপারটায় অভ্যস্থ হয়ে উঠেছে লাটিশা। সে জানিয়েছেন থুতু বিক্রি করে প্রতি সপ্তাহে তিন থেকে চার হাজার পাউন্ড রোজ করে। তার আশপাশের মানুষ তাকে সমর্থন করে। কেউ কেউ তার এমন পেশা দেখে হাসাহাসিও করে। এটা একটা বন্য দুনিয়া বলেই মনে করে লাটিশা।