মহানগর ডেস্কঃ ক্লিয়ার স্কিন এর পাশাপাশি যেই জিনিসটি আমাদের সব থেকে বেশি পছন্দ তা হচ্ছে সিল্কি স্মুথ চুল। আমাদের শরীরের রূপচর্চা বা সাজগোজের পাশাপাশি যেই বিষয়টি নিয়ে ছেলে মেয়ে উভয়েই চিন্তিত সেটি হচ্ছে চুল। মেকআপ করে নয় নিজেকে দেখতে আকৃষ্ট বানিয়ে তুলবেন কিন্তু চুল যদি না থাকে তখন সব সাজের সাথে একটু বেমানান লাগে। মেকআপ করার পর কাউকে দেখতে যেমন আকৃষ্ট লাগে তেমনই চুলের নানারকম রকমারি কায়দা করার জন্য, চুলের বিভিন্ন কাটের জন্য, বা স্টাইল একজনের পুরো লুক পাল্টে দেয়। তাই মাথায় চুল থাকাটা আর চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকাটা জরুরি।
কিন্তু চুলে বিভিন্ন আদবকায়দা করার জন্য অর্থাৎ হিট দিয়ে চুল সোজা করা, কালার করা, ব্লিচ করার জন্য চুল রুক্ষ হয়ে যাচ্ছে বা রাফ হয়ে যাচ্ছে। তাতে চুল ফাটা শুরু হয়, চুলে জট পরে, চুল বাড়তে সময় নেয়। আবার বার বার শ্যাম্পু পরিবর্তন করলে চুল রাফ হয়। কোনো প্রোডাক্ট ব্যবহার করার আগে উপাদান পড়ুন। তাছাড়া সব প্রডাক্ট সবার সহ্য নাও হতে পারে, আবার পারলারের বিভিন্ন প্রডাক্ট ব্যবহার তো করেন কিন্তু তাতে কি কি কেমিক্যাল আছে সেই বিষয়ে আপনার ধারণাও নেই, তা ব্যবহার করার ফলেও চুল রুক্ষ হতে পারে। তার জন্য আপনাকে এখন থেকে সচেতন হতে হবে। চুলের স্বাস্থ্যের যত্ন নিতে হবে নাহলে বয়স কালে গিয়ে সমস্যা হবে। যতটা পারবেন কেমিক্যাল জাতীয় জিনিস চুলে মাখার থেকে বিরত থাকুন। ঘরোয়া কিছু স্টেপ ফলো করে বা প্রাকৃতিক কিছু দ্রব্য ব্যবহার করার ফলে আপনি আপনার চুল কিছুটা হলেও ঠিক করতে পারবেন।
১. অতিরিক্ত তাপ স্টাইল করা থেকে বিরত থাকুন। তাতে চুলে বাড়তি ক্ষতির পরিমাণ আটকানো সম্ভব।
২. আপনার চুল পরিষ্কার রাখুন। চুলে ধুলো বা নোংরা বসতে দেবেন না। যদি আপনি রোজ রাস্তায় বেরোন সেক্ষেত্রে চুলের প্রতি বিশেষ যত্ন নিতে হবে। কারণ ধুলো বলি, সূর্যের আলোর তাপ চুলের প্রতিদিন একটু একটু ক্ষতি করে। তাই রোজ চুল পরিষ্কার রাখাটা বাধ্যতামূলক। যখন চুল শ্যাম্পু করবেন, শ্যাম্পু করার পর জল দিয়ে ভালো করে চুল ধুয়ে নিন, যেন শ্যাম্পু না থাকে, শ্যাম্পু ভালো ভাবে না ধুলে তা চুলে থেকে যাওয়া ক্ষতিকর। তারপর ভালো মানের কন্ডিশনার চুলে মাখুন, ১৫-২০ মিনিট মতো রেখে ধুয়ে নিন।
৩. স্বাস্থ্যকর খাদ্য খান- সবরকমের শাকসব্জি খাওয়ার তালিকায় রাখা বিশেষ ভাবে জরুরি, সব্জি থেকে ভিটামিন ভালো মত শরীরে মজুত হয়। এর পাশাপাশি সবরকমের ফল খেতে হবে। কারণ ফলেও প্রচুর পরিমাণে প্রয়োজনীয় উপাদান থাকে যা আমাদের শরীরের পাশাপাশি চুলের জন্যও ভালো । সবরকমের বাদাম খাওয়ার চেষ্টা করুন চুলের জন্য যেমন উপকারী আপনার ত্বকের জন্যও ভালো। চুলে চকচকে ভাব আনবে মজবুত হবে। রোজ দিনে একটি করে অন্তত ডিম খান, ডিমের কুসুম বিশেষ করে উপকারী। এর পাশাপাশি স্যামন মাছ খান, এতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। স্বাস্থ্যকর চুল বজায় রাখার ক্ষেত্রে এটি প্রয়োজনীয়। ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড চুলের ফলিকলকে পুষ্ট করে উন্নতি ঘটায়। মাথার ত্বকের উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করে এর পাশাপাশি চুলের রুক্ষতা-চুলের ফেটে বা ভেঙে পড়ে যাওয়া তা প্রতিরোধ করে। সেহেতু চকচকে এবং সিল্কি চুল পেতে খাওয়ার দিকেও যথেষ্ট খেয়াল রাখতে হবে।
৪. চালের জল ব্যবহার করুন। এটা অতিরিক্ত সহজ উপায়। স্নান করার আগে চাল ভেজানো জল ব্যবহার করুন। রাতে এক মুঠো চাল ভিজিয়ে দিন সকালে ওই জল ভালো করে চুলে মাথায় লাগিয়ে নিন। ২০ মিনিট রাখুন, তারপর ধুয়ে নিন। চুল নরম হয়।
৫. চাল ভিজিয়ে সেই চাল মিক্সিতে গুঁড়ো করে ঘরোয়া প্যাক বানাতে পারেন। চাল রাতে ভিজিয়ে রাখুন, সকালে তা গুঁড়ো করে কড়াইয়ে হালকা দুধ দিয়ে নেড়ে ঘেঁটে ঘেঁটে একটা থকথকে প্যাক বানান সেটি চুলে মেখে রাখুন ২০মিনিট। দিয়ে শ্যাম্পু করে ধুয়ে নিন।
৬. ডিম এবং মধু মাস্ক- একটা ডিম আর ১চামচ মধু দিয়ে ভিকল করে ফাটিয়ে মাথায় ১৫মিনিট মেখে রাখুন তারপর ধুয়ে দিন।
৭. অ্যালোভেরা জেল- অ্যালোভেরা পাতা কেটে তার ভিতরের জেল টা একটা বাটিতে ঢেলে নিতে হবে। তারপর ভালো করে ফাটিয়ে স্মুথ ব্লেন্ড করতে হবে। তারপর মাথার চুলে ৩০মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে নিন।
৮. গরম তেলের ম্যাসাজ বা তেলের ম্যাসাজ করুন সপ্তায় ২বার। তেল পছন্দ না হলে ১বার অন্তত তেল মাখুন। রাতে মেখে ঘুমিয়ে পড়ুন। পরের দিন সকালে ধুয়ে দেবেন।
৯. দই আর কলার প্যাক বানিয়ে মাখতে পারেন চুলের জন্য বেশ ভালো। কলা র দই একসাথে চটকে একটা স্মুথ ব্লেন্ড তৈরি করুন।তারপর ২০-৩০মিনিট রেখে ধুয়ে দিন।