মহানগর ডেস্ক : আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল-বিজেপি পরস্পরের বিরুদ্ধে পাল্লা দিয়ে চলছে আক্রমণ, প্রতি আক্রমণের পালা। আর তাতেই এবার উঠে এল পুরনো ঘটনা, যার শুরু অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘাটালে ৭এপ্রিল একটি নির্বাচনী সভায়। অভিষেক এই সভায় দাবি করেন, “বিজেপি থেকে তৃণমূলে ফিরতে চেয়ে হিরণ চট্টোপাধ্যায় আমার দফতরে এসেছিলেন কিন্তু আমি হিরণের মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দিয়েছি। আমি এই ভিডিও প্রকাচ করে দেব। এই ব্যক্তি ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী।”
অভিষেকের এই হুঁশিশারিট পাল্টা হিরণ জানালেন, “আমি ওনার অফিসে পার্টির স্ট্র্যাটিজি অনুযায়ী গিয়েছি। উনি কতবার ফোন করেছেন, আমায় ডেকেছেন সেটা আমি প্রকাশ্যে আনব। আমি পার্টিকে যখন বলি আমায় ডাকছে, আমি সুকান্তবাবুকে সেটা বলি, তিনি বলেন যান, আমি তাই গেছি। আমি যাইনি, যাওয়ার চেষ্টাও করিনি। তিনি বারবার ডেকেছেন। সব সত্যির উপরে একটা সত্যি থাকে। উনি যেদিন সিসিটিভি ফুটেজ ছাড়বেন, সেদিন আমিও সব ফুটেজ প্রকাশ্যে আনবো। ২০২০ সালের ১ ডিসেম্বর প্রশান্ত কিশোরকে সঙ্গে নিয়ে উনি গিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারীর কাছে। গিয়ে হাতেপায়ে ধরেছিলেন যে, আপনি দলে ফিরে আসুন। সেই সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করেছেন উনি?”
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দেন শুভেন্দু অধিকারী। সেবছর ১৯ ডিসেম্বর বিজেপিতে যোগদান করেন তিনি। হিরণের দাবি, তার আগে, ১ ডিসেম্বর শুভেন্দুর কাছে হাজির হন অভিষেক। ভোটকুশলী প্রশান্তও তাঁর সঙ্গে ছিলেন। শুভেন্দুকে তৃণমূলে রাখতে অনুরোধ জানান। সেই কথা কেন প্রকাশ করেননি অভিষেক, সেই প্রশ্নও তোলেন হিরণ।
এদিকে হিরণের এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে সিপিএম নেতা শতরূপ ঘোষ বলেন, “এটা বিজেপির স্ট্র্যাটেজি? তৃণমূল আফিসে গিয়ে বিজেপি নেতারা মিটিং করবেন আর রাস্তায় লোক দেখানো ঝগড়া করবেন? এটাই বিজেপি এবং তৃণমূলের আসল রাজনীতি। সকালে ঝগড়া করবে আর সন্ধ্যায় একে অন্যের অফিসে গিয়ে মিটিং করবে।”
কংগ্রেস মুখপাত্র সৌম্য আইচ বলেন, “তৃণমূল আর বিজেপির ডিএনএ এক, এটা আমরা অনেক আগে থেকেই বলছি। আমাদের সেই দাবি এখন মিলে যাচ্ছে। ওদের একটাই ঘর দুই ভাগে ভাগ হয়ে আছে। এই ঘর থেকে অন্য ঘরে যাতায়াত চলছেই।”
রাজনৈতিক অভিজ্ঞরা বলছেন, এখন দেখার অভিষেক সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশের যে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সেই ফুটেজ তিনি কবে প্রকাশ্যে আনেন। না হলে হিরণের দাবি অনুযায়ী প্রমাণ হয়ে যাবে অভিষেক যা বলেছেন তা অসত্য। যদিও বঙ্গ রাজনীতির এখন অন্যতম উপাদান মিথ্যাচার, আর বিজেপি থেকে তৃণমূলে আসাযাওয়া? সে তো চলছেই।