মহানগর ডেস্ক : দামাস্কাসে ইরানি দূতাবাসে বোমা হামলা করেছে ইজরায়েল, তার পাল্টা হিসাবে রবিবার ইজরায়েলে ড্রোন হামলা চালায় ইরান। প্রায় ২০০টি ড্রোন ছোড়া হয়েছিল ইজরায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে। যদিও ইজরায়েলে পৌঁছনোর আগেই আকাশপথে অধিকাংশ ড্রোন ধ্বংস করে দিয়েছে ইজরায়েল এবং মার্কিন বাহিনী। তবে ইরানের এই হামলাকে কেন্দ্র করে আবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পশ্চিম এশিয়া। ইরানের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইজরায়েল বড় কোনও প্রত্যাঘাতের পরিকল্পনা করছে কি না, তা নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে। এর মধ্যেই ইরান এবং ইজরায়েল— দুই রাষ্ট্রের বিদেশ মন্ত্রকের সঙ্গেই ফোনে কথা বলেছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। পশ্চিম এশিয়ার এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতি নিয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে বলে খবর।
রবিবার রাতে নিজের এক্স হ্যান্ডলে জয়শঙ্কর জানান, তিনি ইরানের বিদেশমন্ত্রী হোসেন আমির আবদোল্লাহিয়াঁর সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁর পোস্টে জয়শঙ্কর লেখেন, ‘‘ইরানের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে আমার ফোনে কথা হল। এমএসসি এরিস-এর ১৭ জন সদস্যের মুক্তি নিয়ে আমরা কথা বললাম। পশ্চিম এশিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করলাম। আমি ওঁকে বলেছি, আক্রমণ থেকে বিরত থাকা, শান্তি বজায় রাখা এবং কূটনীতির আশ্রয় নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আমরা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার বিষয়ে সহমত হয়েছি।’’
এর পরেই জয়শঙ্কর এক্স হ্যন্ডেলো আর একটি পোস্ট করেন। তাতে তিনি লেখেন, ‘‘ইজ়রায়েলের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে এই মাত্র আমার কথা হল। শনিবার থেকে ওই অঞ্চলে যা হচ্ছে, সে বিষয়ে আমরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছি। আমাদের মধ্যে যোগাযোগ থাকবে।’’
প্রসঙ্গত, ইরানের হামলার পর ইজরায়েলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি জানিয়েছেন, তাঁরা অত্যন্ত সতর্ক রয়েছেন। আগামী দিনে তাঁদের প্রতিরক্ষামূলক এবং আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ কী হবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। সূত্রের খবর, ইজরায়েল ডিফেন্স ফোর্স ইতিমধ্যে দেশের সরকারকে প্রত্যাঘাতের প্রস্তাব দিয়েছে। ইরানের সঙ্গে বাণিজ্যিক অসহযোগিতার প্রস্তাবও তাতে রয়েছে। অন্য দিকে, ইরানের হামলার আবহে ইজরায়েলের পাশে থাকলেও আমেরিকা সাফ জানিয়ে দিয়েছে, ইজরায়েল যদি ইরানে পাল্টা হামলার কথা ভাবে, সে ক্ষেত্রে আমেরিকা তাদের পাশে থাকবে না। এলাকায় শান্তি বজায় রাখার কথা বলেছে অন্যান্য সব দেশ। রবিবার রাতে ইরান-ইজরায়েলর পরিস্থিতি নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জে একটি বৈঠক হয়। সেখানে ইরানের পদক্ষেপ কঠোর ভাবে সমালোচিত হয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জও পাল্টা আক্রমণ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে। তবে রাষ্ট্রপুঞ্জ বা অন্যান্য দেশের কাছ থেকে যুদ্ধবিরতি ও শান্তি বজায় রাখার বার্তা দেওয়া হলেও যুদ্ধরত ইজরায়েল, ইরান, প্যালেস্টাইন, আমেরিকা কেউই এই আবেদন মানছে না। কাজেই ক্রমেই পচিম এশিয়া অশান্ত হয়ে উঠছে। এদিকে ইজরায়েলের উপর ইরানের ড্রোন হামলার তীব্র নিন্দা করেছে জি৭ ভূক্ত দেশগুলি।