মহানগর ডেস্ক : রবিবারের ছুটির দিনকে মেগা রবিবারে পরিণত করল তৃণমূলের জনগর্জন ব্রিগেড। সকাল থেকে মানুষের পা এগিয়ে চলেছে ব্রিগেড অভিমুখে। রাজ্যের সব জেলা থেকে মানুষ বাস,ট্রেন,জলযানে করে আসছেন ব্রিগেডে। যে সন্দেশখালি নিয়ে দেশজুড়ে তণমূল বিরোধী প্রচারতরঙ্গ ঢেউ তুলেছে, সেই সন্দেশখালির মানুষও মমতা-অভিষেকের জনগর্জন সভায় ব্রিগেডমুখী হয়েছে।
জনগর্জনের জন্য কলকাতায় যান নিয়ন্ত্রণ। কলকাতাকে ১০টি সেক্টরে ভাগ করে নিরাপত্তার চাদরে মুড়েছে পুলিশ।
মার্চ মাসের প্রথম ৯ দিনে চারবার বাংলায় এসে তৃণমূলকে তোলাবাজ, দুর্নীতিবাজদের দল বলে সমালোচনা করে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সন্দেশখালিতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওঠা সবকটি অভিযোগ একটি একটি করে এই চারটি সভা থেকেই সন্দেশখালির ঘটনাকে উল্লেখ করে নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, “নারী নির্যাতন এবং তোলাবাজি তৃণমূল নেতাদের একমাত্র কাজ। মোদী গরিবের জন্য রাজ্যে টাকা পাঠাচ্ছে, তৃণমূল সেই টাকা তছরুপ করছে।”
রবিবারের জনগর্জন সভা থেকে মমতা,অভিষেক মোদীকে পাল্টা বার্তা দেবেন এটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
জঙ্গলমহল থেকে মহিলাদের তৃণমূলের প্রতীক চিহ্ন আঁকা সাদা-সবুজ শাড়ি পরিয়ে, তৃণমূলের জনমুখী প্রকল্পের নাম ছাতায় ছেপে সেই ছাতা মাথায় দিয়ে কলকাতার রাজপথে পা রেখেছেন জঙ্গল মহলের মহিলারা। তারা অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবপশন করবে। মমতা, অভিষেক, তাদের নেতৃত্ব, তাঁদের সন্তুষ্ট করতে ধামসা, মাদলের ধ্বনিও ধ্বনিত হবে ব্রিগেডের জনগর্জন সভায়।
নরেন্দ্র মোদী যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে জনবিরোধী সরকার বলে, নারী বিদ্বেষী সরকার বলে সমালোচনা করছেন, তখন তৃণমূল বাংলা থেকে বহিরাগতদের বিদায় করার ডাক দিতেই রবিবার জনগর্জন সভার ডাক দিয়েছে।
৫৯ লক্ষ ১০০ দিনের কাজের শ্রমিককে তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা রাজ্য সরকার দেবে বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন। আজ দেখার মমতা পুনরায় এই টাকা কবে দেওয়া হবে সেই দিন ঘোষণা করেন কি না। নাকি আজই তিনি ব্রিগেড থেকে ১০০ দিনের বকেয়া টাকা প্রদান শুরু করেন, সেই দিকে নজর থাকবে। কেন না তৃণমূলের এই জনগর্জন সভা থেকে মূলত গর্জন হবে কেন্দ্রের রাজ্যকে বঞ্চনার বিরুদ্ধে। সেখানে ১০০ দিনের কাজের টাকা বকেয়ার কথা, আবাস, সড়ক যোজনার বকেয়া টাকার কথা অবশ্যই উঠে আসবে।
এছাড়াও উঠে আসবে মণিপুর, উন্নাও, হাথরাসের নিরিখে সন্দেশখালির মহিলাদের তোলা সম্মানহানির অভিযোগকে লঘু করার মতো বক্তব্য। পাশাপাশি থাকবে মোদীর অপশাসন থেকে দেশকে বাঁচাতে সমূলে কেন্দ্রের মোদী সরকারকে উৎপাটনের ডাক।
তবে এবার যেটা উল্লেখযোগ্য বিষয় তা হল এ পর্যন্ত রাজ্যে চারটি সভা করতে এসে নরেন্দ্র মোদী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম মুখে আনেননি। তৃণমূলকেই তাঁর বক্তব্যে নিশানা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এখনও পর্যন্ত সব সভা থেকেই কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করলেও নরেন্দ্র মোদীর নাম মুখে আনেননি। মোদীর নতুন নাম “পিন্টু বাবু” বলে উল্লেখ করে মমতা বলেছেন, “পিন্টু বাবুনইতনা গুস্সা কিউ আতা হ্যায়?” “অ্যালবার্ট পিন্টো কি গুস্সা কিউ আতা হ্যায়”, সিনেমার নামের সঙ্গে তুলনা করে বাংলার উপর মোদীর এতো রাগ কেন সেটাই রূপকার্থে ব্যবহার করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি মোদীর রাজ্যে নারী নির্যাতনের সমালোচনায় মমতা দাবি করেছেন, ” বাংলা নারীদের জন্য সেফেস্ট রাজ্য।”
এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। তার পরেই স্পষ্ট হবে মমতা, অভিষেক ঠিক কোন পদ্ধতিকে নরেন্দ্র মোদীর বিরোধিতা করেন।