মহানগর ডেস্ক : এই রাজ্যে একশো দিনের কাজ, আবাস যোজনা থেকে শুরু করে মিড ডে মিল সহ সমস্ত সরকারি প্রকল্পই দুর্নীতিতে ছেয়ে গেছে। কাটমানি নেওয়াই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের সার্বভৌমিক অধিকার হয়ে দাঁড়িয়েছে। মঙ্গলবার কলকাতায় এসে ঠিক এই ভাষাতেই রাজ্য সরকারকে বিদ্ধ করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের আবাস যোজনা থেকে শুরু করে একশো দিনের কাজের মতো সব প্রকল্পগুলিতে রাজনৈতিক কারণে এবং ন অজুহাতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে টাকা না দেওয়ার অভিযোগ প্রায়ই তুলছেন। এই বিষয়ে সরব তাঁর তৃণমূলও। এই ইস্যুতে মঙ্গলবার কলকাতায় এসে নির্মলা সীতারামনের প্রশ্ন, এতো দুর্নীতি থাকলে তাঁরা টাকা দেওয়া হবে কী ভাবে? একশো দিনের কাজে ২৫ লক্ষ ভুয়ো জবকার্ড পাওয়ার দাবি করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘‘টাকা তো আমজনতার। তাঁদের করের টাকা থেকে কী ভাবে এটা দেব?’’ নির্মলার অভিযোগ, চা বাগানের মতো ব্যক্তিগত সম্পদের কাজে ওই প্রকল্পকে ব্যবহার করা হয়েছে। আবাস প্রকল্পে ঘর পেয়েছেন ‘ঘর থাকা’ অনেক মানুষ! এ ভাবে দুর্নীতির টাকা যাঁদের পকেটে গিয়েছে, তাঁদের থেকে তা আর আদায় করা অসম্ভব বলেই উল্টে তৃণমূল সরকারই এখন রাজ্যের কোষাগার থেকে আমজনতার করের টাকা দ্বিতীয় বার খরচ করছে।অর্থমন্ত্রীর দাবি, একের পর এক কেলেঙ্কারি ঘটে চলেছে। দুর্নীতি ও সিন্ডিকেট-নির্ভর অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। তবে পুলিশের একাংশের মেরুদণ্ড নেই। তাঁরা কার্যত শাসকদলের ক্যাডারে পরিণত হয়েছেন।
এই প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের কটাক্ষ, ‘‘আদানি-অম্বানী নন, রেশন দেওয়ার কথা আমজনতাকে। শুধু ২০২২ সালের এপ্রিল-সেপ্টেম্বরের মধ্যে মিড ডে মিল সংক্রান্ত ১০০ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে! এক জন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী এমন হৃদয়হীন!’’অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী-দিদি নিজেই ২০১৯ সালে ২০১১ সালের কাটমানি ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। তার মানে তিনি স্বীকার করছেন। কিন্তু তার পরেও কিছু হয়নি।’’নির্মলা বলেন, “কেন ১৪৪ ধারা জারি করে সন্দেশখালির অত্যাচারের কাহিনী যাতে বিরোধীরা দেখতে না পারে তার চেষ্টা চালাচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ? একই রাজ্য শাসক-বিরোধীের জন্য আলাদা নিয়ম? ওখানে জমি লুঠ থেকে শুরু করে মহিলাদের সম্ভ্রম লুঠ হয়েছে, কী করছেন মুখ্যমন্ত্রী? কেন সন্দেশখালির ঘটনায় মূল অভিযুক্ত এখনও আড়ালে? কোথায় দিদির স্বচ্ছতা?”
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ অবশ্য বলেন, ‘‘১০০ দিনের কাজে নির্মলা সীতারামন সরকার প্রথম পুরস্কার দিয়েছে বাংলাকে। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে বাংলা একাধিক বার পুরস্কৃত। আর এখানে এসে উনি মিথ্যা রাজনীতি করছেন!’’কুণালের এই মন্তব্যে বিজেপির বক্তব্য, কেন্দ্রীয় প্রকল্পে রাজ্যের পুরস্কৃত হওয়ার মানে কী কেন্দ্রের বিভিন্ন প্রকল্পে দেওয়া টাকা রাজ্য সরকার নয়ছয় করবে?