BURDWAN
অবসরপ্রাপ্তও নন, ক্লান্তও নন! প্রাতঃভ্রমণ থেকে ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা দিলীপ ঘোষের
মহানগর ডেস্ক : নিউটাউনের ইকো পার্ক হোক বা বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্র, যখন যেখানেই থাকেন না কেন সকালে প্রাতঃভ্রমণ মিস যাবে না দিলীপ ঘোষের। জগিং, হাটাহাটি, শরীর চর্চার পর তিনি মুখোমুখি হন সংবাদ মাধ্যমের। তারপর একের পর এক ইস্যুতে চলে জবাব দেওয়া। শনিবারও তার অন্যথা হল না। প্রাতঃভ্রমণ স্থল থেকে দিলীপ ঘোষ বুঝিয়ে দেন, তিনি অবসরপ্রাপ্তও নন, ক্লান্তও নন। বরং তৃণমূলকে নিশানা করে বলেছে, শাসক নেতারা অনেক বেশি ক্লান্ত।
শনিবার বর্ধমানের লোকো ব্লিস মাঠে প্রাতঃভ্রমণে এসে ব্যাট হাতে মাঠে নামেন দিলীপ ঘোষ। মাঠে নেমে রীতি মতো চার – ছয় হাঁকাতে দেখা যায় তাঁকে। এরপর কীর্তি আজাদকে নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘ওদিকে রিটায়ার্ড লোকেরা আছে, আমি রিটায়ার্ড নই, টায়ার্ডও নই। আমি এখনও সেভাবেই খেলি। যে মাঠে যাই সেখানেই খেলি, যেমন পিচ পাই তেমন খেলি এবং জিতি। জবাব তো ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে আমরা দেব। ওরা তো তালই পাবে না, কখন নির্বাচন পার হয়ে যাবে।’
প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে অভিনবত্ব আনতে নানা কিছু করছেন প্রার্থীরা। এদিন ক্রিকেট ব্যাট হাতে দেখা গেল দিলীপ ঘোষকে। প্রাতঃভ্রমণের পাশাপাশি চলছে খেলাধূলাও। শাসকদলের খেলা হবে স্লোগানের পাল্টা প্রস্তুতি জোর কদমে চলছে বিরোধী দলগুলির।
বর্ধ্মানের প্রশাসনিক সভা থেকে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে বড় ঘোষণা মমতার, ফেব্রয়ারী থেকে একগুচ্ছ নয়া প্রকল্পের আশ্বাস
মহানগর ডেস্ক:` বর্ধমানের প্রশাসনিক সভা থেকে এদিন একগুচ্ছ প্রকল্পের কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। এদিন মোট ৩৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৪৮৯টি প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন তিনি। সঙ্গে ৫৪৬টি নতুন প্রকল্পের শিলান্যাসের কথাও বললেন তিনি যার জন্য মোট ব্যয় হবে আনুমানিক ৮৩৫ কোটি টাকা। পাশাপাশি পূর্ব ও পশ্চিম দুই বর্ধ্মান জেলার প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ উপভোক্তাকে বিভিন্ন প্রকল্পের আওতাভুক্ত করা হয় এদিন। .সেই সঙ্গেই শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে বড় ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
লোকসভার আগে জেলা সফরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তি মঞ্চ থেকে এদিন তিনি আরও বলেন “আমার সেক্রেটারিয়েটের নাম আমি, সেই জন্য নবান্ন রেখেছি। এর জন্য আমি গর্বিত। আমাদের মতো এত সমাজ সংস্কার, এত মানবিক উন্নয়ন সারা পৃথিবীতে কেউ করতে পারেনি। রাজ্যে দুই কোটি মহিলা ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ পায়। ‘সবুজ সাথী’ সাইকেল পেয়েছে ১ কোটি ২৮ লক্ষ। ৮৫ লক্ষ কন্যাশ্রী। ১৬ লক্ষ ২০ হাজার মেয়ে ‘রূপশ্রী’ পেয়েছে। আমি আজ তাদের মধ্যে দুইজনকে নিজের থেকে বেনারসি শাড়ি দিলাম। রামায়ন, মহাভারত, কোরাণ, বাইবেল সবই শেষ হয়ে যাবে, তবু আমার প্রকল্পের কথা বলা শেষ হবে না। ১৩ লক্ষ মহিলা নতুন করে লক্ষীর ভান্ডার পাবেন ১ ফেব্রুয়ারি থেকে, যারা এখনও পাননি। কন্যাশ্রী এখনও পর্যন্ত ৮৫ লক্ষ মেয়ে পায়। আরও ১০ লক্ষ দেওয়া হচ্ছে। আমি সেঞ্চুরি দেখতে চাই। ওবিসি-র সব টাকা সেন্ট্রাল বন্ধ করে দিয়েছে। আমি আপনাদের স্কাই হাই দেখতে চাই। কেউ প্লেন চালাবেন, কেউ ডাক্তার হবেন। আপনাদের এখানে চাকরি হবে। ২৫ লক্ষ নাম আমরা লিখিয়েছি পরিযায়ী শ্রমিক ডেভলপমেন্ট বোর্ড এর মাধ্যমে। আপনাদের বলবো বাইরে যাবেন না। এখানে যদি দশ হাজার টাকাও পান আর বাইরে যদি এক লক্ষ টাকাও পান, সমমূল্য খরচ হয়ে যায়। নিজের বাড়িতে থাকুন, এর থেকে আনন্দ আর কিছুতে নেই। দশ হাজার কোটি টাকার উপর খরচ করে আমরা চাল কিনি। সেই চাল আমরা বিনা পয়সায় রেশনে দিই। মা মাটি মানুষের সরকার ই বিনা পয়সায় রেশন দিই।”
এদিন কেন্দ্র সরকারকেও নিশানা করেছেন। রাজ্যের বরাদ্দ টাকা আটকে তাখা নিয়ে কটাক্ষ করেছেন। বলেছেন, “আরেকটা হয়েছে ঠুঁটো জগন্নাথ। ঠুঁটো মানে কিছু না করেই বসে আছে। বাক্সটা একদিন হয়ে যাবে ফুটো। পঁচাত্তর শতাংশ টাকা আমরা দিই, আর ২৫ শতাংশ টাকা দিয়ে বলছে সব নাকি ওরা দিচ্ছে। ওদের নাম লিখতে হবে। হাজার টাকার গ্যাসে ফুটছে বিনা পয়সার চাল আর এই তো দেশের হাল। আমাকে গালি দেওয়া বাকি আছে। কিছু রাজনৈতিক দলের নেতা আছে তাদের নেই কাজ তো খই ভাজ। যখন রেল রোজ অ্যাক্সিডেন্ট করছে, লোক মারছে, তখন কোথায় থাকো। যখন সংখ্যালঘুদের পিটিয়ে মারছে, তখন কোথায় থাকো ? ২২/২৩ সালে একশো দিনের কাজের এক টাকাও দেয় নি। তাই বলে আমাকে দূর্বল ভেবো না। আমি এই অবস্থাতেও বছরে ৪০ দিনের কাজ করিয়েছি। আপনারা কোন সাধু ? আপনারা সাধু নন, আপনারা শুধু মানুষকে বিঁধতে জানেন। আমরা বলেছি তোমার টাকা চাই না, তোমার ছবিও লাগাতে দেবো না, তোমার প্রচারও করতে দেবো না। আজ তুমি ধর্মের নামে ছুটি দিয়ে দিচ্ছ। তুমি প্রোগ্রাম করবে বলে ধর্মের নামে ছুটি দিয়ে দিলে আর দেশের জন্য জীবন দিলেন যে নেতাজি তার জন্মদিনে ছুটি দিলে না! তোমরা আজ স্বামীজিকে অপমান করছ, নেতাজিকে অপমান করছো। বাংলাকে অপমান করছ। মনে রেখে বাংলা যদি না থাকতো তাহলে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এত সফল হত না।”
শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, “পথশ্রী ১” প্রকল্পে ১ লক্ষ ও “পথশ্রী ২” প্রকল্পে ১২ হাজার এর পর “পথশ্রী ৩” প্রকল্পে আরো ১২ হাজার নতুন গ্রামীণ রাস্তা তৈরি করা হবে বলে ঘোষণা করছি। দেড় কোটি ছেলে মেয়েরা শুধু মাত্র ক্ষুদ্র শিল্পে কর্মসংস্থান হয়েছে। ইয়াং ছেলে মেয়েদের চাকরি আটকে রেখে দিয়েছে কয়েকটা রাম, বাম, কং এর পান্ডারা। আপনারা আওয়াজ তুলুন। কেউ কেউ ভোটে জেতে না, কোর্টে চলে যায়। বিচারপতির বিরুদ্ধে কিছু বলা যায় না, কিন্তু বিচার নিয়ে বলা যায়। আমি নিজে আইনজীবী, আমি জানি। আমি মহামান্য আদালতের কাছে আবেদন করবো প্লিজ ভ্যাকান্সিগুলো পূরণ করার ব্যবস্থা করে দিন। লোকালি কেউ কেউ কিছু ভুল ত্রুটি করতে পারে। কিন্তু আমাকে ভুল বুঝবেন না। আবার দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে যান, যদি কিছু এখনও না পেয়ে থাকেন, তাহলে পেয়ে যাবেন। আরে বাবা বর্ষাকালে রাস্তা তো একটু ভাঙেই। আমরা বড় বড় গাড়ি গ্রামীণ রাস্তায় অ্যালাও করছি না। কিন্তু কেউ যদি টাকা খেয়ে করে তাহলে তার বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর করুন। বাংলার মনীষীদের অসন্মান করা হলে আমরা নিজেদের অসন্মানিত বলে মনে করব।”