মহানগর ডেস্ক : সন্দেশখালির আদলে সোনারপুর দক্ষিণের লাঙলবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বামুনগাছি গ্রামে ৯৮টি পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি জাল করে, ৫২৭ বিঘা জমি কৃষকদের থেকে কেড়ে নিয়ে, জালিয়াতি করে, ১২১ টি সেল ডিডের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা মানুষের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। এই ঘটনায় তৃণমূল জড়িত বলে বিজেপির অভিযোগ। এই জমি দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোনারপুর থানায় বিজেপি কিষাণ মোর্চা বৃহস্পতিবার প্রতিবাদ স্বরূপ অবস্থান করে, সোনারপুর থানার আইসি এবং বারুইপুর পুলিশ জেলার এসপি বিজেপির কাছ থেকে অভিযোগ বা স্মারকলিপি নেয়নি। এই অবস্থান বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন যাদবপুরের বিজেপি প্রার্থী অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়। অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায় অভিযোগ করে বলেন, “এই কাজ রেজাউল সরকার নামে এক ব্যক্তি করেছেন। ডায়মন্ড হারবার রোডে রেজাউল সরকারের নামে একটি অফিস রয়েছে। এই ঘটনায় রিজেন্ট পার্কের গৌতম দত্ত ও আরও কয়েকজন জমির দালাল হিসাবে যুক্ত আছেন। যাদবপুরের বিজেপি প্রার্থীর অভিযোগ, “এই জমি দুনীতিকাণ্ডে রেজাউল সরকার, যাদবপুরের সদ্য প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ মিমি চক্রবর্তী, সোনারপুর দক্ষিণের বিধায়ক লাভলি মৈত্র, সোনারপুর উত্তরের তৃণমূল বিধায়ক ফিরদৌসি বেগম সহ অনেকো জড়িত।”
অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “সোনারপুর থানা, এসপি এই জমি জালিয়াতি নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে আমাদের স্মারকলিপি নিতে চাইছে না উপর ওয়ালাদের নির্দেশে। তাই এটা স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে যে এই বিপুল পরিমাণ জমি কেলেঙ্কারিতে তৃণমূলের অনেক মাথা জড়িত। সোনারপুর থানা এবং এসপি আমাদের স্মারকলিপি নেয়নি, আমরা পোস্টে স্মারকলিপি পাঠিয়েছি। শনিবার থেকে এই বৃহত্তর জমি কেলেঙ্কারির বিরুদ্ধে ইডি, সিবিআই-র কাছে অভিযোগ জানাব। ইডি, সিবিআই তদন্ত শুরু করলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে এই জমি কেলেঙ্কারির সঙ্গে কলকাতার কোন মাথারা জড়িত।”
এদিকে যাদবপুরের বিজেপি প্রার্থী অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়ের এই অভিযোগ প্রসঙ্গে সোনারপুর দক্ষিণের বিধায়ক লাভলি মৈত্রকে মহানগর ২৪x৭ টেলিফোনে যোগাযোগ করে লাঙলবেড়িয়া নামটি তুলতেই তিনি বলেন, “এখন আমি এই বিষয়ে নিয়ে কোনও কথা বলব না।” কেন বিধায়ক লাঙলবেড়িয়া নামটি শুনেই ফোন ছেড়ে দিলেন? তাঁর এই আচরণ প্রশ্ন উস্কে দিচ্ছে, তাহলে কি লাঙলবেড়িয়ার জমি জালিয়াতি নিয়ে বিজেপি তৃণমূলের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তুলেছে সেই বিষয়টি সত্যি? এই ঘটনা কি জানেন লাভলি মৈত্র? যে রেজাউল সরকারের নামে বিজেপি এই ৫২৭ বিঘা জমি বেআইনি ভাবে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ করছে তাঁর ডায়মন্ড হারবারে অবস্থিত সংস্থার নাম ট্রিংগাব ইনফ্রা ভেঞ্চার প্রাইভেট লিমিটেড। এই কোম্পানির নামেই অসংখ্য কৃষকের জমি হাতিয়ে, নকল পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি তৈরি করে জমি জালিয়াতি করেছে ডায়মন্ড হারবারের বাসিন্দা রেজাউল সরকার।
অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “থানা, এসপি যখন অভিযোগ নিতে চায় না তখন স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে তাঁদের রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা আছে, তাঁদের উপর উপর ওয়ালাদের নির্দেশ আছে। তবে ইডি, সিবিআই-র মাধ্যমে আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে আমরা এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়ব, এই জমি দুর্নীতির শেষ দেখে ছাড়ব, এই জমি জালিয়াতি নিয়ে আমরা উচ্চ আদালতে যাব। ইডি, সুবিআই যয়খন তদন্ত শুরু করবে তখন কিন্তু আজ যাঁরা অভিযোগ নিলেন না তাঁরাও ছাড় পাবেন না।”প্রসঙ্গত সোনারপুর দক্ষিণের লাঙলবেড়িয়া অঞ্চলটি যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের সোনারপুর দক্ষিণ বিধানসভার অন্তর্গত।