মহানগর ডেস্ক : বিধানসভা থেকে বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়ে বেরিয়ে তাপস রায় বললেন, “আমি ইস্তফা দিলাম কারণ ইদানিংকালে আমার মনে হচ্ছিল না দলে আমার দরকার আছে। দুর্নীতি, দুর্নীতি, সন্দেশখালির ঘটনা আমায় নাড়া দিয়েছে। ১২ জানুয়ারি আমার বাড়িতে দলের একজন ইডিকে পাঠায়। আমার দলের তরফ থেকে কেউ আাময় সহানুভূতি জানায়নি। ৫২ দিন ধরে আমায়, আমার মেয়ে ও স্ত্রীকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটা সহানুভূতি জানাননি। কিছু মানুষের কৃতকর্মের জন্য এই অবস্থা দলের। তাই আমার মনে হয়েছে আমার এই দলে থাকা উচিত নয়। তবে আমি কোন দলে যাবো তা নিয়ে কিছু বলবো না। আমি এখন ফ্রি বার্ড।”
তাপস রায় স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, “আমি তৃণমূল ছেড়েছি ১ মার্চ, আজ বিধানসভার অধ্যক্ষের কাছে বিধায়ক হিসাবে ইস্তফা দিলাম।” সোমবার বিধানসভায় বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তাপস রায় সন্দেশখালি থেকে শুরু করে তাঁর বাড়িতে ইডির অভিযান সহ একাধিক বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘‘দলে এত দুর্নীতি, সন্দেশখালিকাণ্ড, আমাকে এত অপমান, অসম্মান, অবহেলা— আমাকে কষ্ট দিয়েছে। আমি দুটো মিছিলে বাধা পেয়েছি, যারা বাধা দিয়েছে তারা চোর, চোর স্লোগান দিয়েছেন। তাই বেশ কিছু দিন ধরে আমি দলের থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলছি।’’বিধানসভায় বিধায়ক পদে ইস্তফা দিতে যাওয়ার আগে তাপস রায় বলেন, ‘‘এত বছরে এই প্রথম বার আমি বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে সে ভাবে থাকতে পারিনি। আমি মনে করি, যে কোনও কাজে স্বতঃস্ফূর্ত থাকা উচিত। এত বছর ধরে আমি তৃণমূল করছি। দলের সঙ্গে আমার দীর্ঘ ২৩-২৪ বছরের সম্পর্ক। আমার বাড়িতে গত ১২ জানুয়ারি ইডি এসেছিল। দল আমার পাশে দাঁড়ায়নি।”
এরপর আরও বিস্ফোরক হয়ে তাপস রায় বলেন, ‘‘আমি বিভিন্ন জায়গা থেকে শুনেছি, আমার বাড়িতে ইডির অভিযানের নেপথ্যে দলেরই কেউ কেউ রয়েছে। এটা দুঃখের বিষয়, বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন ভাষণ দিলেন, তিনি সন্দেশখালির শাহজাহানের কথা বললেন। কিন্তু আমার কথা উল্লেখ করলেন না। আমি আশা করেছিলাম উনি আমার বাড়িতে ইডি অভিযানের কথা এক বার হলেও বলবেন। যেমন বাকিদের ক্ষেত্রে বলে থাকেন। এতে আমি আঘাত পেয়েছি। রাজনীতিতে আমার সততা কারও অজানা নয়। নিজের দলের লোকই যদি আমার বিরুদ্ধে চলে যায়, সেটা দুর্ভাগ্যের। আমার বাড়িতে একটা সাজানো ইডি অভিযান হল, ৫২ দিন পেরিয়ে গিয়েছে। আমি এখনও মমতার ডাক পাইনি। আমার হৃদয়কে এটা ভারাক্রান্ত করেছে।’’