CM
মহানগর ডেস্ক: বিষ্ণু দেও সাই, বয়স ৫৯ বছর। যিনি একাধারে আদিবাসী নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তিনি ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের দৌড়ে ছত্তিশগড়ের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে বাছাই হলেন৷ আজ বিকেলে, নবনির্বাচিত ৫৪ জন বিধায়কের সভায় তিনি বিজেপির আইনসভা দলের নেতা হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
তবে অনেক বিভ্রান্তির এক সপ্তাহ কেটে যাওয়ার পরে তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী করা হল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে একজন উপজাতীয় নেতাকে রাখার ধারণা কারন, সেখানে উপজাতিরা জনসংখ্যার ৩২ শতাংশ অধিকার করে আছে। অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীর পরে তারা রাজ্যের বৃহত্তম জনসংখ্যা গোষ্ঠী।বিজেপি, আদিবাসীদের পছন্দের তালিকায় কখনও শীর্ষে ছিল না, মেজাজ ঘুরিয়ে দিতে এবং উপজাতি অধ্যুষিত সুরগুজা অঞ্চলের ১৪ টি বিধানসভা আসন এবং বস্তারের ১২ টি আসনের মধ্যে আটটি আসন দখল করতে সক্ষম হয়েছে৷মিঃ সাই, ৫৯, দলের আদর্শিক পরামর্শদাতা হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের পক্ষেও যথেষ্ট পরিচিত। উপরন্তু, তিনি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংয়ের ঘনিষ্ঠ, যিনি এখনও পর্যন্ত রাজ্যে দলের সবচেয়ে লম্বা নেতা ছিলেন। চার-মেয়াদী এমপি।
যিনি ২০২০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দলের ছত্তিশগড় ইউনিটের সভাপতি ছিলেন। তার সাংগঠনিক ক্ষমতার জন্য পরিচিত এবং একটি অ-বিতর্কিত ইমেজ রয়েছে। এর আগে তিনি বিজেপি জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য ছিলেন। ২০১৪ সালে যখন নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় আসে, তখন তাকে ইস্পাত বিষয়ক জুনিয়র মন্ত্রী করা হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা এবং অন্যান্য দলের নেতাদের ধন্যবাদ জানিয়ে মাউন্ট সাই বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে, আমি সরকারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী মোদির গ্যারান্টি পূরণ করার চেষ্টা করব”। তিনি বলেন, ১৮ লক্ষ ঘর (একটি আবাসন প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের জন্য) অনুমোদন করা হবে রাজ্যের প্রথম কাজ।
মিঃ সাইকে একটি বৃহত্তর ভূমিকার জন্য বাছাই করা হতে পারে বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, যিনি গত মাসে কুঙ্কুরিতে একটি নির্বাচনী সমাবেশে ভাষণ দেওয়ার সময় ভোটারদের তাকে নির্বাচিত করতে বলেছিলেন। দল রাজ্যে ক্ষমতায় এলে মিঃ সাইকে একজন “বড় মানুষ” করা হবে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ৯০ জন সদস্যের বিধানসভায় ৫৪টি আসন জিতেছে এবং কংগ্রেসের কাছ থেকে ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছে, যা ২০১৮ সালে জিতেছিল ৬৮ টি থেকে ৩৫ টি আসনে হ্রাস পেয়েছে।
মহানগর ডেস্ক: ভোট দিতে গিয়েছিলেন সকাল সকাল। হয়ত বা বুঁদ ছিলেন ফের জনতার মন জয় ও মসনদে ফেরার স্বপ্নে। কিন্তু গণতন্ত্রের বৃহত্তম উৎসবের শুরুতেই ধাক্কা খেতে হল তাঁকে। মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা দিতে পারলেন না ভোট।জোরামথাঙ্গা আইজল নর্থ-২ বিধানসভা আসনের বুথ থেকে বেরিয়ে জানিয়েছেন, তিনি ভোট দিতে পারেননি।
তা সম্ভব হয়নি যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে। ভোটকেন্দ্রে দাঁড়িয়ে জোরামথাঙ্গা এও জানিয়েছেন, তাঁর দল এমএনএফের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়ের বিষয়ে তিনি নিশ্চিত। বিজেপির সঙ্গে তাঁর দলের কোনও যোগ নেই বলেও সাফ বলেছেন। এর পরই মুখ্যমন্ত্রী সকালের কাজ সেরে পরে এসে ভোট দেবেন বলে জানিয়ে ভোটগ্রহণ কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে যান। জোরামথাঙ্গা এদিন বলেন, “সরকার গড়তে ২১টি আসনের প্রয়োজন। আমার বিশ্বাস আমরা ২৫টিরও বেশি সিট পাব। করোনা মহামারীর সময় বিশ্বজুড়ে সংকট দেখা দিয়েছিল। কিন্তু মিজোরামে আমরা সফলভাবে মহামারীর মোকাবিলা করেছি। প্রচুর উন্নয়নমূলক কাজ করেছি। উন্নয়নের এই ধারা এগিয়ে নিতে আমাদের সরকার গড়তে হবে।” তিনি আরও বলেন, “বিজেপি আমাদের শরিকদল নয়।”
উল্লেখ্য, মিজোরামে মঙ্গলবার ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে মণিপুর হিংসার আবহে। উত্তর-পূর্বের এই পাহাড়ি রাজ্যটিতে একদফায় ৪০টি বিধানসভা আসনে নির্বাচন হচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে উত্তর-পূর্বে কি খাতা খুলতে পারবে কংগ্রেস? ২০১৮ সালের বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের সরকারকে হঠিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল মিজ়ো ন্যাশনাল ফ্রন্ট। এমএনএফ ওই ভোটে জিতেছিল ২৭টি আসনে। মিজোরামের শাসকদল এমএনএফ ২০১৬ সাল থেকেই বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট ‘নর্থ ইস্ট ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স’ (নেডা)-র সদস্য। তবে মণিপুরের সাম্প্রতিক হিংসার জেরে বিজেপির বিরুদ্ধে খানিকটা অসন্তোষ রয়েছে দলে।
লগ্নি টানতে বিদেশ সফরে মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যে “নিষ্কর্মা” শিল্পাঞ্চলে দীর্ঘশ্বাস
কলকাতা: বছর ঘুরতেই বঙ্গে শিল্পের দেবতা বিশ্বকর্মার আরাধনা। রাজ্যে শিল্পে লগ্নি টানতে স্পেন সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অথচ রাজ্যে শিল্পক্ষেত্রে বদলালো না হতশ্রী চেহারা। বিশ্বকর্মা পুজোর আগেই বন্ধ হয়ে গেল ভাটপাড়া জুটমিলের দরজা। মাথায় হাত জুটমিলের কয়েক হাজার শ্রমিকের। বহু বাধার পরেও খোলা হয়েছিল এই জুটমিলের দরজা। সূত্রের খবর, শ্রমিক মালিক অসন্তোষের জেরেই বন্ধ হয়েছে জুটমিল। একই চিত্র ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলেও। বন্ধ হয়েছে একের পর এক কারখানা। সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিশ ঝুলছে একাধিক কারখানার দরজায়। বিশ্বকর্মা পুজোর দিনে শুনশান সেখানকার পথঘাট।
একসময় এই রাজ্য়ের প্রচলিত প্রবাদ ছিল, কৃষি আমাদে ভিত্তি শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ। সেসব এখন শিকেয়। বামফ্রন্ট সরকারের পর তৃণমূল সরকারের রাজত্বকালেও কারখানার গেটে ঝুলছে বড় বড় তালা। দুর্নীতি, চুরি শিল্পে পরিণত হয়েছে রাজ্যে। ভাতায় বাঁধা পড়েছে বিশ্বকর্মাদের ভবিষ্যৎ। রাজ্যে এই মুহূর্তে ঋণের পরিমাণ ৫ লক্ষ ৮৬ হাজার ৪৩৮ কোটি টাকা। ঘটা করে বানিজ্য সম্মেলন হচ্ছে রাজ্যে অথচ কর্মসংস্থান তথৈ বচঃ অবস্থায়।
বন্ধ কারখানার শ্রমিকদের অভিযোগ স্বল্প পারিশ্রমিকে দ্বিগুন কাজ করিয়ে নিত মালিকেরা। গালিগালাজ থেকে শুরু করে মারধর পর্যন্ত করে মালিক পক্ষ। অভিযোগ, পুজোর আগে প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা, বোনাস কিছুই দেবে না বলেই মালিক পক্ষ কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে। একদিকে যখন হতশ্রী দশা রাজ্যের একাধিক শিল্পঞ্চলগুলির, তখন বিদেশি পুঁজি টানতে স্পেন সফরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার সফর সঙ্গী প্রাক্তন ক্রিকেট তারকা সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় শালবনিতে ইস্পাত কারখানা শুরু করার প্রতিশ্রুতি
দিয়েছেন, অথচ শিল্পাঞ্চলে পুরনো কারখানাগুলির বেহাল দশা।
আরও পড়ুন: বিশেষ পরিকল্পনা ভাঙড়ে, হামলা রুখতে আসছে কলকাতা পুলিশের ‘বডি ক্যামেরা’
বদলায়নি সিঙ্গুরের হতাশা। যে জমিতে টাটার প্রস্তাবিত কারখানা হওয়ার কথা ছিল সেখানে আজ আবর্জনার স্তূপ। গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে কারখানা। কৃষকদের বলা হয়েছিল কারখানার জমি রাজ্য সরকার চাষযোগ্য করে কৃষকদের কাছে ফিরিয়ে দেবে। সেই প্রতিশ্রুতিও আজ বিশ বাঁও জলে। বিশাল জমি আগাছায় ভরপুর। কারখানা তৈরি হলে কর্মসংস্থান হতো বহু মানুষের, দাবি করছেন সাধারণ মানুষ। শ্রমিকদের ভাতে জল ঢেলে সিঙ্গুরের জমি এখন গবাদি পশুর চারণভূমি। যে সিঙ্গুরকে কেন্দ্র করে রাজ্যে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হয়েছিল সেই সিঙ্গুরই নিষ্কর্মা। রাজ্যে রাজনৈতিক পালা বদলের পর কেটে গেছে ১২ বছর। কৃষক শ্রমিকদের হাল ফেরেনি কোথাও। সিঙ্গুরে তাপসী মালিকের আবক্ষমূর্তির সামনে রয়েছে রাজ্যের বর্তমান শাসকদলের পতাকা, অথচ ১২ বছর পেরিয়ে গেলেও শিল্প-কৃষির নিটফল লবডঙ্কা।