মহানগর ডেস্ক: লোকসভা নির্বাচনের আবহে বঙ্গে উঠেছে বিরাট ঝড়। যাকে কেন্দ্র করে এই ঝড় উঠেছে তা হল রাজভবনেরই এক অস্থায়ী মহিলা কর্মী বাংলার রাজ্যপালের বিরুদ্ধে করেছেন শ্লীলতাহানির অভিযোগ। এই নিয়েই বঙ্গ রাজনীতিতে কম আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে না।রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ওঠা শ্লীলতাহানির অভিযোগ প্রসঙ্গে ফের একবার মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। রাজভবন যাওয়া নিয়ে ও সুরক্ষা নিয়েও করলেন বড় মন্তব্য।
হুগলির সপ্তগ্রামে ভোট প্রচারে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী । সেখান থেকেই রাজভবনে তাঁর যাওয়া ও গেলেও নিরাপত্তা নিতে আশঙ্কা প্রকাশ করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সেই সঙ্গেই সম্প্রতি রাজভবনের তরফে যে সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশের হাতে দেওয়া হয়েছে এবং সামনে আনা হয়েছে তাই নিয়েও তুলে দিলেন প্রশ্ন। সপ্তগ্রামের নির্বাচনী সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আতঙ্কের সুরে হাত জোড় করে নিরাপত্তা নিয়ে বলেছেন, “বাবা রে! আমাকে আর রাজভবনে ডাকলে আমি আর যাব না। রাজভবনে আমি আর যাচ্ছি না ভাই। আমাকে রাস্তায় ডাকলে যাব। কথা বলতে হলে আমাকে রাস্তায় ডাকবেন। কিন্তু, যা কীর্তি-কেলেঙ্কারি শুনছি তাতে আপনার পাশে বসাটাও পাপ।” একই সঙ্গে প্রকাশ করা সিসিটিভি ফুটেজ নিয়েও প্রশ্ন তুলে বলেছেন, “প্রেসকে ডেকেছিল রাজ্যপাল। এডিট করে কিছু ভিডিয়ো দেখিয়েছে। পুরোটা দেখিয়েছে কি? আমার কাছে কপি আছে। যেটা এডিট করেছে সেটাও আছে। আরও একটা ভিডিয়ো আমি পেলাম।”
উল্লেখ্য, পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা নাগাদ রাজভবনের এক মহিলা অস্থায়ী কর্মী কাঁদতে কাঁদতে রাজভবনের পুলিশ আউটপোস্টে আসে। পুলিশের কাছে ওই মহিলা জানান, একবার নয়, দু’বার চাকরি স্থায়ীকরণের নাম করে রাজ্যপাল তাঁর শ্লীলতাহানি করেন। বৃহস্পতিবার রাজ্যপাল ওই অস্থায়ী মহিলা কর্মীকে রাজ্যপাল তাঁর চেম্বারে ডাকেন এবং শ্লীলতাহানি করেন বলে ওই অস্থায়ী মহিলা কর্মী পুলিশের কাছে জানান। ওই অস্থায়ী মহিলা কর্মী ২০১৯ সাল থেকে রাজভবনে কর্মরত। রাজভবনের হস্টেলে ওই মহিলা থাকেন। গত ২৪ এপ্রিল ওই মহিলাকে রাজ্যপাল দেখা করতে ডেকে পাঠান। রাজ্যপালের নির্দেশ মতো ওই মহিলা রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে গেলে রাজ্যপাল তাঁর সঙ্গে যেমন আচরণ করেন তা তাঁর পছন্দ হয়নি, তিনি তখন রাজ্যপালের চেম্বার থেকে বেরিয়ে আসেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজ্যপাল আবার ওই অস্থায়ী মহিলা কর্মীকে নিজের চেম্বারে ডাকেন। ওই অস্থায়ী মহিলা কর্মী এদিন সঙ্গে করে রাজ্যপালের কাছে তাঁর সুপারভাইজারকে নিয়ে যান। রাজ্যপাল সুপারভাইজারকে সরিয়ে দেন, ওই অস্থায়ী মহিলা কর্মীর সঙ্গে একা কথা বলেন। মহিলার অভিযোগ, সেই সময় রাজ্যপাল তাঁর শ্লীলতাহানি করেন। তখন ওই মহিলা রাজ্যপালকে বলেন, এই বিষয়টি তিনি পুলিশে জানাবেন। কাঁদতে কাঁদতে ওই মহিলা রাজ্যপালের চেম্বার থেকে বেরিয়ে রাজভবনের পুলিশ আউটপোস্টে এসে সব বলেন। পুলিশ তখন ওই মহিলাকে হেয়ার স্ট্রিট থানায় গাড়ি করে পাঠায়। তাঁর পর থেকেই বঙ্গ রাজনীতিতে ঝড় উঠেছে।