Home Bengal বাংলার জন্যই লোকসভা নির্বাচনে দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইল কমিশন

বাংলার জন্যই লোকসভা নির্বাচনে দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইল কমিশন

by Mahanagar Desk
29 views
The commission wanted to vote in Bengal by deploying maximum army

বাংলার জন্য লোকসভা নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে পাঠানো চিঠিতে কমিশন জানিয়েছে, বাংলায় লোকসভা নির্বাচনে তারা ৯২০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে চাইছে। কমিশনের এই সিদ্ধান্তে স্বাভাবিক ভাবেই খুশি রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। অন্য দিকে, কংগ্রেস বা বামেদের বক্তব্য, শুধু বাহিনী মোতায়েন করলেই হবে না, তারা যাতে সক্রিয় থাকে এবং সঠিক ভাবে কাজ করে তা নিশ্চিত করতে হবে। তবে এই বিষয়ে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল এখনও এ বিষয়ে কিছু বলেনি।

জাতীয় নির্বাচন কমিশন বাংলার পরেই জম্মু-কাশ্মীরের জন্য সেনা বাহিনী মোতায়েন করতে চেয়ে সেখানে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ৬৩৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী দাবি করেছে। এরপর উত্তরপ্রদেশের জন্য কমিশন চেয়েছে ২৫২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। বিহার এবং ছত্তীসগঢ়ের জন্য যথাক্রমে ২৯৫ ও ৩৬০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চাওয়া হয়েছে। লোকসভা ভোটের সঙ্গেই অন্ধ্রপ্রদেশ, অরুণাচল প্রদেশ, ওড়িশা এবং সিকিমে বিধানসভা নির্বাচনও রয়েছে। কমিশন কেন্দ্রকে জানিয়েছে, অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশার জন্য ২৫০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী তারা চাইছে। অরুণাচল প্রদেশ ও সিকিমের জন্য যথাক্রমে ৭৫ ও ১৭ কোম্পানি বাহিনী হলেই চলবে বলে কমিশনের বক্তব্য। ঝাড়খণ্ড ও পঞ্জাবের জন্য ২৫০ কোম্পানি বাহিনী চেয়েছে কমিশন। এই দু’টিই অ-বিজেপি রাজ্য। গোষ্ঠীহিংসায় বিধ্বস্ত মণিপুরের জন্য কমিশন চেয়েছে ২০০ কোম্পানি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাতের জন্য মণিপুরের সমপরিমাণ বাহিনীই চাওয়া হয়েছে।

আসন্ন ভোটের জন্য দেশের সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে কত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা প্রয়োজন, তা সংশ্লিষ্ট মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকদের থেকে জানতে চেয়েছিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। কমিশন সূত্রে খবর, সেই সব আধিকারিকেরা যা রিপোর্ট জমা দিয়েছেন, তার ভিত্তিতেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে বাহিনীর জন্য সুপারিশ করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন । কমিশন কেন্দ্রকে জানিয়েছে, দেশ জুড়ে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভাবে নির্বাচন করাতে গেলে অন্তত ৩ হাজার ৪০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীকে কাজে লাগাতেই হবে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের জন্যই দরকার ৯২০ কোম্পানি বাহিনী। নির্বাচন কমিশন এখনও ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করেনি। ফলে এ রাজ্যে কত দফায় ভোট হবে, তা এখনও অজানা। কমিশন জানিয়েছে, যত দফাতেই ভোট হোক না কেন, সব দফাতেই ওই ৯২০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকবে রাজ্যে। গোটা ভোট পর্ব মিটলে তবেই রাজ্য থেকে ছাড়া পাবে ৯২০ কেম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী।

গত লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় ৭৪০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। বিরোধীদের অভিযোগ, তার পরেও নানা জায়গায় হিংসার ঘটনা ঘটেছে, প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। পরে বিধানসভা নির্বাচনে বিরোধীদের দাবিকে গুরুত্ব দিয়ে হাজার কোম্পানিরও বেশি বাহিনী দিয়ে ভোট হয়েছিল। পঞ্চায়েত ভোট সাধারণ রাজ্য পুলিশ দিয়েই করিয়ে থাকে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কিন্তু গত পঞ্চায়েত ভোট ছিল তার ব্যতিক্রম। বিরোধীদের দাবিকে মান্যতা দিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে অন্তত ৮০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট করানোর কথা হয়েছিল। আসন্ন লোকসভা ভোটে বাংলার জন্য যে পরিমাণ কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়েছে কমিশন, তাকে স্বাগত জানিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। তিনি বলেন, ‘‘স্বাভাবিক ভাবেই বাংলায় অন্য রাজ্যের তুলনায় বেশি বাহিনী লাগবে। কারণ বাংলা চালায় তৃণমূল। সেখানে আইনশৃঙ্খলার কী পরিস্থিতি, তা আমরা দেখতে পাচ্ছি। গত বিধানসভা ভোট মিটতেই কেন্দ্রীয় বাহিনী চলে যাওয়ার পর আমরা ভোট পরবর্তী হিংসা দেখেছি। রাজ্যের মানুষ যাতে সুষ্ঠু ভাবে নিজের ভোট নিজে দিতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে বেশি বেশি বাহিনী প্রয়োজন।’’
তবে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনেও ৮০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্যে মোতায়েন করে পঞ্চায়েত ভোটে হিংসা রোখা যায়নি।

অন্য দিকে, সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর এই বিষয়ে বক্তব্য, ‘‘রাজ্যের যা অবস্থা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী, তাতে নিজের ভোট নিজে দিতে পারাটা মুশকিলের ব্যাপার হয়ে দাঁঠিয়েছে। কত কেন্দ্রীয় বাহিনী আসছে, সেটা বড় কথা নয়। গুরুত্বপূর্ণ হল, তারা যেন এসে নিজের ভোট নিজে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে। বুথে লুট হচ্ছে আর বাহিনী গাছতলায় বসে সরবত খাচ্ছে, সেটা হলে চলবে না।’’

প্রদেশ কংগ্রেস মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায় বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঠিকভাবে করে কাজ করতে হবে। তৃণমূলের দলদাস হয়ে যাওয়া পুলিশের নির্দেশে বাহিনী কাজ করলে চলবে না।’’ তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘এটা প্রশাসনিক বিষয়। এখনই এটা নিয়ে বলার মতো সময় আসেনি। যখন বলার সময় হবে, তৃণমূল অবশ্যই তখন প্রতিক্রিয়া দেবে।’’

You may also like

Mahanagar bengali news

Copyright (C) Mahanagar24X7 2024 All Rights Reserved