মহানগর ডেস্ক : তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা শ্লীলতাহানির উত্তর দিলেন সিভি আনন্দ বোস। তিনি তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা শ্লীলতাহানির অভিযোগের প্রায় ২ ঘণ্টা পর বিবৃতি দিয়ে বলেন, “আমাকে ব্যবহার করে কেউ নির্বাচনী ফয়দা নিতে চায়, ঈশ্বর তাঁদের মঙ্গল করুন। বানানো নিষয় নিয়ে মাথা ঘামাতে আমি রাজি নই। এসব বলে আমার প্রতিবাদ থামানো যাবে না। সত্যের জয় হবেই।”
এদিকে সিভি আনন্দ বোসের পক্ষে সওয়াল করেছেন বিজেপি নেতা এবং মেঘালয়ের প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায়। তিনি বলেন, “আমি যখন মেঘালয়ের রাজ্যপাল তখন সরকারি গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করতেন সিভি আনন্দ বোস, তাঁর সম্পর্কে কখনও আগে এই জাতীয় অভিযোগ শুনিনি। সাধারণত যাঁদের বিরুদ্ধে এই জাতীয় অভিযোগ ওঠে তাঁদের বিরুদ্ধে এই সংক্রান্ত অতীত অভিযোগ থাকে, তেমন অভিযোগ সিভি আনন্দ বোসের নামে জীবনে শুনিনি। আসলে সন্দেশখালি, শেখ শাহজাহানের দিক থেকে নজর ঘোরাতে এসব করা হচ্ছে।”
তথাগত রায়ের এই বক্তব্য সংবাদ মাধ্যমে আসার পরই রাজ্যপাল তাঁর বিবৃতি দেন। রাজ্যপালের বিবৃতির ঘন্টা ২ আগে তাঁর বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তোলেন রাজভবনে কর্তব্যরত এই অস্থায়ী মহিলা কর্মী। এই মহিলা কর্মী পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন তাঁকে রাজ্যপাল গত ২৪ এপ্রিল ডেকে পাঠান, কু-প্রস্তাব দেন, গায়ে হাত দেন। এরপর রাজ্যপাল ২ মে, বৃহস্পতিবার ওই মহিলা কর্মীকে ডেকে পাঠান, তিনি তখন সঙ্গে করে তাঁর সুপারভাইজারকে সঙ্গে নিয়ে রাজ্যপালের চেম্বারে যান। রাজ্যপাল সুপারভাইজারকে সরিয়ে দিয়ে ওই মহিলার শ্লীলতাহানি করেন। তারপর ওই মহিলা কেঁদে বাইরে এসে রাজভবনের পুলিশ আউটপোস্টে জানান, শেষ পর্যন্ত পুলিশি সহায়তায় হেয়ার স্ট্রিট থানায় এই মহিলা রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু ভারতীয় সংবিধানে রাজ্যপালকে সুরক্ষা দেওয়া আছে। তাতে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে পুলিশ তাঁর কার্যকালের মধ্যে ফৌজদারি মামলা করতে পারে না। তবে তিনি তাঁর পদ থেকে অবসর নেওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে এই মহিলা চাইলে মামলা করতে পারেন, তখন সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে পুলিশি তদন্ত হতে পারে। এটা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
এদিকে রাজ্যপাল বলছেন, তাঁর মর্যাদাহানি করে কেউ নির্বাচনের মুখে ফয়দা নিতে চাইছে, এটা আমি কখনই মেনে নেব না।
এদিকে অভিযোগকারী মহিলা জানিয়ে দেন তিনি রাজভবনের কোয়ার্টারে থাকবেন না। পুলিশ তাঁকে অন্যত্র থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়ার ব্যবস্থা করছেন। ওই মহিলা হেয়ার স্ট্রিট থানায় জানায় রাজ্যপাল ২ মে তাঁর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন, গায়ে হাত দেন, দু’বার এই শ্লীলতাহানির ঘটনা রাজ্যপাল ঘটান।
এই ঘটনা নিয়ে যখন রাজ্যজুড়ে শোরগোল পড়ে গেছে তখনই দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাজভবনে এলেন রাত ১০টার কিছু পড়ে। এখানেই রাতে প্রধানমন্ত্রী থাকবেন।
এদিকে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা গুরুতর অভিযোগ খণ্ডন করছেন রাজ্যপাল। রাজভবন সূত্রে জানা যাচ্ছে রাজ্যপাল রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ময়দানে নেমে যখন থেকে প্রতিবাদ শুরু করেন তখন থেকেই তাঁর কাছে হুমকি এমনকি প্রাণনাশের হুমকিও দেয়া হচ্ছে। রাজভবন সূত্রে জানা যাচ্ছে যিনি রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেছেন তিনি নির্বাচনের সময় রাজভবনে আসা অভিযোগ নির্বাচন কমিশনের দফতরে না পাঠিয়ে চেপে দিচ্ছিলেন। এই নিয়ে রাজ্যপাল ওই মহিলা অস্থায়ী কর্মীকে প্রশ্ন করলে তিনি রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তোলেন। এই মহিলার একজন বয় ফ্রেনৃড আছে, তিনিও রাজভবনে কাজ করেন, তাঁরা মিলে এই কৌশলী বর্ণনা করছেন, এতে রাজ্যপাল ভীত নয়।