মহানগর ডেস্ক : লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় প্রার্থিতালিকা ঘোষণার পরেই কর্নাটক বিজেপিতে ক্ষোভের আগুন। রাজ্যের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী কেএস ঈশ্বরাপ্পার পরে এ বার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ডিভি সদানন্দ গৌড়া ক্ষোভে ফেটে পড়লেন। সোমবার ৭১ বছরের প্রবীণ এই নেতা সদানন্দ গৌড়া বিজেপি ছাড়ার ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, ‘‘আমার সঙ্গে অন্য দলও যোগাযোগ করেছে। কথা বলেছে।’’
প্রসঙ্গত, সদানন্দ জানিয়েছেন, ‘‘শীঘ্রই আমার মনের যন্ত্রণা প্রকাশ্যে আনব।’’ এই প্রবীণ রাজনীতিক বেঙ্গালুরু উত্তরের দু’বারের সাংসদ, এহেন সদানন্দকে এ বার টিকিট দেয়নি বিজেপি। সেখানে প্রার্থী করা হয়েছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পার ঘনিষ্ঠ নেত্রী তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শোভা করান্দলাজেকে। আর তাতেই চটেছেন সদানন্দ।
কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও অতীতে সদানন্দ রাজ্যের বিজেপি সভাপতি এবং নরেন্দ্র মোদী সরকারের রেলমন্ত্রীর মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। তিনি কর্ণাটকের ভোক্কালিগ্গা জনগোষ্ঠীর একজন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা। তিনি দল ছাড়লে লোকসভা ভোটে দক্ষিণ কর্নাটকে বিজেপি সমস্যায় পড়তে পারে বলে রাজনৈতিল অভিজ্ঞ মহল মনে করছে। তবে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের বক্তব্য সব পরিস্থিতির কথা তারাও মাথায় রেখেই প্রদর্থী তালিকা প্রকাশ করেছে।
আজ থেকে ঠিক এক দশক আগে কর্নাটকে লিঙ্গায়েত ভোটব্যাঙ্ক নিশ্চিত করার পরে ভোক্কালিগাদের কাছে টানতে তৎপর হয়েছিলেন তৎকালীন বিজেপি নেতৃত্ব। ২০১১ সালে অগস্টে দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত লিঙ্গায়েত নেতা ইয়েদুরাপ্পাকে সরিয়ে ভোক্কালিগা নেতা সদানন্দকে গৌড়াকে কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী করা হয়েছিল। কিন্তু ইয়েদুরাপ্পা ক্ষমতায় না থাকলেও সে সময়ে সরকারের রাশ লিঙ্গায়েত নেতাদের হাতেই ছিল, ফলে ভোক্কালিগাদের সমর্থন কুড়োনোর প্রশ্নে ব্যর্থ হন সদানন্দ গৌড়া। তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকার মাত্র এক বছরের জন্য ক্ষমতায় ছিল, তিনিও মুখ্যমন্ত্রিত্বের দায়িত্বে ছিলেন ওই এক বছর।
এর পর ২০১২-র জুলাইয়ে সদানন্দকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদে লিঙ্গায়েত নেতা জগদীশ শেট্টারকে বসিয়েছিল বিজেপি। ২০১৪ সালে প্রথম মোদী সরকার ক্ষমতায় এলে সদানন্দকে রেল মন্ত্রকের দায়িত্বে আনা হয়। দ্বিতীয় মোদী সরকারের আমলে প্রথম দু’বছর কেন্দ্রীয় রসায়ন ও সার মন্ত্রকের দায়িত্বও সদানন্দ সামলেছেন। কিন্তু ২০২১ সালে সদানন্দকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে রাজ্যে দলীয় সংগঠনকে শক্তিশালী করার দায়িত্ব তাঁকে দিয়েছিল দল। কিন্তু গত বছর ইয়েদুরাপ্পা-পুত্র বিজয়েন্দ্রকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি করার পর থেকেই দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছিল সদানন্দের।