Home Bengal সমঝোতা! কুণাল-তৃণমূল দ্বন্দ্ব মিটল!

সমঝোতা! কুণাল-তৃণমূল দ্বন্দ্ব মিটল!

by Mahanagar Desk
203 views

মহানগর ডেস্ক : তৃণমূলের সঙ্গে কুণাল ঘোষের মান-অভিমানের পালা সাঙ্গ হল! রাজ্যসভার তৃণমূল দলনেতা ডেরেক ও ব্রায়েনের বেকবগানের বাড়িতে কুণালকে নিয়ে শনিবার পৌঁছন রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এদিন সাড়ে ১২টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে কুণাল গাইলেন,”আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে।” তাই মনে করা যেতেই পারে কুণালের জয় হল, এতো কিছু দলের বিরুদ্ধে বলার পরও কুণালের কাছে দল নত হল, জয় হল কুণালের। তাই প্রশ্ন, কুণালের নিশানাকে কি তৃণমূল ভয় পাচ্ছে? না হলে বুধ থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত যে কুণাল দলের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করলেন, দল সেই কুণালকেই ফের দলে ফিরিয়ে নিচ্ছে কেন? দলের সূত্রে জানা গেছে, জট কেটেছে। কুণালও বলেন, “পদ নয়, আমি দলের কর্মী।”

ডেরেকের বাড়ির বৈঠক শেষে বেরিয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, “আমি বারবার বলে এসেছি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমার নেত্রী, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের সেনাপতি। আমি তৃণমূলে ছিলাম, তৃণমূলে আছি, তৃণমূলে থাকব। বাকি কথার উত্তর দেব না। সময় দিন সব জানতে পারবেন। এখনই এর বেশি কিছু বলব না। আমার দল আমার উপর আস্থা রেখে,  স্নেহের সঙ্গে তৃণমূলের সঙ্গে থাকার কথা বলেছে।” এর পরই কুণাল গেয়ে ওঠেন, “আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে।” এই গানটি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
এদিকে ব্রাত্য বসু বৈঠক শেষে বলেন, “আমরা ভোটের আগে দলের অন্য আর এক নেতার বাড়িতে এসেছিলাম গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে। বাকিটা পরে দেখুন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেনাপতিত্বে তৃণমূল ঐক্যবদ্ধ পরিবার, আমরা অনেক ভোটে জিতব।” ডেরেক ঘণ্টা খানেক পরে বার হবেন, তখন তাঁকে বাকি কথা জিজ্ঞাসা করুণ। কেন বৈঠক, কি কারণে বৈঠক, এর বেশি আমি বলতে পারব না। দল আমায় দায়ুত্ব দিয়েছিল, আমি সেই কাজ করেছে। যে দুজনের বৈঠক হয়েছে তাঁরাই সব বলতে পারবে।”

তবে কুণাল আবার দলের মুখপাত্র হবেন কি না সেই বিষয়ে কুণাল বা ব্রাত্য কিছুই স্পষ্ট করেননি। তবে কুণালের কথায় বোঝা গেল কুণালের সঙ্গে দলের সমঝোতা হল, দ্বন্দ্ব মিটল, এটাই বলা চলে, কেন না কুণাল বৈঠক শেষে গাইলেন, “আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে।” কুণাল বলেন, “আমার ক্ষোভ, অভিমান কোনও বিষয় নয়। দলে আছি, প্রচারে পাঠালে যাব, দলের কর্মী, বক্তা হিসাবে, কেন যাব না? কুণাল বলেন আমি অফিশিয়ালি কোনও চিঠি পাইনি।”

<span;>বুধবার কুণালকে রাজ্য সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে ও বৃহস্পতিবার তারকা প্রচারকের পদ থেকে তৃণমূলের লেটার হেডে যে চিঠি প্রেসের কাছে দেওয়া হয় তাতে ডেরেকের সই ছিল। কুণাল ডেরেককে তারপর পোস্টম্যান বলে কটাক্ষ করেছিলেন। সরব হয়েছিলেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। তারপর কুণাল ঘোষ বলেন, ২০২১ সালে চাকরি বিক্রির জন্য টাকা তোলার বিষয়টি দল জানত। কুণাল ঘোষ শনিবার ডেরেকের বাড়ি যাওয়ার আগে সত্যজিৎ রায়ের গুপি গাইন বাঘা বাইন সিনেমার “এক যে ছিল রাজা…., যেন যারে তারে দিয়ে শাস্তি রাজা কখনও স্বস্তি পাবে কি” গানটি গেয়েছেন। মমতার সঙ্গে কুণালের এমন একটি ছবি পোস্ট করেছেন যখন তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসেনি, সেই কথা আবার ছবির ক্যাপশনে সোশ্যাল মিডিয়ায় কুণাল নিজেই লিখেছেন।

<span;>গতকালই শেনা যাচ্ছিল রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু কুণালকে নিয়ে ভোটের মুখে কুণালের তোপ থেকে দলকে বাঁচাতে ডেরেকের সঙ্গে রফাসূত্র খুঁজতে বৈঠক করবেন। দলের শীর্ষ স্তর থেকে এই নির্দেশ কুণালের কাছে আসে। প্রথমটায় কুণাল সম্মত হননি দলের এই প্রস্তাবে। তারপর ব্রাত্য বসু, যিনি কুণাল-তৃণমূল কাজিয়া পর্বে কুণালের পাশে দাঁড়ান, কুণালকে এই বৈঠক বিষয়ে ফোন করেন। বিশেষ সূত্রে জানা গেছে, “ব্রাত্য বন্ধু, তাই রাজি হলাম”, এই বার্তা দিয়ে কুণাল ব্রাত্যর সঙ্গে ডেরেকের বাড়ি যান বৈঠকে। তবে কুণাল নিজে গাড়ি নিয়ে যাননি, ব্রাত্য কুণালকে গাড়িতে তুলে নিয়ে ডেরেকের বাড়িতে পৌছন ১২টা নাগাদ। এই সংবাদ লেখার সময় খবর, বৈঠক এখনও চলছে।

<span;>এখন প্রশ্ন, দল কি তাহলে কুণালের অভিযোগ মেনে নিয়ে ভোটের মুখে অস্বস্তি এড়াতে কুণালকে দলে ফেরাতে চাইছে? তাই কি ব্রাত্যর মধ্যস্ততায় ডেরেকের বাড়িতে কুণালকে নিয়ে এই বৈঠক?
<span;>কেননা কুণাল বলেছিলেন, “আমার বিষয়ে যে প্রেস রিলিজ (পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার চিঠি) সেই বিষয়ে মমতাদি, অভিষেক জানেন না বলে কোনও ধোঁয়াশায় আমি থাকতে চাইনা। তাঁদের কথা ছাড়া একটা পাতাও নড়ে না।” এছাড়াও কুণাল বলেন, “২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগেই দল জানত পার্থ চট্টোপাধ্যায় চাকরির জন্য টাকা তুলছে। দল সব জেনেও সময় মতো ব্যবস্থা নেয়নি। আমি দলের কর্মী, দলের বিরুদ্ধে যাঁরা বলে তাঁদের বিরুদ্ধে বলি। দেব মিঠুন চক্রবর্তীকে বলছেন আমার বাবার মতো, কিডনি দিতে পারি মিঠুন দার দরকারে। মমতাদি মিঠুন দাকে যেখানে গদ্দার বলছেন সেখানে দেব বলছেন, গদ্দার শব্দটা তাঁর পছন্দ নয়। এর পরেও তাঁদের বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা নেয় না, আমার অগ্নিপরীক্ষা কতো দিতে হবে?”
<span;>কুণাল এছাড়াও দলকে অস্বস্তিতে ফেলে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সমালোচনা করেন। তারপরেও কুণালকে দলে রাখতে তৃণমূল নেতৃত্বের এই প্রয়াস প্রমাণ করছে কুণালের অভিযোগের সারবত্তা আছে। তাই ভোটের মধ্যে অস্বস্তি দল কুণালের কাছে মাথা নত করল। তবে ভোট মিটলে দল কুণালের বিরুদ্ধে নতুন করে অন্য কোনও ব্যবস্থা নেয় কি না সেটাই দেখার।

You may also like

Mahanagar bengali news

Copyright (C) Mahanagar24X7 2024 All Rights Reserved