মহানগর ডেস্ক: ক্রাইম থ্রিলারে এমন ঘটনা মাঝেসাঝেই আমরা শুনে থাকি। প্রায়ই সংবাদমাধ্যমে এ ধরণের খবর সবার চোখে পড়ে। আর সে খবর পড়ে সবাই চমকে ওঠেন। স্বার্থের সঙ্ঘাত হলে কখনও গুলি চালিয়ে, অস্ত্রের আঘাতে কিংবা বিষ প্রয়োগ করে কারোকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। খুনের শিকার হন চেনাজানা থেকে আত্মীয়স্বজন। একসময় প্রিয় মানুষেরাও সেই তালিকাভুক্ত হয়ে থাকেন।
এটি আমেরিকার ঘটনা, যে ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ঠাকুর্দা,ঠাকুমা ও কাকা। আর সেই খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে তাঁদেরই একসময়ের প্রিয় নাতি। এরা প্রত্যেকেই ভারতীয়। নাতির গুলিতে রক্তাক্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েছেন ঠাকুর্দা,ঠাকুমা এবং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর সেখানে মারা যান কাকা। খুনের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া তেইশ বছরের ভারতীয় ছাত্রের নাম ওম ব্রহ্মভাট। নৃশংস,হৃদয়বিদারক ঘটনাটি ঘটেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির একটি আবাসনে। নিহতদের নাম দিলীপকুমার ব্রহ্মভাট। বয়েস বাহাত্তর। নিহতে ঠাকুমা বিন্দু ব্রহ্মভাটের বয়েসও বাহাত্তর। কাকার বয়েস যশকুমার ব্রহ্মভাট। এখবর জানিয়েছে প্লেইনফিল্ডের পুলিশ বিভাগ ও মিডলসেক্স কাউন্টির প্রসিকিউটর অফিস।
তারা জানিয়েছে গত সোমবার এক পড়শি তাদের ফোন করে জানান ট্র্যাডিশনস কনডো কমপ্লেক্সের একটি অ্যাপার্টমেন্ট থেকে তিনি গুলি চালানোর শব্দ শুনেছেন। ফোন পেয়ে সেখানে পুলিশ দুজন দোতলায় দুজন বয়স্ক মানুষের মৃতদেহ দেখতে পায় এবং আরেকজন গুরুতর জখম অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে। তাকে তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। জেরার জন্য অভিযুক্ত ওমকে গ্রেফতারের পর তার বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনে পুলিশ। খুন ও অস্ত্র রাখার অপরাধে ওমকে হেফাজতে নেওয়া হয়। জানা যায় ব্রহ্মভাট পরিবার আদতে ভারতের গুজরাতের বাসিন্দা। খবর পেয়ে পুলিশ আসার পর ওমকে ওই অ্যাপার্টমেন্টে দেখতে পাওয়া যায়। সেখানেই তিনজনের সঙ্গে থাকতো সে।
পুলিশ জানিয়েছে মাস কয়েক আগে ওম সেখানে এসেছিল। সেখানে থাকতে শুরু করে। গ্রেফতারের পর তাকে অ্যাডাল্ট মিডলসেক্স কারেকশনাল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। শুনানি চলাকালীন ওমের তরফে কোনও অ্যাটর্নি থাকবেন কিনা, সেটা জানা যায়নি। তদন্তে জানা গিয়েছে হ্যান্ডগানের সাহায্যে তিনকে গুলি চালিয়েছিল ওম। আদালতে উপস্থিত থাকার সময় তাকে দৃশ্যত শান্ত দেখিয়েছিল। পুলিশ জানায় সম্ভবত সে-ই ৯১১য় ফোন করেছিল। খুন কে করেছে তা জানতে চাওয়া হলে সে নিরুত্তাপ গলায় জানিয়েছিল, সেই খুন করতে পারে। তবে পুলিশ এখনও জানতে পারেন কীকারণে সে গুলি চালিয়েছিল। এক প্রতিবেশ জানান এবারই প্রথম নয়। এর আগেও এই অ্যাপার্টমেন্টে পুলিশ ডাকা হয়েছে। এর আগে পারিবারিক হিংসার কারণে পুলিশকে খবর দেওয়া হলে তারা এসেছিল। খুনের ঘটনার তদন্ত চলছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে সিসিটিভি ফুটেজ।