মহানগর ডেস্ক: যোগীরাজ্যে এক স্কুল শিক্ষিকা মুসলিম সহপাঠীকে ক্লাসের অন্যান্য ছাত্রদের চড় মারতে বলার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরই শাসকদল বিজেপির বিরুদ্ধে দেশজুড়ে ঘৃণা ও বৈষম্য ছড়ানোর অভিযোগ তুলে কড়া নিন্দায় সরব হয়ে উঠেছে বিরোধীরা। কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর মতে, একজন শিক্ষক বা শিক্ষিকা এর থেকে খারাপ কাজ কিছু করতে পারেন না। মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্সে(পড়ুন টুইটার) কংগ্রেস সাংসদ লেখেন এই ঘটনা শিশুমনে বৈষম্যের বিষবৃক্ষের বীজ পুঁতে স্কুলের মতো পবিত্র জায়গাকে ঘৃণার বাজারে পরিণত করার মতো ঘটনা।
একজন শিক্ষিকার পক্ষে এর থেকে দেশের ক্ষতি কিছুই হতে পারে না। দেশের প্রতিটি কোণে আগুন ধরাতে কেরোসিন ছড়ানোর মতো ঘটনা যেভাবে বিজেপি ঘটিয়ে চলেছে, এটা সেইরকমই একটা ঘটনা। কংগ্রেসের পাশাপাশি নিন্দায় সরব হয়ে উঠেছে সমাজবাদী পার্টি। শনিবার তারা অভিযোগ করেছে এটা বিজেপি ও আরএসএসের ঘৃণার রাজনীতি যা দেশকে এমন এক খাদের কিনারে নিয়ে এসেছে যেখানে একজন শিক্ষক ছাত্রদের ক্লাসের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একজন সহপাঠীকে চড় মারার কথা বলতে পারেন।
সপার প্রধান ওই শিক্ষিকাকে অবিলম্বে বরখাস্ত করার দাবি তুলেছেন এবং তাঁকে শিক্ষকসমাজে কালো দাগ বলে বর্ণনা করেছেন। মুজফ্ফরনগর থেকে তোলা ওই ভাইরাল ভিডিওয় দেখা গিয়েছে এক শিক্ষিকা অন্য ছাত্রদের ওই ছাত্রটিকে চড় মারতে বলছেন। অখিলেশ লিখেছেন একদিকে ওই শিক্ষিকা অন্য ছাত্রদের ওই সংখ্যালঘু ছাত্রকে মারার কথা বলছেন। অন্যদিকে তাদের হিংস্র হয়ে উঠতে প্ররোচিত করছেন।
বিজেপি সরকারের উচিত জি টুয়েন্টি সম্মেলনে ভিডিওটি দেখিয়ে এই ঘৃণার রাজনীতি কতটা যুক্তিসঙ্গত তা ব্যাখ্যা করা। এই ধরণের শিক্ষিকা শিক্ষকসমাজের কলঙ্ক ছাড়া কিছু নয়। সমালোচনায় পিছিয়ে থাকেনি তৃণমূল কংগ্রেসও। দলের জাতীয় মুখপাত্র সুস্মিতা দেব জানিয়েছেন ঘৃণা বিজেপির ডিএনএ-তে রয়েছে। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। ওই পড়ুয়ার ধর্মীয় পরিচিতির কারণে তাকে নিশানা করা হয়েছে এবং চড়ও মারা হয়েছে।
যখন স্কুলে স্কুলে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের কথা শিক্ষা দেওয়া হয়,তখন বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশে শিশু ও তরুণদের মনে সাম্প্রদায়িকতার বিষ ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সমালোচনায় সরব হয়েছেন রাষ্ট্রীয় লোকদল সাংসদ জয়ন্ত সিং। তিনি এক্সে লেখেন এই ঘটনা অত্যন্ত গভীরে প্রোথিত ধর্মীয় বিভাজন কীভাবে হিংসায় ইন্ধন দিতে পারে,তারই এটি একটি সতর্কবার্তা। তাঁদের দলের বিধায়করা পুলিশকে নিজে থেকে মামলা রুজু করার বিষয়টি নিশ্চিত করবে এবং শিশুদের পড়াশোনা যাতে কোনও বিঘ্নের মুখে না পড়ে, তা দেখবেন। অভিযুক্ত শিক্ষিকার নাম ত্রাপ্তি ত্যাগী বলে জানা গিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে মনসুরপুর থানা এলাকার অধীনে খুব্বাপুরে ঘটেছে। এই ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।