মহানগর ডেস্ক : বিজেপির ২০২৪-এর নির্বাচনী ইস্তেহারে সংঘ পরিবারের দীর্ঘদিনের এজেন্ডা অভিন্ন দেওয়ানি বিধি এবং এক দেশ এক ভোট কার্যকর করার প্রতিশ্রুতি। রবিবার বিজেপির ইস্তেহার প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বললেন, বিজেপি মনে করে দেশজুড়ে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর হওয়া প্রয়োজন।
রামমন্দির নির্মাণ, ৩৭০ ধারা বাতিল এবং অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু, বিজেপি তথা সংঘ পরিবারের দীর্ঘদিনের এই ৩ এজেন্ডার দুটি ইতিমধ্যেই পূরণ হয়েছে। এবার পালা অভিন্ন দেওয়ানি বিধির কার্যকর করা। সংঘ পরিবার মনে করে, এক দেশ, দুই নিশান, দুই বিধান হতে পারে না, বিজেপির এই সংকল্প দীর্ঘদিনের, এবার সেই সঙ্কল্প পূরণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হল ইস্তেহারে। এই সঙ্কল্প পূরণ করতে বিভিন্ন বিজেপি শাসিত রাজ্য ইতিমধ্যেই স্থানীয় স্তরে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর করার প্রক্রিয়া শুরু করছে বিজেপি। এবার লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হলে কেন্দ্রীয় স্তরে এই বিষয়গুলি কার্যকর করার ব্যাপারে ভাবা হবে বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন মোদী।
এক দেশ-এক নির্বাচন– এটাও সংঘ পরিবার এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। এক দেশ-এক নির্বাচনের লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই কেন্দ্র একটি কমিটি গড়েছে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে। বিজেপির লক্ষ্য ২০২৯ সালের মধ্যে গোটা দেশের সব রাজ্যের বিধানসভা এবং লোকসভা ভোট একসঙ্গে করা। ইস্তেহারে সেই প্রতিশ্রুতিও রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এদিন বলেছেন, “এক দেশ এক নির্বাচনের ধারণাকে বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে আমরা সর্বতভাবে চেষ্টা করব।”
বিজেপি ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে আড়াল থেকে ধর্মীয় মেরুকরণকে ব্যবহার করলেও সরাসরি ধর্মীয় মেরুকরণের অঙ্ক এড়াতে চাইছে। জনমানসে মোদীর ভাবমূর্তিতে যাতে আঘাত না লাগে সেই লক্ষ্যে সরাসরি রাম মন্দিরের মতো কাশী-মথুরার মন্দির তৈরির প্রসঙ্গ এবার এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে ইস্তেহারে। বিজেপি মনে করে, রামমন্দির নির্মাণের পর এমনিই সারা দেশ জুড়ে হিন্দুত্বের যে হাওয়া উঠেছে, তা ভোটের পরও জারি থাকবে। তাই ইস্তেহারে সরাসরি অন্য কোনও মন্দির নির্মাণ প্রসঙ্গ রাখা হয়নি। বরং সাংস্কৃতিক দিক থেকে সূক্ষভাবে বিভাজনের ইস্যুগুলি উসকে দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চলবে বলেও জানিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। জাতীয়তাবাদ উসকে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন,”দেশের স্বার্থে বড় এবং কড়া সিদ্ধান্ত নিতে পিছপা হবে না বিজেপি।” পাশাপাশি দুর্নীতি দমনে ভোটে জিতে ক্ষমতায় এলে দুর্নীতিবাজদের জেলে ভরার মৌখিক হুঁশিয়ারিও এবং ইস্তেহারে তার উল্লেখ করেছেন স্বয়ং মোদী। বিরোধীরা প্রশ্ন করছেন, মোদীর সঙ্কল্প অনুযায়ী কেন কালো টাকা নোটবন্দির পরেও দেশে ফিরল না। যে সব ব্যবসাায়ী দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের টাকা চুরি করে ভিন দেশে পালাল তাঁদের কেন ধরে আনছেন না মোদী? কেন ২০১৪ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত মোদীর গ্যারিন্টি অনুযায়ী বছরে ২ কোটি বেকারের চাকরি হয়নি? কেন প্রতিশ্রুতি মতো মোদী সবার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা করে দেননি মোদী?