মহানগর ডেস্ক: দেশের সমস্ত ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রের কাছে আইআইটিতে (IIT) ভর্তির সুযোগ পাওয়া স্বপ্ন ছাড়া কিছু নয়। আর সেই স্বপ্নকে সত্যি করে তুলেছে পীযূষ গয়াল নামে এক ছাত্র । সমস্ত বাধা পেরিয়ে আইআইটি জেইই পরীক্ষায় ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষায় বলার মতো স্থান পেয়েছে সে।
২০১৬ সালে আইআইটি জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় সে ৪৫৩ রাঙ্ক পেয়েছে,যা দেশের যে কোনও প্রথম সারির আইআইটি প্রতিষ্ঠানে সফল প্রার্থীদের তালিকায় তার নাম নিশ্চিত করতে বাধ্য। কিন্তু পীযূষের এই সাফল্যের কাহিনি এত ঘটা করে বলার কারণ কি। কারণ হল তার বাবা একজন খুনের আসামি।
রাজস্থানের কোটা জেলে তিনি বন্দি। পীযূষের পরিবার আর্থিক অবস্থা একেবারেই অসচ্ছল। পরিবারের এমন পরিস্থিতিতে যখন কেউ আইআইটি প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসার কথা দুঃস্বপ্নে ভাবতেও পারে না, তখন সেই প্রতিবন্ধকতার মধ্যেই প্রস্তুতি নিয়েছিল পীযূষ। যত বাধাই আসুক, জীবনের কঠিনতম পরীক্ষায় তাকে জিততেই হবে। এমন ধনুরভাঙা পণ নিয়ে পীযূষ পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছিল।
রাজস্থানের কোটা হচ্ছে ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেডিকেলের ছাত্রদের জন্য একটি আদর্শ জায়গা। কিন্তু এখানে নামী কোচিং সেন্টারে পড়তে গেলে বিপুল টাকা দিতে হয়। কিন্তু পীযূষের পক্ষে ওইসব নামী দামি কোচিং সেন্টারে ভর্তি হওয়া ও হোস্টেলের খরচ চালানোর সামর্থ ছিল না তার। তাই জেলের একটি সেলে বসেই পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয় সে। কারণ এছাড়া তার কাছে আর কোনও রাস্তাও খোলা ছিল না।
পীযূষের বাবা ফুলচাঁদের আর্থিক সামর্থ ছিল সামান্য। তাই পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে দণ্ডাজ্ঞা প্রাপ্ত বাবার সঙ্গে সেলেই বসে প্রস্তুতি নেয় সে। সেসময় মুক্ত জেলে থাকতেন ফুলচাঁদ। যার অর্থ তিনি বাইরে কাজ করতে পারবেন এবং রাতেই তাঁকে জেলে ফিরে আসতে হবে। দু বছর জেলের সেলে থেকে প্রস্তুতির পাশাপাশি ছোট একটি দোকানে কাজ করে বারো হাজার টাকা জমিয়েছিল পীযূষ। জেলের রক্ষীরা তার অধ্যাবসায় এবং প্রতিকূল পরিবেশে লড়াই দেখে তাকে উৎসাহ যুগিয়েছিল। আঠেরো বছর বয়েসে আইআইটি জয়েন্ট এনট্রান্স পরীক্ষায় পাস করে তার আইআইটি নিয়ে স্বপ্ন সফল করতে সক্ষম হয় পীযূষ।