মহানগর ডেস্ক বছরের ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটিয়ে স্বাধীন হয়েছিল ভারত। স্বাধীনতার আগে ও পরে দেশ জুড়ে ঘটে গিয়েছিল অনেক ঘটনা। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে মোট তিনবার নিষিদ্ধ করা হয়েছিল আরএসএসকে (Three Times Banned RSS) । প্রথমবার ১৯৪৮ সালে,মহাত্মা গান্ধী হত্যার ঘটনার পর (Assassination Of Mahatma Gandhi)। দ্বিতীয়বার ১৯৭৫ সালে দেশে জরুরি অবস্থা জারির সময় (Emergency)।
তৃতীয়বার ১৯৯২ সালে অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর (Demolition Of Babri Masjid)। কেন তিন তিনবার নিষিদ্ধ হয়েছিল আরএসএস? ১৯২৫ সালে কংগ্রেসের সঙ্গে মতান্তরের পর ড. কেশব বলিরাম হেডগেওয়ার আরএসএস প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। দাবি করেছিলেন, এটি একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন। কিন্তু তাঁর হাতে গড়া ওই সংগঠন নানা সময়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে। আর সেই একদা ঘোষিত সাংস্কৃতিক সংগঠন দেশের শাসক বিজেপির মেন্টর বলে ইতিমধ্যেই প্রমাণিত।
১৯৪৮ সালের চার অক্টোবর তদানীন্তন সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল দেশে হিংসা,ঘৃণা বিদ্বেষ ছড়ানোর এবং দেশের স্বাধীনতাকে ধংস করার দায়ে আরএসএসকে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে।
দেশকে তাদের কাজের মাধ্যমে কালিমালিপ্ত করার অভিযোগ করা হয়েছিল ওই বিজ্ঞপ্তিতে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছিল সঙ্ঘের সদস্যরা অবাঞ্ছিত,এমনকী বিপজ্জনক কাজ করে চলেছেন। দেশের বিভিন্ন জায়গায় আরএসএসের সদস্যরা লুঠ, ডাকাতি,খুন এবং বেআইনি অস্ত্র সংগ্রহ করছেন বলে জানা গিয়েছিল।
ড.শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে লেখা চিঠিতে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল লিখেছিলেন হিন্দু মহাসভার চরমপন্থী গোষ্ঠী এই জঘন্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। আরএসএসের এই ধরণের কার্যকলাপ দেশের সরকার ও দেশকে অস্তিত্বের সঙ্কটের মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
এই ঘটনার পর এক অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি হয়। আঠেরো মাস পর অবশ্য সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। ১৯৭৫ সালে প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর জারি করা জরুরি অবস্থার সময় ফের আরএসএসকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। এরপর ১৯৯২ সালে অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর দেশজুড়ে অস্থিরতার সময় তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী পিভি নরসিং রাও ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসবি চবন আরএসএসকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন।
একইসঙ্গে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বজরং দল এবং জামাতে ইসলাম হিন্দ এবং সিমিকে। তবে বল্লভভাইয়ের মতো রাও-ও কেন্দ্রীয় ট্রাইবুনালে তাদের নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে সেরকম যুক্তিগ্রাহ্য কারণ দেখাতে পারেননি। শেষমেশ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।