Home Bengal সন্দেশখালির ভাইরাল ভিডিওকাণ্ডে অভিষেকের নিশানায় বিজেপি, সংবাদ মাধ্যম

সন্দেশখালির ভাইরাল ভিডিওকাণ্ডে অভিষেকের নিশানায় বিজেপি, সংবাদ মাধ্যম

by Mahanagar Desk
10 views

মহানগর ডেস্ক : সন্দেশখালিকাণ্ডের ভাইরাল ভিডিও নিয়ে বিজেপিকে তুলোধোনা করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করে অভিষেক বলেন, “এতদিন ভারতে যে রাজনীতি হচ্ছে তার সমস্ত নির্লজ্জতাকে ভেঙে দিয়েছে বিজেপি। গঙ্গাধর কয়াল, বিজেপির ২ নম্বর সন্দেশখালি মণ্ডল সভাপতি, ১ নম্বর মণ্ডল সভাপতি, ভিকটিম জবারানী সিং এই ভাইরাল ভিডিওতে গঙ্গাধর কয়াল বলেছেন, এই তাবর তাবর মাল যতদিন না গ্রেফতার হবে ততদিন তোমরা টিকতে পারবেন না। তার পরেই সন্দেশখালিতে ইডি যায়, জমি নিয়ে, অন্য অভিযোগ নিয়ে দেশজুড়ে খবর হল। সংবাদ মাধ্যম যাচাই না করে তৃণমূলকে ছোট করতে গিয়ে বাংলাকে ছোট করা হল। বাংলাকে ছোট করার জন্য ঘৃণ্য চক্রান্ত করল এই বিজেপি।”

এদিকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “এসব পুরোটাই তৃণমূলের, আইপ্যাকের এবং তমাল বলে একজনের সাজান ঘটনা। গঙ্গাধর কয়াল কলকাতায় পৌঁছেছেন, সিবিআই-র কাছে যাচ্ছেন তদন্তের দাবিতে। সবটাই ভাইপোর সাজান ঘটনা।”

শমীক ভট্টাচার্যও এই ভাইরাল ভিডিও তৃণমূলের সাজান ঘটনা বলে দাবি করেন। তিনি বলেন,”পরাজয় নিশ্চিত জেনে এই মিথ্যা ঘটনা সাজাচ্ছে তৃণমূল।”

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে সেই সব সংবাদ মাধ্যমের নাম ধরে অভিযোগ করেন যারা সন্দেশখালির খবর করে বাংলার সম্মান ম্লান করেছেন বলে তিনি মনে করেন। বাংলা সংবাদ মাধ্যমও তাতে আছে বলেও অভিযোগ করেন অভিষেক। এমন কি সংবাদ মাধ্যমের সাংবাদিকের নামও উল্লেখ করেন অভিষেক। অভিষেক বলোন, ভাইরাল ভিডিওয় সন্দেশখালির বিজেপি ব্লক সভাপতি বলেন, অস্ত্রগুলো আমরা রেখেছি। অভিষেক এদিন আরও বলেন, “সংবাদ মাধ্যমকে বলছি যাচাই করে খবর করুন। ভুল হলে হাতজোড় করে ক্ষমা চান। তারপর অভিষেক বলেন, শুভেন্দু অধিকারীকে বলতে শোনা যাচ্ছে ৩৫৫ জারি করার জন্য যা দরকার সেই পরিবেশ তৈরি করতে হবে।”

অভিষেক বলেন, “বিজেপিকে ১০ বছর দেশ চালাবার জন্য মানুষ যেমন রায় দিয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও সেই মানুষই রাজ্য চালাবার অধিকার দিয়েছে। গঙ্গাধর কয়াল বলছেন, রেখা পাত্র, যিনি বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী, তিনি ২ হাজার টাকা নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন। গঙ্গাধর কয়াল বলেছেন বুথ পিছু ৫ হাজার টাকা মদের খরচ দিতে হবে।”

অভিষেক এরপর সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “এই খবর করলেন অথচ বিজেপির মন্ডল সভাপতি বললেন, ৭/৮ মাস আগেকার তারিখের ধর্ষণের অভিযোগ করিয়েছি, যাতে ডাক্তারি পরীক্ষায় ধরা না পড়ে। এই ধর্ষণের অভিযোগ মিথ্যা সেটা এখন অভিযোগকারীরাই বলছেন। আজ তৃণমূলকে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছোট করতে গিয়ে বাংলাকে ছোট করেছে বিজেপি, সংবাদ মাধ্যম এবং বিচার ব্যবস্থার একটা অংশ।”

এরপর অভিষেক বলেন, “হঠাৎ ২০২১ সালের আগে কয়লা পাচার নিয়ে অভিযোগ উঠল। কারা কয়লা খনি পাহারা দেয়? সিআইএসএফ, গরু পাচারের অভিযোগ তুলছে, সীমান্ত পাহারা কারা দেয়? বিএসএফ, কার দফতর? অমিত শাহর, অমিত শাহই বলছেন বাংলায় অনুপ্রেবেশকারীরা ধুকেছে। তাহলে এই দায় অমিত শাহ কেন নেবেন না? কেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর এই দায় চাপানো হবে?”

বিজেপি নেতাদের লক্ষ্য করে অভিষেক বলেন, “বিজেপির হাতজোড় করে ক্ষমা চাইতে হবে। বাংলার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তোলার দায় বিজেপির এবং বিচার ব্যবস্থার একাংশের। এসব বলার জন্য যদি আমার আদালত অবমাননার দায়ে জেল হয়, শাস্তি হয়, আমি তা বাংলার স্বার্থে মাথা পেতে নেব। যে মহিলার নাম দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ হয়েছে এই ভাইরাল ভিডিওতে তিনি বলেছেন তিনি জানতেন না অভিযোগে কি লেখা ছিল? মহিলাদের সম্ভ্রম, পুলওয়ামার সেনাদের প্রাণের বিনিময়ে যাঁরা রাজনীতি করে, ভোট করে সেই বিজোপিকে একটিও ভোট দেবেন না।”

রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগের প্রসঙ্গ তুলে অভিষেক বলেন, “নিজের মেয়ের বয়সী একটি চুক্তি কর্মীর শ্লীলতাহানি করে পরের দিন পালিয়ে গেছেন আপনি। ওনার সাহস থাকলে উনি তদন্তের মুখেমুখি হয়ে সহযোগিতা করুন।”

সাংবাদিকদের প্রতি অভিষেক বলেন, “আপনারাও বাংলায় জন্মেছেন, বেড়ে উঠেছেন, বাংলার বিরুদ্ধে কিছু শুনলেই তা যাচাই না করে মানবেন না। আমাদের বিরুদ্ধাচারণ করুন, বাংলার বিরুদ্ধে এসব করবেন না।”

বাংলা থেকে জিএসটি হিসাবে ৪ লক্ষ ৮৫ কোটি টাকা নিয়ে গেছে কেন্দ্র, বদলে ১০০ দিনের কাজের টাকা, আবাসের টাকা, রাস্তার টাকা দেননি। চাকরি দেননি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উন্নয়ন করতে গেলে আটকেছেন। এতো নিচে একটা দল নামতে পারে ভাবতে পারিনা। সত্যপাল মালিক যখন বলেছিলেন পুলওয়ামায় যে সেনা জওয়ানদের প্রাণহানির ঘটনা ঘটল তা কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা জানত, তখনই বুঝেছিলাম বিজেপি দলটি কি!”

এদিকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যখন সাংবাদিক সম্মেলন করে বিজেপিকে অভিযুক্ত করছেন তখন বিজেপি মুখপাত্র শনীক ভট্টাচার্য এই অভিযোগকে সাজান নাটক বলে সমালোচনা করে সাংবাদিক সম্মেলন করেন। তবে শমীক কোনওভাবেই গঙ্গাধর কয়াল কি বলেছে সেই প্রসঙ্গে না গিয়ে বলেন, গঙ্গাধর এই সন্দেশখালি আন্দেলনের ঘটনার পিছনে নেই, সে বিজেপি করে। যারা সন্দেশখালিতে আন্দোলন করেছেন তাদের মধ্যে তৃণমূলের মহিলা,পুরুষ কর্মীও আছেন, ছিলেন। রাজ্য সরকার তো জমি ফেরতের কথা বলেছিলেন, কজনের জমি ফেরত দিয়েছে?” তবে ধর্ষণের বিষয়ে কিছু তিনি বলেননি।
এদিকে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “এটা ভাইপোর সাজান ঘটনা। এই ভাইরাল ভিডিও বানান হয়েছে। গঙ্গাধর কয়াল কলকাতায় পৌঁছেছেন, সিবিআই-র কাছে যাচ্ছেন, ভাইপোকে এবার বুঝে নেওয়া হবে। আমার খুব ভালো লাগছে, এই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পায়ে বেড়ি পরাতে পেরেছেন। তাই পিসি,ভাইপো তাধিন তাধিন করে নাচছে। আমি ওই কয়লা ভাইপোকে বলে বলে জেলে ঢোকাব। হারবে যেনে এখন এসব করছে।”এদিকে যাঁর কন্ঠস্বর ভাইরাল ভিডিওতে শোনা যাচ্ছে সেই বিজেপি নেতা গঙ্গাধর কয়াল বলেছেন, ” হাই টেকনোলজির মাধ্যমে আমার গলার স্বর বিকৃত করে এই কাজ করেছে আইপ্যাক এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আমি সিবিআই-র কাছে এর তদন্তের দাবি জানাচ্ছি, আইপ্যাক এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাস্তি যাতে হয় সেই ব্যবস্থা করছি।”

You may also like

Mahanagar bengali news

Copyright (C) Mahanagar24X7 2024 All Rights Reserved