মহানগর ডেস্ক : সন্দেশখালিতে বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্রের সমর্থনে র্যালি ও সভায় উপস্থিত হয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ইডির হাতে ধৃত তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের আকুঞ্জিপাড়ার বাড়িটি নিলামে কেনার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। শুভেন্দু বলেন, ‘‘ইডি, সিবিআই নিলাম করলে শেখ শাহজাহানের বাড়ি আমি কিনব। শাহজাহান আর কোনও দিনই জেল থেকে বেরোতে পারবে না। ওঁর বিরুদ্ধে একাধিক কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত শুরু করেছে। ওঁর ভাই এবং একাধিক তৃণমূল নেতার অবস্থা শাহজাহানের মতোই হবে।’’
এ প্রসঙ্গে সন্দেশখালির তৃণমূল বিধায়ক সুকুমার মাহাতো কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘শুভেন্দুর টাকা বেশি হলে কিনতে পারেন, এ নিয়ে কারও তো কিছু বলার থাকতে পারে না!’’ উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির চেয়ারম্যান নির্মল ঘোষের শুভেন্দুর এই কথার উত্তরে বলেন, “শুভেন্দুর দাম্ভিকতা বেড়ে গিয়েছে।’’
এ দিন জয়গাঁয় প্রচার সভায় কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ সন্দেশখালি প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করে করে বলেন, ‘‘আপনার সরকার সব জানত। কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। তবে এখন সিবিআই তদন্ত করছে। সবাই ন্যায় পাবে।’’
এদিকে বিজেপি সন্দেশখালি নিয়ে রাজ্যের শাসক বিরোধী প্রচারে সুর চড়ালেও বামেরা বিজেপির এই তৃণমূল বিরোধীতারে “ছায়াযুদ্ধ” বলে অভিহিত করছেন। তাঁদের কথায় ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহানের বাড়িতে ইডি তল্লাশি চালাতে গিয়ে আক্রান্ত হওয়ার ১৯ দিন পর ইডি কেন দ্বিতীয় অভিযানে গেল? এই ১৯দিন কি করছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা? আর এখন রাজনাথ সিং বলছেন সন্দেশখালির ঘটনা রাজ্য সরকার জানত, যদি সেটাই তাঁর মনে হয় তাহলে এতোদিন চুপ থাকল কেন ইডি? এখানেই বোঝা যাচ্ছে তৃণমূল-বিজেপি উভয়পক্ষই উভয়পক্ষকে আড়াল করার জন্য অতিরিক্ত সময় ব্যয় করছে। এর পুরোটাই বিজেপি,তৃণমূল পরস্পরকে রাজনৈতিকভাবে জায়গা দেওয়ার জন্য কৌশল করে ভোটের আগে প্রচারে ভেসে থাকতে চাইছে। শুভেদু বলছেন, “শেখ শাহজাহানের বাড়ি ইডি নিলাম করলে আমি কিনব”, আসলে এসব বলে চালাকি করে বিষয়টিকে গুরুত্বহীন করতে চাইছে বিজেপি। তৃণমূলনেত্রী তো আগেই বলে দিয়েছেন, সন্দেশখালি সিঙ্গুর বা নন্দীগ্রাম নয়, কয়েজনের জমি নিয়ে সমস্যা হয়েছিল, সব ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বলেছেন, “শাহজহানকে টার্গেট করে ইডি গেছে। কেন আগে পুলিশকে জানায়নি”, মুখ্যমন্ত্রী তারমানে একজন অপরাধীকে আড়াল করার চেষ্টা ঘটনার শুরু থেকেই করছেন। এই ভোটে বিজেপি,তৃণমূল উভয় পক্ষই নিজেদের ত্রুটি ঢাকার জন্য, মানুষের দৈনন্দিন চাহিদা মোচন করতে না পারার অযোগ্যতা ঢাকার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলিকে লঘু করে তুলছে তৃণমূল ও বিজেপি।