মহানগর ডেস্ক : রেড রোডে পবিত্র ইদের নমাজ অনুষ্ঠানের মঞ্চে বক্তব্য রাখতে উঠে বৃহস্পতিবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা সিএএ, এনআরসি বা অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর করতে দেবেন না বলে সরাসরি কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিলেন। প্রতিবারই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেড রোডে নমাজের অনুষ্ঠানে যান, এবারও সেই অনুষ্ঠানে তিনি গিয়েছিলেন। সেই অনুষ্ঠান থেকে সিএএ এবং এনআরসি বিরোধী বার্তা দিয়ে মমতা এদিন বলেন, “আমরা ঘৃণা করতে জানি না। আমরা ঘৃণাভাষণ চাই না। আমরা ভাগ বাঁটোয়ারা চাই না। জাতীয় নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসিচাই না। আমরা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন চাই না। আমরা চাই যে সবাই যেন একসঙ্গে থাকেন। আমরা জুলুম সহ্য করব না। আমরা এককাট্টা থাকলে কেউ কিছু করতে পারবেন না। যতক্ষণ আমরা বেঁচে আছি, ততক্ষণ মৃত্যুতে কোনও ভয় নেই।আমি মৃত্যুকে ভয় পাই না, মৃত্যু আমায় ভয় পায়।”
রাজ্যে আগামী ১৯ এপ্রিল প্রথম দফার নির্বাচন। তারপর আরও ছ’টি দফায় ভোটগ্রহণ হবে পশ্চিমবঙ্গে। ভোটের বৈতরণী পার করতে তৃণমূল নিজেদের সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক ধরে রাখতে মরিয়া, তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইদের নমাজের মঞ্চকে রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করলেন বলেই রাজনৈতিক অভিজ্ঞদের মত।
রাজনীতির বাইরে মমতা এদিন রেড রোড থেকে বলেন, এটা খুশির ইদ। এটা শত্রুদের বিরুদ্ধে ইদ। এটা সাহসের ইদ। এটা জীবনে আপনাদের এগিয়ে যাওয়ার ইদ। এটা আমাদের সাহস জোগানোর ইদ। এক মাস ধরে রোজা পালনের পরে এরকমভাবে ইদ উদযাপন, তা বড় দৃষ্টান্ত। আমরা একদিন উপবাস করলে তিনদিন খেতে হয়। আর আপনারা এক মাস ধরে রোজা করেন।
মমতা এদিন বলেন, আমি ভেবেছিলাম যে গতকাল ইদ পড়বে। আজ উত্তরবঙ্গে অনেক কর্মসূচি আছে। কিন্তু রেড রোডের নমাজের অনুষ্ঠানে না এসে আমি থাকতে পারি না। এটা আল্লার আশীর্বাদ। সকলেই আল্লার দোয়া চান। সকলের আল্লার দোয়া পাওয়ার সৌভাগ্য হয় না। যাঁরা সৎ মানুষ, তাঁরা আল্লাহের দোয়া পান। যাঁরা সৎ মানুষ নন, তাঁরা আল্লাহের দোয়া পান না।
এর পরই মমতা রাজনৈতিক প্রসঙ্গে প্রবেশ করে বলেন, দেশের জন্য রক্ত দিতে আমরা তৈরি। কিন্তু আমরা অত্যাচার সইতে রাজি নই। দেশের মানুষদের অত্যাচার করা হবে, সেটা আমরা মানব না। শুধু জুলুম আর জুমলাবাজি করে। আমি জানি যে অনেকের মনে প্রশ্ন আছে যে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন সিএএ কার্যকর হবে কিনা, জাতীয় নাগরিকপঞ্জি হবে কিনা। আবার অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে আসছে। আমরা মানব না। আমরা গায়ের জোরে মানব না। আবার বলছে যে আপনি নাগরিক কীভাবে হলেন? আগে ওদের বলুন যে আপনারা নাগরিক কিনা আগে বলুন।