মহানগর ডেস্ক: রীতিমতো চমকে দেওয়া ফরমান। শ্মশানে দাহ করা হবে একমাত্র হিন্দু শবদেহ,যেন সেই আঠরো শতকের নিদান। প্রতিবেশি রাজ্য ওড়িশায় এহেন ফরমান জারি করে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে সেখানকার একটি পুরসভা। শবদাহ পোড়ানোর ক্ষেত্রে জাতপাতের বিষয়টি সামনে আসার পর শুরু হয়েছে নিন্দার ঝড়।
সেরাজ্যে রাজ্য প্রাচীনতম একশো পঞ্চান্ন বছরের পুরনো কেন্দ্রাপাড়া পুরসভা হাজারি বাগিচা এলাকায় শ্মশানের প্রবেশপথে ব্রাহ্মণদের শ্মশানের সাইন বোর্ড দিয়েছে। অর্থাৎ একমাত্র হিন্দু ব্রাক্ষ্মণদের শবদাহ করা ছাড়া আর অন্য কোনও জাতের মানুষদের শবদাহ করার ওপর স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যদিও দীর্ঘদিন ধরে এই শ্মশানে ব্রাহ্মণদের দেহও পোড়ানো হতো, অন্যজাতের দেহের সৎকার হতো কাছাকাছি অন্য শ্মশানে। এটাই চলে আসছিল।
সম্প্রতি নতুন করে সংস্কারের সময় একমাত্র. ব্রাহ্মণদের শবদাহ করার জন্য শ্মশানটি নির্দিষ্ট বলে সাইনবোর্ড লাগানো হয়। এরপরই শুরু হয় সমালোচনা। জাতপাতের বিষয়টি প্রকট হয়ে ওঠে। কেন্দ্রাপাড়া পুরসভার এগজিকিউটিভ অফিসার প্রফুল্ল চন্দ্র বিশওয়াল জানান বিষয়টি তাঁদের নজরে এসেছে। জাতপাতের বিষয়টি দূর করতে তাঁরা এ নিয়ে পদক্ষেপ নিচ্ছেন। এই ঘটনায় দলিত অধিকার কর্মী ও রাজনৈতিক দলের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ওড়িশা দলিত সমাজের জেলা ইউনিট সভাপতি নরেন্দ্র জেনা জানান বিষয়টি জানতে পেরে তিনি মর্মাহত।
একটি পুরসভা দীর্ঘদিন একটি শ্মশান একমাত্র ব্রাহ্মণদের শবদাহের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে। এবং সেটি দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছে। এটি করে একটি সরকারি বডি জাতপাতের বৈষম্যকে উৎসাহ দিয়ে জাতিগত বৈষম্যকে মদত দিয়ে চলে আসছে। এই কু প্রথার শেষ হওয়া উচিত। সিপিএমের জেলা ইউনিট সম্পাদক গয়াধর ঢাল জানান এটি একেবারে বেআইনি একটি ব্যাপার যে একটি পুরসভা শুধু ব্রাহ্মণদের শবদেহ দাহ করার জন্য একটি পুরসভাকে ব্যবহার করে আসছে। তাঁর কথায় শুধু ব্রাহ্মণ কেন, অন্য জাতের মানুষদের শবদাহ করার অধিকার সেখানে থাকা উচিত। শুধু ব্রাহ্মণদের জন্য শ্মশান সমস্ত ধর্মের মানুষদের জন্য সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন করছে। এতে সামাজিক বৈষম্য বৃদ্ধি পাচ্ছেন।