মহানগর ডেস্ক : তৃণমূল থেকে কুণাল ঘোষকে অপসারিত করা হল। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরানো হল কুণাল ঘোষকে। বুধবার কুণালকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দিল জোড়াফুল শিবির। এদিনই সকালে উত্তর কলকাতায় এক মঞ্চে দেখা যায় কুণাল এবং তৃণমূল-ত্যাগী তাপস রায়কে। সেখানে তাপস রায়ের ভূয়সী প্রশংসাও করেন কুণাল। তিনি বলেন, ছাপ্পাভোট নয়, মানুষকে সিদ্ধান্ত নিতে দিতে হবে। তাপসের সঙ্গে উত্তর কলকাতায় তৃণমূলের প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংঘাত কারও অজানা নয়। সেই কারণেই তাপসের তৃণমূল ত্যাগ আর তাপসের তৃণমূল ত্যাগের পিছনে কাঠবেড়ালের ভূমিকায় ছিলেন কুণাল। বুধবার সেই তাপসেরই ভূয়সী প্রশংসা করলেও, সুদীপের প্রচারপে অংশ নেননি কুণাল। তার পরই দুপুরে কুণালকে পদ থেকে সরানো হল দলগত ভাবে।
কুণালকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে বিবৃতি জারি করেছে তৃণমূল। তৃণমূলের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, “এর আগে দলের মুখপাত্রের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় কুণালকে। এবার দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরানো হল। সংবাদমাধ্যমের কাছে অনুরোধ, ওঁর মতামতকে দলের সঙ্গে জুড়বেন না, তাতে আইনি পদক্ষেপ করা হবে। কুণাল ঘোষ যা বলছেন তা তাঁর ব্যক্তিগত মত, দলের নয়।”
তাপসের সঙ্গে একই মঞ্চে উপস্থিত থাকা বা তাপসের প্রশংসা করাতেই কুণালকে সরানো হয়েছে কি না, তা যদিও পরিষ্কার করে জানায়নি তৃণমূল। তবে দুইয়ে দুইয়ে চার করে নিচ্ছেন তৃণমূলের অনেকেই। কারণ বুধবার সকালে কুণাল-তাপস এক মঞ্চে ছিলেন আর দুপুরেই কুণালের সাধারণ সম্পাদক পদ খোয়া গেল, তাই কেন কুণাল পদ খোয়ালেন সেটা খুব স্পষ্ট।
কুণাল এদিন শুধুমাত্র তাপসের প্রশংসা করেই থেমে থাকেননি, কুণাল বলেন, তাপসকে দলে ধরে রাখতে তৃণমূল সর্বতো ভাবে চেষ্টা করেছিল। তাপসকে দক্ষ নেতা, প্রশাসক হিসেবেও উল্লেখ করেন কুণাল। কুণাল জানান, তাপসের দরজা মানুষের জন্য সারা দিন,সারা রাত খোলা থাকে। রাজনীতিবিদ তাপসের তুলনা হয় না, সবসময় তাঁকে পাওয়া যায়। কুণাল পরিষ্কার জানান, দলের প্রার্থী সুদীপ হলেও, ব্যক্তিগত ভাবে তাপসকে তিনি পিছনের সারিতে রাখতে পারবেন না। কুণালের এই মন্তব্যে শোরগোল পড়ে যায়। আর তার পরই দুপুরে পদ থেকে সরানো হল কুণালকে। কিন্তু প্রশ্ন একটাই মুখপাত্র পদ থেকে স্বেছায় সরে যাওয়ার পরও কুণাল দলের মুখপাত্রের কাজ করেছেন, টিভি, সংবাদপত্রে দলের হয়ে কথা বলেছেন। এমনকি কুণাল নিজেই এর আগে ওই একই সময় দলের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে তিনি সরে যান এবার তাঁকে দল সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে সরিয়ে দিল, এখন দেখার কুণাল ঘোষ কি করেন আর দলই বা কি করে, কারণ দলটির নাম তৃণমূল এবং বহিস্কৃত সাধারণ সম্পাদকের নাম কুণাল ঘোষ! তবে কুণাল ঘোষ এই বিষয়ে এখনও মুখ খোলেননি।
তবে তাপস রায় বলেন, “কুণালকে দল কি করেছে সেটা দলের বিষয় তবে দলে কি সৌজন্য বলে কিছু নেই। আজ সকালো অগ্নিবীণা ক্লাবে যে অনুষ্ঠানে আমি যাই সেখানে কুণাল একা নয় অনেকেই ছিল। আসলে তৃণমূলে সত্যি কথা বলা যাবে না, গণতন্ত্র নেই। ওখানে দুস্কৃতীদের সাহায্য নিয়ে কাউসিলর হয়েছে বলে কুণাল বলেছে। আসলে তৃণমূল সংকীর্ণতাকে গুরুত্ব দিচ্ছে। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় হয়তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে মেসেজ করে এসব করেছে। ৃৃতা এক সময় সুদীপকেও তাড়িয়ে দিয়েছিল। তবে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় কাঁদলেই তৃণমূল ব্যবস্থা নেয়।”