মহানগর ডেস্ক: ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের সাতগাছিয়া বিধানসভায় জনসভা করতে এসে রবিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, “আমি আজ ভোট চাইতে আসিনি। এসেছি আপনাদের হাতে ডায়মন্ড হারবারের দায়িত্ব তুলে দিতে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দক্ষিণ কলকাতায় কখনও ভোট চাইতে আসতেন না, কারণ সারাক্ষণ তিনি সেই কেন্দ্রের কথাই ভাবতেন। আমিও তাই বলছি, আমি ডায়মন্ড হারবারের বাবা, মা, ভাই,বোনেদের কাছে অনুমতি নিতে এসেছি, বলতে এসেছি ডায়মন্ড হারবারের দায়িত্ব আপনারা হাতে তুলে নিন। এখানে মানুষের জন্য আমি কিছু করতে বাকি রাখিনি। এখানে ১ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকার কাজ গত ১০ বছরে প্রতিদিন হয়েছে। সিপিএম, বিজেপি যখন ঘুমিয়ে ছিল তখনও ডায়মন্ড হারবারে ১৮ শো ৫৫ কেটি টাকার কাজ হয়েছে। যখন ডায়মন্ড হারবার ঘুমিয়েছে, তখনও প্রতি ঘন্টায় ১ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকার কাজ হয়েছে, এটাই ডায়মন্ড হারবার মডেল।” অভিষেক যে ভাবে ঐকিক নিয়মের অংকের মতো করে তাঁর ডায়মন্ড হারবার বিধানসভার কাজের হিসাব দিলেন এবং বোঝালেন এটাই ডায়মন্ড হারবার মডেল, তখন তাঁর এই কথার মধ্যেই অনুক্ত থেকে গেল যে কথাটি তা হচ্ছে তিনি বললেন না তৃণমূলের তো তিনি সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক, রাজ্যের ২১ টি লোকসভাকে তাঁর দলের সাংসদরা কি ডায়মন্ড হারবার মডেলের অনুকরণে উন্নয়নের শীর্ষে পৌঁছে দিতে পেরেছেন? না পারলে কেন পারেননি? সেই দায় কি অভিষেক দলের শীর্ষ নেতা হিসাবে নেবেন?
আভিষেক এদিন বলেন, “আমরা কথা দিয়ে কথা রাখার লোক। আজকে লক্ষ্মীর ভান্ডার থেকে শুরু করে কোভিডের সময় কাজ করে আমরা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছি। কোভিডের সময় কল্পতরু কমিউনিটি কিচেন করে আমাদের ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক ১৪ লক্ষ মানুষের কাছে খাবার পৌঁছে দিয়েছে। বার্ধক্য ভাতা সরকার যদি বাও দেও আমরা এই কেন্দ্রে প্রবীণদের কাছে ১ হাজার টাকা করে পৌঁছে দেবো বলেছিলাম, এখন ৭৬ হাজার জন সসেই টাকা পাচ্ছেন। আমি কথা দিয়ে কথা রাখি। আমি যখন কথা দিই কোনও সরকারের উপর ভর করে, কোনও দফতরের উপর ভর করে কথা দিই না। এটা আমার গ্যারিন্টি। আমি গত নভেম্বরে কথা দিয়ে বলেছিলাম, জানুয়ারিতে প্রবীণদের জন্য শ্রদ্ধার্ঘ করব, আমি ১ মাসের মধ্যে চ্যালেঞ্জ হিসাবে এটাকে গ্রহণ করেছিলাম। প্রায় ১৬ হাজার ভলিন্টিয়ার একেকজন চারজন, পাঁচজন, ছজন প্রবীণকে এই টাকা দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন।”
অভিষেক এদিন বলেন, “আমরা যেমন লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা দিতে পারি তেমনই ৫০ লক্ষ মানুষের বাড়ির টাকাও দিতে পারি। আমরা এটা করে দেখিয়েছি। আর আজকে যাঁরা ভোট চাইতে এসেছে তাঁদের ভাষা শুনেছেন? বলছে, ডায়মন্ড হারবার থেকে অভিষেককে খেদাও। কি করে খেদাবে? আমি মানুষের হৃদয়ে রয়েছি, মনে রয়েছি। তেমাদের মতো দাঙ্গা করে মানুষকে বিচলিত করিনি। আগামী ১০ বছর যদু মানুষ সুযোগ দেয় তাহলে এই কেন্দ্রে যে কাজ হবে তাতেনডায়মন্ড হারবার মডেল সারা দেশ দেখতে আসবে।”
অভিষেক এদিন অভিযোগ করে বলেন, “বিজেপি তাদের সংকল্প পত্রে অন্ন,বস্ত্র,বাসস্থানের কথা লেখেনি, লিখেছে সারা দেশে একটাই ভোট হবে। তার মানে বিজেপি সংবিধান বদলাতে চাইছে।”
অভিষেক এদিন সাতগাছিয়ার জনসভায় ভোট চাইতে আসিনি বলে বক্তব্য শুরু করেও শেষে সেই ভোটই চাইলেন, বললেন, “আপনাদের ১০০ দিনের কাজের টাকা বিজেপি আটকেছে, আবাসের টাকা আটকেছে, আগামী ১ জুন ডায়মন্ড হারবারে ভোট। বলুন মা, বোনেরা, দাদা, ভাইয়েরা এর জবাব দেবেন কি দেবেন না?” অভিষেকের প্রশ্নে জনসভায় উপস্থিত অনেকেই সম্মতিসূচক হ্যাঁ বলে হাত তোলেন। অভিষেক বলেন, “আগের ভোটও কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে হয়েছে, এবারও দুজন, চারজন, যতজন খুশি বাহিনী প্রতি বুথে বসান। এখানকার তৃণমূল কর্মী ও সাধারণ মানুষ বুঝে নেবে। ৪ তারিখ যখন ইভিএম খুলবে তখন সিপিএম এবং বিজেপি দেখবে ডায়মন্ড হারবারের ক্ষমতা কি।”