মহানগর ডেস্ক: জল-যুদ্ধ। মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগেই শুরু হয়েছে তেলঙ্গনার বিধানসভা ভোট। সেই ফাঁকেই নাগার্জুন বাঁধের দখল নিয়ে জল ছাড়তে শুরু করায় তেলেঙ্গনার সঙ্গে তুলকালাম শুরু হল অন্ধ্রের। বৃহস্পতিবার দুপুর দুটো নাগাদ তেলঙ্গনার প্রশাসনিক অফিসাররা ভোট নিয়ে যখন তুমুল ব্যস্ত,ঠিক তখনই সাতশোর কাছাকাছি অন্ধ্রপ্রদেশের পুলিশ বাঁধে এসে দখল নেয়। ডান খালের মুখ খুলে দিয়ে কৃষ্ণা নদী থেকে প্রতি ঘণ্টায় পাঁচশো কিউসেক জল ছাড়তে শুরু করে। বৃহস্পতিবার সকালে এক্সে অন্ধ্রের সেচমন্ত্রী অম্বাতি রামবাবু লেখেন তাঁরা পানীয় জলের জন্য নাগার্জুনসাগর থেকে জল ছাড়ছেন।
মন্ত্রী আরও জানান তাঁরা দু রাজ্যের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী যেটুকু জলের দরকার,তাই নিচ্ছেন। সংবাদমাধ্যমকে মন্ত্রী জানান তাঁরা কোনওভাবেই চুক্তি ভঙ্গ করছেন না। অন্ধ্রপ্রদেশের ৬৬ শতাংশ জলের ভাগ রয়েছে। তেলঙ্গনার রয়েছে ৩৪ শতাংশ। তাদের ভাগে না থাকা এক ফোঁটা জল তাঁরা ব্যবহার করেননি। তাঁদের এলাকার মধ্যে থাকা খালই খুলে দেওয়া হয়েছে। এই জল তাঁদের আইনত প্রাপ্য। এদিকে দুই রাজ্যের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকায় আসরে নামে কেন্দ্রীয় সরকার। অন্ধ্র ও তেলঙ্গনার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে সঙ্ঘাত থামাতে তারা প্রস্তাব দেয় নভেম্বরের আঠাশ তারিখের মতো নাগার্জুন বাঁধ থেকে জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিক দুই রাজ্য। দুই রাজ্যই রাজি হয় প্রস্তাবে। সঙ্ঘাত যাতে না পারে, সেজন্য বাঁধ সিআরপিএফের তদারক করার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। দুই রাজ্য যাতে চুক্তিমতো নদীর জল নেয়,সেদিকেও নজরদারি চালাবে সিআরপিএফ।
বৃহস্পতিবার অন্ধ্র পুলিশের তাণ্ডবের ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে যখন তেলঙ্গনার মুখ্যসচিব শান্তিকুমারী অভিযোগ জানান অন্ধ্রের প্রায় শ পাঁচেক পুলিশ নাগার্জুন সাগর বাঁধে এসে সিসিটিভি ক্যামেরা ভেঙে দেয় এবং পাঁচ ও সাত নম্বর গেটের রেগুলেটর খুলে পাঁচ হাজার কিউসেকের মতো জল ছেড়ে দিয়েছে। তাঁর অভিযোগ অন্ধ্রের এমন পদক্ষেপ আইন শৃঙ্খলাকে সমস্যার মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে রাজ্যে পুরোদমে যখন বিধানসভা ভোট চলছে,তখন এ ধরণের ঘটনা কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তাঁর আশঙ্কা প্রতিবেশি রাজ্যের এহেন পদক্ষেপ হায়দ্রাবাদ ও আশপাশ এলাকার দুকোটি মানুষের জন্য পানীয় জলের গুরুতর সমস্যা তৈরি করেছে। নলগোণ্ডা জেলায় অন্ধ্রের বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।