Home Bengal শান্তনুর আচরণে বিড়ম্বনায় বিজেপি, দলের একাংশ শাহর সহায়তা চাইছে

শান্তনুর আচরণে বিড়ম্বনায় বিজেপি, দলের একাংশ শাহর সহায়তা চাইছে

by Mahanagar Desk
26 views

মহানগর ডেস্ক : শান্তনু ঠাকুরের কাজকর্ম বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বকে বিরম্বনায় ফেলোছে। বনগাঁ আসনটি জয়ের প্রশ্নে বিজেপি শিবিরে আত্মবিশ্বাসের অভাব নেই। তবে বনগাঁর বিজেপি প্রার্থী যে সব মন্তব্য এবং আচরণ করছেন, তাতে তৃণমূল কংগ্রেসের হাতেই অস্ত্র তুলে দেওয়া হচ্ছে! কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সোমবারের রাজ্য সফরের সময়ে এই বিষয়টি তাঁর কানেও তুলতে চাইছেন বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের একটি অংশ।

গত ২০১৯-এর  লোকসভা ও ২০২১-এট বিধানসভা নির্বাচনে মতুয়া ও উদ্বাস্তু অধ্যুষিত এলাকা থেকে একটা বড় অংশের ভোট এসেছিল বিজেপিতে। এ বার লোকসভা ভোটের আগে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বা সিএএ বিধি কার্যকর হওয়ায় মতুয়া-অধ্যুষিত বনঁগা ও রানাঘাট আসনে তাদের জয় আরও নিশ্চিত বলে বিজেপি শিবির মনে করছে। তবে এই সাফল্যের আবহেই বনগাঁর সাংসদ শান্তনুর মন্তব্যে বিজেপি জটিলতায় পড়েছে। শান্তনু ঠাকুর কখনও বলেছেন, তৃণমূলের সমর্থক কেউ যাতে সিএএ-র দৌলতে নাগরিকত্ব না পান, সেটা দেখা হবে। যারা সিএএ-র বিরোধিতা করছে, তাদের কেউ নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করলেও যাচাই করার সময়ে বিষয়টি দেখে নেওয়া হবে। শান্তনু হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, তৃণমূলের কাউকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না। কখনও আবার দাবি করেছেন, বিজেপি না হয় এখন জাতীয় নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসি করল না। কিন্তু পরে যদি কেউ করে এবং রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে যারা নাগরিক নয় তাদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়, তখন কী হবে! তাঁর ওই সব মন্তব্য নিয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেছে বিজেপি বিরোধীরা। বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের মতে, সিএএ-কে কেন্দ্র করে যে আতঙ্কের পরিবেশ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৈরি করতে চাইছেন, খোদ শান্তনুর মন্তব্য তাতে ইন্ধন যোগাচ্ছে!

শান্তনুর বক্তব্যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যই খণ্ডন হয়ে যাওয়ায় বিড়ম্বনা আরও বেড়েছে! শাহ বলেছিলেন, সিএএ নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন। এতে কারও নাগরিকত্ব হারানোর প্রশ্ন নেই। আর শুভেন্দুও মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে  সিএএ নিয়ে মিথ্যাচারের অভিযোগ করে প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছেন, এই আইনের ফলে কেউ নাগরিকত্ব হারালে তিনি নাকখত দেবেন! প্রায় একই কথা বলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও। তার পরে শান্তনু তৃণমূলকে সতর্কবার্তা দিতে গিয়ে যা বলেছেন, তাতে শাসক দলেরই সুবিধা হয়েছে বলে বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের মত। বঙ্গ বিজেপির নেতাদের কেউ কেউ বলছেন,  শান্তনু ঠাকুরের বক্তব্য আমরা না পারছি গিলতে, না পারছি উগরোতে!’’

এরই মধ্যে গত পরশু মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে প্রয়াত বড়মার ঘরে ঢোকার জন্য তৃণমূলের সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরের বসবাসের অংশে যে ভাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিজে দাঁড়িয়ে থেকে লোকজন নিয়ে দরজা ভাঙার চেষ্টা করেছেন, তাতেও বিজেপি নেতৃত্বের একটা বড় অংশ স্তম্ভিত, চমকিত! দলীয় কর্মীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে সেই রাতেই পরিস্থিতি সামলাতে বাড়তি বিএসএফের বাহিনী পাঠানো হয়েছিল বিজেপিরই এক নেতার হস্তক্ষেপে। বিজেপি নেতাদের কেউ কেউ বলছেন, ‘‘ওই ঘরে প্রবেশ করার জন্য আইন-আদালত এবং অন্যান্য সুস্থ রাস্তা ছিল। তা-ই বলে এক জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বা সাংসদ এমন কাজ করবেন কেন যাতে মানুষের মনে প্রশ্ন দেখা দেয়?’’

এরই পাশাপাশি শান্তনু ঠাকুর ঠাকুরবাড়ির ঘটনার পরে লস্কর-ই-তইবার নামে হুমকি চিঠির যে অভিযোগ সামনে এনেছেন, সেই চিঠির বয়ান নিয়েও নানা মহলে সংশয় দোখা দিয়েছে, যা নিয়ে বিরম্বনায় বিজেপি। দলের একাংশ চাইছে, পরিস্থিতি একেবারে হাতের বাইরে চলে যাওয়ার আগে বনগাঁর প্রার্থীকে সতর্ক করে দিন অমিত শাহ। এরই মধ্যে মঙ্গলবার শান্তনু ঠাকুর অবশ্য মঙ্গলবার দাবি করেছেন, তিনি নিজেই ওই হুমকি-চিঠির ব্যাপারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্টমন্ত্রী শাহের সঙ্গে কথা বলেছেন। শান্তনুর দাবি, ‘‘কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, বিষয়টির তদন্ত হবে। আমি পূর্ণাঙ্গ সিবিআই তদন্তের দাবি করেছি।’’
তবে বঙ্গ বিজেপির একটা বড় অংশ মনে করে শান্তনু ঠাকুর রাজনৈতিকভাবে ততটা পটু নয়, তাই তিনি সিএএ নিয়ে কথা না বললে ভোটের আগে বনগাঁ আসনে তৃণনূল সুবিধাজনক জায়গায় যাওয়ার সম্ভাবনায় থাকত না।

You may also like

Mahanagar bengali news

Copyright (C) Mahanagar24X7 2024 All Rights Reserved