মহানগর ডেস্ক : অনেকেরই নিজের বাড়ি নেই। মাসে মাসে তাঁদের বাড়ি ভাড়া দিয়ে থাকতে হয়। এখন যা বাজার, ভাড়াও বেশ বেড়ে গিয়েছে। কোনও কোনও বাড়ির ভাড়াও অনেক। অনেক মানে প্রচণ্ড। কিন্তু ইতালির নেপলসের এক স্কুল মেনটেন্স কর্মীকে যে অঙ্কের বাড়ি ভাড়া দিতে হয়, সেটা বলার মতো নয় (Incredible High House Rent) ।
এতটাই যে শুনলে চোখ কপালে উঠতে বাধ্য। ইতালির (Italy) ওই বাসিন্দার নাম গ্লুসেপ্পে গিউলিয়ানো। তাঁর বাড়ির অস্বাভাবিক অঙ্কের বাড়িভাড়া মাসে মাসে দিতে তাঁকে নেপলস থেকে মিলানে প্রতিদিন ১৬০০ কিলোমিটার যাতায়াত করতে হয়। সারাদিন এতটা বিশাল পরিমাণ যাতায়াত করে তবে মাসের শুরুতে বাড়ি অলার হাতে ভাড়াটা গুনে গুনে দিতে পারেন। তবে শুধু গিউলিয়ানো একা নন, তাঁর মতো আরও অনেকেই এমন কঠিন সমস্যায় রয়েছেন। শহরে বাড়ির ভাড়া এতটাই বেশি যে তা কল্পনার বাইরে বলা যেতেই পারে।
বাড়ি ভাড়া যেমন আকাশছোঁয়া,তেমনই জীবনযাপনের খরচও প্রচণ্ড বেশি। গিউলিয়ানোর প্রতিদিনের রুটিনে একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া যেতে পারে। ভোরের আগেই তিনি ঘুম থেকে উঠে পড়েন। তারপর নেপলস থেকে মিলনে যেতে হাইস্পিড ট্রেনে চড়ে বসেন। এই সাড়ে পাঁচ ঘণ্টার জার্নি যে কতটা কষ্টের, পরিশ্রম ও মানসিক ধকলের, সেটা গ্রাহ্য না করে বেঁচে থাকার জন্য তাঁকে এটুকু করতেই হয়। চাকরি করেন মিলানের বুস্সোনি হাই স্কুলে এবং মাসের শেষে হাতে পান এক হাজার একুশ ইউরো।
মিলানে যাতায়াতে ওই অঙ্কের ইউরো যে যথেষ্ট নয়, সেটা তাঁর অজানা নয়। কিন্তু নাচার হয়েই সেই টাকা দিয়েই কোনওরকম কষ্টেসৃষ্টে দিন কাটান তিনি। আসল কথা হল বেঁচে থাকা। শহরে সাধ্যের বাড়িভাড়া না মেলায় এমন ভয়ঙ্করভাবে নেপলস থেকে মিলানে তাঁকে বাধ্য হয়েই যাতায়াত করতে হয়। তাঁর এই অসম্ভব কাহিনি ইতালিতে বসবাসকারী নাগরিকদের জীবনযাপনের খরচ নিয়ে সঙ্কটের কথা তুলে ধরেছে। আকাশছোঁয়া বাড়ি ভাড়া নিয়ে বহু নাগরিককে পদেপদে ঝুঝতে হচ্ছে।
যদিও ইতালির সংবিধানে রয়েছে কর্মীদের এমন বেতনের ব্যবস্থা করতে হবে যা তাঁদের স্বাধীন ও মর্যাদার সঙ্গে বেঁচে থাকা সুনিশ্চিত করবে। গিউলিয়ানোর এমন ঘাম ঝরানো কাহিনি নিয়ে অবশ্য কোনও কোনও সংবাদপত্র সংশয় প্রকাশই করেছে। তারা জানিয়েছে তিনি শস্তায় বাড়ি ভাড়া শহরের বাইরে নিতে পারেন, যাতে তাঁর মাসের খরচ অনেকটাই বেঁচে যায়।
কেউ কেউ গিউলিয়ানোর নেপলস থেকে মিলান যাওয়ার বিষয়টি নিয়েও সন্দেহ করতে ছাড়েনি। তবে তাঁর সহকর্মীরা গিউলিয়ানোর দাবিকে সমর্থন করে স্কুলের কাছাকাছি বাড়ি খুঁজে দেওয়ার ব্যাপারে স্কুলকর্তৃপক্ষের সহযোগিতার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে যতই বিতর্ক থাক তাঁর এই অসম্ভব যাতায়াত নিয়ে তিনি কিন্তু ইতালিতে কর্মীদের আকাশছোঁয়া বাড়িভাড়া নিয়ে কর্মীদের প্রাণান্তকর লড়াইয়ের প্রতীক হয়ে রয়ে গিয়েছেন।