মহানগর ডেস্ক: দেখতে দেখতে নতুন বছরের দোরগোড়ায় আমরা। ডিসেম্বরের প্রায় শেষ, শহরে পারদ নেমেছে অনেকটাই। শীতকালে শরীর ও ত্বক উভয় খারাপ হতেই থাকে। যেমন ত্বকে চুলকানি, খসখসে ভাব থেকে শুরু করে ত্বক ফেটে যাওয়া, ত্বকের শুষ্কতা ইত্যাদি দেখতে পাওয়া যায়। তেমনি জ্বর, অ্যাজমা, গা- ব্যথা, অসার ভাবসহ বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা ও সংক্রমণ দেয়। তাই এই সময় স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়টির দিকে আমাদের যেমন নজর দেওয়া উচিত তেমনি ত্বকের ও যত্ন নেওয়া দরকার। কিন্তু ব্যস্ততার মাঝে আমাদের অনেকেরই ত্বক পরিচর্যার সময় থাকেনা। তাই রোজ যদি আমরা নিয়মমেনে এই সমস্ত স্বাস্থ্যকর খাবার খাই এবং কিছু স্বাস্থ্যকর নিয়ম মেনে চলি তাহলে এই শীতে আমাদের ত্বক ও শরীর দুই থাকবে সতেজ , সুস্থ , সুন্দর। আসুন জেনে নেই সেগুলো।
সবুজ সতেজ জাতীয় খাদ্য গ্রহণ – শীতকালে প্রচুর পরিমাণে টাটকা, রং – বেরঙের সবজি ও ফল পাওয়া যায়,এবং যেগুলির বাজার মূল্যও অন্যান্য ঋতুর তুলনায় কম থাকে। তাই প্রচুর পরিমাণে সবুজ সবজি খেতে হবে আমাদের। সবুজ সবজি ও ফল আমাদেরকে তরুণ, তরতাজা ও আমাদের স্কিন কে প্রাকৃতিক ভাবে সুন্দর রাখে।
ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খাওয়া- সব ধরনের ভিটামিনই আমাদের শরীরের পক্ষে উপকারী। বিশেষ করে টাটকা সবুজ সবজি ও ফল।এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ থাকে।যেমন কমলালেবু, পেয়ারা,পাকাপেঁপে,ব্রকলি ইত্যাদি খাবারের অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। এতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ‘ সি ‘ থাকে।যা আমাদের শরীর ও ত্বক উভয় ভালো রাখে ।অন্যদিকে ভিটামিন জাতীয় খাদ্য আমাদের শরীরের রোগ- প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
ভিটামিন ‘ডি’এর ঘাটতি কমানো – ভিটামিন ‘ডি’ আমাদের শরীরের পক্ষে খুবই উপকারী। এই ভিটামিন আমাদের হারের ব্যথা কমায়, হার এবং দাঁত সুস্থ রাখে।এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।কিন্তু এই ভিটামিন খুব সহজে খাবারের তালিকায় পাওয়া যায়না। তাই রোজ সকালে অন্তত ১৫ মিনিট রোদে বসে থাকুন।এতে ভিটামিন ‘ডি’ এর ঘাটতি পূরণ হবে এবং শরীর সুস্থ থাকবে।পারলে ‘ডি’ কমপ্লেক্স ট্যাবলেট ও খেতে পারেন, কিন্তু সেক্ষেত্রে ডাক্তারের পরমর্শ নিয়ে খাওয়া উচিত।
বেশি করে জলপান করা – শীতে আমরা বেশিভাগ ক্ষেত্রেই চা, কফি জাতীয় গরম পানীয় খেয়ে থাকি। গরম ঋতুর তুলনায় এসময় এই জাতীয় পানীয় বেশি পান করা হয়। চা, কফি শরীরের পক্ষে প্রয়োজনীয়। কিন্তু এইসময় আমাদের খুব বেশি জলপান করা দরকার। এর ফলে ত্বক ও শরীর উভয় আর্দ্র থাকে ।
নিয়মিত ব্যায়াম করুন – আমরা বিশেষ করে বাঙালিরা খুবই ভোজন প্রিয়। শীত কালে ঠাণ্ডা মনোরম আবহাওয়া, এবং বিভিন্ন ইভেন্ট থেকে শুরু করে পিকনিক , নানান জায়গায় ঘুরতে যাওয়া ইত্যাদি দেখা যায়। স্বভাবতই খাওয়া দাওয়া অন্যান্য ঋতুর তুলনায় বাড়ে। তাই ওজন ঠিক রাখতে এবং শরীর ‘ফিট’ রাখতে এইসময় সকালে নিয়মিত কিছু সময় ব্যয়াম করা এবং ঘাম ঝরানো দরকার।
পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা- শীতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন বিশেষ করে হাত ধোয়ার অভ্যাস করা উচিত। খাবার আগে তো নিশ্চই এমনকি মাঝে মধ্যেই হাত – পা পরিষ্কার রাখা উচিত। আবহাওয়া শুষ্ক হওয়ায় এই সময় বাতাসে ঘুরে বেড়ায়। গণটয়লেট যতটা পারা যায় এড়িয়ে চলুন।
এছাড়া বেশকিছু খাবার খেয়ে শীতকালে দীর্ঘসময় আমরা সুস্থ থাকতে পারি। যেমন –
তেঁতুল- তেঁতুল একটি ভালো পাচক। দইয়ের সঙ্গে এটি মিশিয়ে পান করতে পারেন।
আমলকি – আমলকি সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। চ্যবনপ্রাশ, শরবৎ বা মোরব্বা হিসেবে এটি খেতে পারেন।
কুল – রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে কুল। যে সমস্ত শিশুরা শীতকালে প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়ে, তাদের পক্ষে কুল উপকারী।
তিল ও গুড়- শীতকালে বেশি করে তিল-গুড় খাওয়া উচিত। হাড় ও জয়েন্টের জন্য উপকারী এটি। আখ লিভারকে পুনরুজ্জীবিত করে। পাশাপাশি ত্বককেও উজ্জ্বল রাখে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
আখ – আখের রস ওজন কম করতে সাহায্য করে। এমনকী শরীরের মেটাবলিক রেট বাড়াতেও সাহায্য করে আখ।