নয়াদিল্লি: জি ২০ সম্মেলন আয়োজন করে গোটা বিশ্বে প্রসংশিত হয়েছে ভারত। সম্মেলনে ভারতের একাধিক প্রস্তাব প্রতিনিধি দেশগুলির কাছে গৃহীত হয়েছে। ইউক্রেন নিয়ে গোটা বিশ্ব দ্বিধাবিভক্ত। এমন পরিস্থিতিতেও জি ২০ সম্মেলনে ভারতের সভাপতিত্বকে প্রসংশা করেছেন পুতিন। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ সংক্রান্ত ভারতের কূটনৈতিক প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে, যদিও বিষয়টি নিয়ে ঐক্যমত হননি অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রনেতারা। অনেকেই মনে করছেন এই সম্মেলনকে সুকৌশলে এড়িয়ে গেছে চিন ও রাশিয়া। সম্মেলনে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক সিদ্ধান্তগুলির মধ্যে ভারত ও ইউরোপের মধ্যে বানিজ্যিক করিডোর নির্মাণ, আফ্রিকান ইউনিয়নে প্রবেশের অনুমোদন ও গ্লোবাল বায়োফুয়েলের ব্যবহার বাড়ানোর মতো প্রস্তাব চিন ও রাশিয়াকে বিপাকে ফেলতে পারে বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে দেশের মধ্যে যখন বিরোধীরা জোট ইন্ডিয়ার সলতে পাকাতে ব্যস্ত তখন জি -২০ সম্মেলন লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির বড়সড় কূটনৈতিক জয় বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও বিরোধীরা ৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে এই সম্মেলন, এমনকি সোনারূপোর বাসনে অতিথি আপ্যায়ণের সমালোচনা করেছে। তবে বিরোধীদের কোণঠাসা করতে এই সম্মেলন যে বিজেপির কাছে বড় ইস্যু হয়ে উঠতে চলেছে তা আর বলার বাকি নেই। বিশেষ করে অর্থনৈতিক দুর্নীতি নিয়ে কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তে সেটিং তত্ত্বের জবাব দিতেও এই সম্মেলনে ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সে বরাদ্দ বাড়ানো ও অর্থনৈতিক দুর্নীতির তদন্তকারী বিভিন্ন দেশের সংস্থার সঙ্গে সংযোগ রেখে চলার জন্য একাধিক প্রস্তাব রাখা হয় ভারত সরকারের পক্ষ থেকে। এরফলে বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে অর্থনৈতিক সহায়তাকারীদের চিহ্নিত করতে সুবিধা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এমনকী আর্থিক কেলেঙ্কারীতে যুক্ত কেউ দেশ ছেড়ে পালিয়েও পরিত্রাণ পাবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। লোকসভা নির্বাচনের আগে আর্থিক দুর্নীতি নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে মোদী সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে যদিও বিরোধীরা কুলুপ এঁটেছে।
এছাড়াও সম্মেলনের ফাঁকে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে একাধিক ইস্যু নিয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও করেছেন প্রধাানমন্ত্রী। ইতালি, ফ্রান্স, ব্রিটেন সহ একাধিক দেশের সঙ্গে সাক্ষরিত হয়েছে চুুক্তি। এমনকি ঔপনিবেশিক শাসনকালে দখল হওয়া কোহিনূর, ময়ূর সিংহাসনের মতো মূল্যবান সম্পদ দেশে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এই সম্মেলনে ভারতীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে বিশ্বসভায় তুলে ধরাকে বিজেপি লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে বড় হাতিয়ার করতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।