মহানগর ডেস্ক : ডিআইজি মুর্শিদাবাদ রেঞ্জ মুকেশ কুমারকে সরিয়ে দিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। এই নিয়ে ভোটের মুখে আরও এক অফিসারকে সরিয়ে দেওয়া হল। বহরমপুরের কংগ্রেস প্রার্থী অধীর রঞ্জন চৌধুরী মুকেশ কুমারের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ নির্বাচনে সহযোগিতা না করার অভিযোগ জানিয়েছিলেন। কমিশন তার পরেই সরিয়ে দিল মুকেশ কুমারকে।
অধীর রঞ্জন চৌধুরী সোমবার মুকেশ কুমারের অপসারণ প্রসঙ্গে বলেন, “মুকেশ কুমার আইপিএস, আইএএস হতে পারেন। শিক্ষার আড়ালে তাঁর মনে একজন ভয়ঙ্কর মানুষ লুকিয়ে আছে। আমি অভিযোগ করেছিলাম, মুকেশ কুমার মুর্শিদাবাদে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগাবার মতো কাজ করছে। জাতীয় নির্বাচন সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে মুকেশ কুমারকে সরিয়ে। এবার ভোট নিরপেক্ষ হবে।”
এদিকে মুকেশ কুমারের অপসারণের বিষয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আলিপুরদুয়ারের সভা থেকে বলেন, “আজ মুর্শিদাবাদের ডিআইজিকে সরিয়ে দিয়েছে। রাজ্যের সব এখন দেখছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। রাজ্য বারবার বলার পরও যদি রাজ্যে অশান্তি, দাঙ্গা হয় তার দায় নির্বাচন কমিশনকে নিতে হবে।”
২০১৯ সালে মুকেশ কুমার মুর্শিদাবাদ জেলার এসপি ছিলেন। পরবর্তী সময়ে তাঁকে মুর্শিদাবাদ এবং নদীয়া রেঞ্জের ডিআইজি করা হয়। ঠিক কী কারণে আইপিএস মুকেশ কুমারকে নির্বাচন কমিশন সরিয়েছে সেটা স্পষ্ট করেনি। কমিশনের নির্দেশনামায় শুধু উল্লেখ করা হয়েছে, এই অফিসারকে সরিয়ে আপাতত পুলিশ হেডকোয়াটারের কোনও “নন-ইলেকশন” পদ দিতে হবে।
রাজ্যের মুখ্যসচিব বিপি গোপালিককে চিঠি দিয়ে জাতীয় নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, সোমবার বিকেল ৫টার মধ্যে ওই পদের জন্য তিন জনের নাম বাছাই করে কমিশনকে পাঠাতে হবে রাজ্যকে। তাঁদের মধ্যে থেকে এক জনকে মুর্শিদাবাদের নতুন ডিআইজি পদে নিয়োগ করা হবে।
তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার, এই আইপিএস অফিসারের বিরুদ্ধে শাসক দলের হয়ে কাজ করার অভিযোগ করেছিলেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী। বহরমপুরের কংগ্রেস প্রার্থীর দাবি ছিল, মুকেশ কুমার মুর্শিদাবাদের এসপি থাকাকালীন সব থানায় যে কজন ওসি বা আইসি ছিলেন, ডিআইজি হওয়ার পর সেই অফিসারদেরই তিনি আবার থানায় নিয়ে এসেছেন।অধীরের অভিযোগ, ওই সব পুলিশ আধিকারিকরা তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে দিনের পর দিন কাজ করে গেছেন। এখন সেই অফিসারদেরই ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে জেলায়। যার নেপথ্যে ছিলেন এই আইপিএস মুকেশ কুমার। এই বিষয়ে নির্দিষ্ট অভিযোগ নির্বাচন কমিশনেও জানিয়েছিলেন অধীর। কমিশন মুকেশ কুমারকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর জল্পনা শুরু হয়েছে যে অধীর রঞ্জন চৌধুরীর অভিযোগের প্রেক্ষিতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
যদিও অধীর রঞ্জন চৌধুরী মুকেশ কুমারের অপসারণের পর দাবি করেছেন, “কমিশন সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এবার নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে।”