মহানগর ডেস্ক: দিল্লির কংগ্রেস নেতৃত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি দুর্বল, তৃণমূলের সমালোচনা করেন না, এই ধারণা অসত্য প্রমাণ হল সোমবার। এদিন মালদার সুজাপুরে প্রচারে এসে বিজেপির পাশাপাশি একই আসনে বসিয়ে তৃণমূলকেও আক্রমণ করলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী-সহ বাংলার কংগ্রেস নেতারা বরাবরই বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলকেও আক্রমণ করে আসছিলেন। আর এ বার তাঁদের কথা মেনে নিয়ে তৃণমূলকে আক্রমণ শানালেন এআইসিসি সভাপতি খাড়গে।
এদিন খাড়গে বলেন, ‘‘যে ভাবে নরেন্দ্র মোদী সারা দেশে কংগ্রেসকে দুর্বল করতে চাইছেন, সেই একই ভাবে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলও কংগ্রেসকে ভেঙে দিতে চাইছে।’’ এর পর তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে খড়গে আরও বলেন, ‘‘আমি তৃণমূল সমর্থকদের বলছি, আপনারা নিজেদের ভোট নষ্ট করবেন না। তৃণমূল কখনও দেশের ক্ষমতায় আসতে পারবে না। বিজেপিকে সরিয়ে দেশের ক্ষমতায় আসার শক্তি একমাত্র কংগ্রেসেরই রয়েছে।’’
প্রসঙ্গত, মালদহের ভোটের প্রচারে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী জোট ইন্ডিয়ায় থেকেও বাংলায় কেন কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করা গেল না, তার ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। তিনি দাবি করেছিলেন, বাংলায় সিপিএমের সঙ্গে জোট না রাখার শর্তে দু’টি আসন ছাড়ার প্রস্তাবও দিয়েছিলেন কংগ্রেসকে। কিন্তু সিপিএমের সঙ্গ ছাড়তে না চাওয়ায় কংগ্রেসের সঙ্গে মমতার দল জোট করতে পারেনি। সঙ্গে ভোট কেটে বিজেপিকে জেতানোর চেষ্টাও কংগ্রেস করছে বলে অভিযোগ করেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, বাংলায় ইন্ডিয়া জোট নেই, কিন্তু দিল্লিতে ইন্ডিয়া জোট আছে, তিনিই এই জোটের নামকরণ করেছেন, আগামী দিনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই দিল্লিতে ইন্ডিয়া জোট সরকার গড়বে, তৃণমূল নির্ণায়কের ভূমিকায় থাকবে। এই আবহে খাড়গের মুখে তৃণমূলের এই সমালোচনা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব চেয়েছিলেন, সর্বভারতীয় নেতারা বাংলায় এসে যেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বকে নিশানা করে ভাষণ দেন। খাড়গে তৃণমূলের নাম করে আক্রমণ শানালেও, একটি বারের জন্যও মমতা বা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম মুখে আনেননি। তবে এ প্রসঙ্গে অধীর-ঘনিষ্ঠ পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের সংগঠন ইন-চার্জ নিলয় প্রামাণিকের বক্তব্য, ‘‘তৃণমূল কোনও জাতীয় রাজনৈতিক দল নয়। আর এই নির্বাচন কেন্দ্রে সরকার ঠিক করার নির্বাচন। এটা সারা ভারতের নির্বাচন, তাছাড় তৃণমূল এখানে বিজেপির বিরোধীই নয়। এমনিতেও বাংলায় খাল কেটে কুমির অর্থাৎ বিজেপিকে তৃণমূলই এনেছিল, মন্ত্রিত্বের লোভে বিজেপির সঙ্গে জোট করেছিলেন মাননীয়া। বিজেপি নামক গণশত্রুর সাথে সারা ভারতে একটা দলই লড়ছে, সেই দলটি হল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস।’’