Home Crime স্ত্রীকে খুনের ভিডিও প্রতিবেশীদের হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপে শেয়ার, পুলিশকে নিজেই খবর দিলেন স্বামী

স্ত্রীকে খুনের ভিডিও প্রতিবেশীদের হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপে শেয়ার, পুলিশকে নিজেই খবর দিলেন স্বামী

by Mahanagar Desk
36 views

মহানগর ডেস্ক:   পরকিয়ার জেরে প্রাণ গেল আবারও এক মহিলার। স্বামীরর দাবি, স্বামীর বন্ধুর সঙ্গেই পরকীয়ায় লিপ্ত ছিলেন স্ত্রী, এমনকি স্বামীর বন্ধুর  সঙ্গে পালানোর ছকও কষেছিল মহিলা। স্ত্রীকে বার বার বোঝানোর পরও স্ত্রী নাছোড়বান্দা ছিলেন সংসার ছেড়ে পালানোর জন্য। তাই রাগের বসে ভারী বস্তু দিয়ে স্ত্রীর মাথায় মেরে খুন করেন স্বামী। তার পর  রক্তাক্ত দেহের পাশে বসে ভিডিয়ো করেন।

ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার, গুজরাতের রাজকোটে। মৃতার নাম অম্বিকা। তাঁর স্বামীর নাম গুরুপা জিরোলি। নির্মাণ শিল্পের সঙ্গে যুক্ত জিরোলি মঙ্গলবার সকালে স্ত্রীকে ভারী বস্তু দিয়ে মাথায় মেরে খুন করেন। স্ত্রীকে খুন করার পর,তিনি একটা ভিডিয়ো করেন, তাতে তার কারণটাও বলেন। স্ত্রীর রক্তাক্ত দেহের পাশে বসেই ওই ব্যক্তি, পুরো ঘটনার সবিস্তারে বর্ননা দেন ভিডিওতে। ভিডিয়ো করে সেই ভিডিও তিনি প্রতিবেশীদের হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপে শেয়ারও করেন । ওই দম্পতি যেই আবাসনে থাকতেন, তাঁদের আবাসনের চেনা পরিচিতদের নিয়ে একটি হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপ খোলা রয়েছে। অভিযুক্ত স্বামী সেই গ্রুপে ওই ভিডিয়োটি শেয়ার করে দেন, পাঠানো মাত্র এই ঘটনার চারিদিকে শোরগোল ফেলে দেয়। ভিডিও শেয়ার করার মধ্যেই ব্যক্তি গুরুপা জিরোলি নিজেই পুলিশকে ফোন করে ঘটনাস্থলে ডাকেন। অভিযুক্ত স্বামী বলেন, স্ত্রীকে খুন করার জন্য তিনি দুঃখিত, কিন্তু তিনি এটা করার জন্য অনুতপ্ত নন।

মূলত এই দম্পতির দুই সন্তান।বড় মেয়ের বয়স ১৭ বছর, ছোট ছেলের বয়স ১০।  অভিযুক্ত ব্যক্তি গুরুপা জিরোলি ভিডিয়োয় জিরোলি দাবি করেছেন, তাঁর স্ত্রী অম্বিকার সাথে তাঁরই বন্ধুর পরকীয়া চলছে । বার বার বারণ করার পরও তাঁর স্ত্রী শোনেননি।   বন্ধুর  সঙ্গে স্ত্রীর দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা এই পরকীয়া কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলেন না স্বামী। অন্যদিকে তাঁর স্ত্রী অম্বিকা তাঁকে এবং ছেলেমেয়েদের ছেড়ে প্রেমিকের সাথে পালানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন। ব্যক্তির দাবি ছিল, তাঁদের মেয়ের সামনেই বোর্ড পরীক্ষা,তাই স্ত্রীকে বারণ করেছিলেন যে,পরীক্ষার সময় অন্তত কোন পদক্ষেপ স্ত্রী যেন না নেন, মেয়ের যেই কটা দিন পরীক্ষা চলছে, ওই কটা দিন স্ত্রীকে তিনি শান্ত থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এমনকি এটাও বলেন, মেয়ের পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলে ব্যপারটি নিয়ে আলোচনায় বসবেন। তারপও যদি মনপুত না হয় সিধান্ত, চাইলে তারপর তাঁরা বিবাহবিচ্ছেদও করবেন। তাতেও অম্বিকা মানতে নারাজ ছিলেন বলে জানান গুরুপা । অশান্তি আর সহ্য করতে না পেরে রাগের মাথায় হাতের সামনে ভারী বস্তু ছিল, সেটা হাতে তুলে মাথায়   সজোরে মারেন। তারপরই মহিলার মৃত্যু ঘটে ।

পুলিশ সূত্রে জানা  গিয়েছে  দম্পতি আদতে মহারাষ্ট্রের শোলাপুরের বাসিন্দা ছিলেন। ২০০৩ সাল থেকে তাঁরা রাজকোটে থাকতে শুরু করেছিলেন। তদন্ত করে পুলিশ জানতে পারেন যে, সোমবার রাত ২টো নাগাদ দম্পতির মধ্যে তুমুল অশান্তি বাঁধে। পুলিশ জানিয়েছে দম্পতি ঝগড়া করছিল তার মধ্যেই অভিযুক্ত ভারী বস্তুর দ্বারা স্ত্রীর মাথায় সজোরে আঘাত করেন মী। পুলিশ যখন তাঁকে গ্রেফতার করতেএসেছিলেন জিরোলি বলেছিলেন, তাঁকে যেন হাতকড়া পরানো না হয়। তিনি কোনও বড় মাপের অপরাধী নন।  ঘটনার জেরে পুলিশ প্রথমে এই অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটক করেছিলেন। তারপর পুলিশ অপেক্ষা করছিলেন মৃতার বাপের বাড়ির লোকের জন্য। মৃতার বাড়ির লোকজন এসে এফআইআর করার পরই, গ্রেফতার করা হয়েছে গুরুপা জিরোলিকে ।পুলিশ জানিয়েছেন, খতিয়ে দেখা হচ্ছে দুটি ভিডিয়ো, এমনকি তাঁরা তদন্তে নেমেছেন। নেপথ্যে অন্য কোন কারণ আছে কিনা তা  খতিয়ে দেখা হবে।  এমনকি এই ঘটনা খতিয়ে দেখার জন্য দম্পতির পরিবার, আশেপাশের প্রতিবেশী এবং পরিচিতদের কাছে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছেন পুলিশ।

You may also like