মহানগর ডেস্ক : শেখ শাহজাহানের গ্রেফতারিতে আদালতের কোনও স্থগিতাদেশ নেই বলে সোমবার স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম। প্রধান বিচারপতি বলেছেন, সন্দেশখালি মামলায় শেখ শাহজাহানকে পার্টি করতে।
আদালতের এই নির্দেশের পরই তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ কলকাতা হাই কোর্টকে ধন্যবাদ জানিয়ে তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, “শেখ শাজাহান গ্রেপ্তার নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সঠিক বলেছিলেন। আদালতের আইনি জটেই বিষয়টা আটকে ছিল। তার সুযোগে রাজনীতি করছিল বিরোধীরা। আজ হাইকোর্ট সেই জট খুলে পুলিশকে পদক্ষেপে অনুমোদন দেওয়ায় ধন্যবাদ। সাত দিনের মধ্যে শাজাহান গ্রেপ্তার হবে।” এদিকে সন্দেশখালি থানা সোমবার জানিয়েছে, শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে তিনটি এফআইআর রয়েছে।
সোমবারই কলকাতা হাই কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে পারবে রাজ্য পুলিশ। তাতে কোনও বাধা নেই। আদালত তেমন কোনও নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয়নি। তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়, আদালতের নির্দেশের কারণেই শাহজাহানকে রাজ্য পুলিশ গ্রেফতার করতে পারছে না।
এই বিষয়ে বরিবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “শেখ শাহজাহানের গ্রেফতারিতে তৃণমূল বাধা নয়, বিচার ব্যবস্থা বাধা। শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে রাজ্য সরকার। ইডি তাঁকে ধরতে পারেনি। কিন্তু কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা গিয়ে রাজ্য পুলিশের ওই এফআইআরের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ পেয়েছে। ফলে পুলিশের হাত-পা বেঁধে দিয়েছে আদালতই।’’ সোমবার হাই কোর্টে সেই প্রসঙ্গে উঠলে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম স্পষ্ট করে জানান, ইডির মামলায় সিট গঠনের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছিল। শাহজাহানকে গ্রেফতার করার বিষয়ে কোনও স্থগিতাদেশ আদালত দেয়নি। পুলিশ চাইলেই তাঁকে গ্রেফতার করতে পারে। শাহজাহানকে এই মামলায় যুক্ত করে নোটিস দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন বিচারপতি। আদালতের এই নির্দেশের পরেই জানা গেল, সন্দেশখালি থানায় শাহজাহানের বিরুদ্ধে নতুন এফআইআর দায়ের হয়েছে। শিবু হাজরা, উত্তম সর্দার-সহ মোট আট জনের বিরুদ্ধে ওই এফআইআর হয়েছে।
শেখ শাজাহান গ্রেপ্তার নিয়ে .@abhishekaitc সঠিক বলেছিলেন। আদালতের আইনি জটেই বিষয়টা আটকে ছিল। তার সুযোগে রাজনীতি করছিল বিরোধীরা। আজ হাইকোর্ট সেই জট খুলে পুলিশকে পদক্ষেপে অনুমোদন দেওয়ায় ধন্যবাদ। সাত দিনের মধ্যে শাজাহান গ্রেপ্তার হবে।
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) February 26, 2024
উল্লেখ্য, রেশন দুর্নীতি মামলায় শাহজাহানের নাম জড়িয়েছিল। ইডি তাঁর বাড়িতে চালাতে যায়। অভিযোগ, সেখান থেকে মার খেয়ে ফিরতে হয় ইডি কর্তাদের। সেই ঘটনার দিন থেকেই তৃণমূলের এই নেতা শেখ শাহজাহান বেপাত্তা। ইডি দফতরে তিনি পর পর হাজিরা এড়িয়ে যাছেন। আদালতে শেখ শাহজাহানের আগাম জামিনের মামলার শুনানি চলছে। এই পরিস্থিতিতে সন্দেশখালিতে শাহজাহানের গ্রেফতারি চেয়ে পথে নেমেছেন গ্রামবাসীদের একাংশ। এদিকে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি শেখ শাহজাহান, শিবু হাজরা, উত্তম সর্দারের নামে এফআইআর হয় শ্লীলতাহানি, আর্থিক তছরূপের অভিযোগে, এক মহিলা এই এফআইআর করে। এছাড়াও গৌড় দাস নামে এক ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতেও এফআইআর হয় শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে।
এদিকে কুণাল ঘোষ সাংবাদিক সম্মেলন করে কুণাল ঘোষ বলেন, “আদালতে আর কোনও স্থগিতাদেশ রইল না, তাই আগামী ৭ দিনের মধ্যে শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করা হবে।” এই একই সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “শেখ শাহজাহান সাংসদ, মন্ত্রী,জেলার নেতা নয়। আমাদের সাধারণ সম্পাদক যা বলেছিলেন আদালত সেই বিষয়ে মান্যতা দিয়ে জানিয়েছে শেখ শাহজাহানের গ্রেফতারিতে কোনও স্থগিতাদেশ নেই। দল শেখ শাহজাহানকে আড়াল করছে বলে যা বলা হচ্ছে তা ঠিক নয়।”