মহানগর ডেস্ক : লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণার পাশাপাশি অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা, অরুণাচল প্রদেশ এবং সিকিমে বিধানসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করলেন ভারতের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার। তবে ব্রাত্য থেকে গেল আয়তনের দিক থেকে দেশের বৃহত্তম কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটির বিধানসভা নির্বাচন। ফলে এক দশক পরেও বিধানসভা নির্বাচন হচ্ছে না জম্মু ও কাশ্মীরে।
এছাড়াও একই সঙ্গে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের ২৬টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপ-নির্বাচন হবে লোকসভা নির্বাচনের পাশাপাশি। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের দুটি কেন্দ্রেও উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভগবানগোলা এবং বরানগর বিধানসভা কেন্দ্রে উপ-নির্বাচন হবে। ভগবানগোলার তৃণমূল বিধায়ক ইদ্রিশ আলি প্রয়াত হয়েছেন এবং বরানগরের তৃণমূল বিধায়ক তাঁর বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়ে, তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।
তবে জম্মু ও কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচন না হলেও জম্মু ও কাশ্মীরের পাঁচটি এবং লাদাখের একটি লোকসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরে শেষ বার বিধানসভা ভোট হয়েছিল অবিভক্ত জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যে। ২০১৯ সালের অগস্টে ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদটি বাতিল করে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ অধিকার এবং রাজ্যের মর্যাদা বিলোপ করে নরেন্দ্র মোদীর এনডিএ সরকার। তার তিন বছর আগেই অবশ্য রাজনৈতিক অচলাবস্থার কারণে ভেঙে দেওয়া হয়েছিল বিধানসভা।
গত ১১ ডিসেম্বর ২০২৩, সুপ্রিম কোর্ট জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিলের বিষয়ে মোদী সরকারের সিদ্ধান্তে অনুমোদন দেওয়ার পরেই সেখানে বিধানসভা নির্বাচন করানোর ইঙ্গিত দিয়েছিল নরেন্দ্র মোদীর সরকার। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দফায় দফায় জম্মু ও কাশ্মীর গিয়ে রাজ্য প্রশাসন, সেনা-আধাসেনা আধিকারিক এবং গোয়েন্দা অফিসারদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক তখন করেছিলেন। গত ১১ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে সেখানে বিধানসভা নির্বাচন করাতে হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জম্মু ও কাশ্মীরে বিধানসভা ভোট ঘোষিত হল না।
প্রসঙ্গত, জম্মু ও কাশ্মীরের আসন পুনর্বিন্যাসের দায়িত্বে থাকা “ডিলিমিটেশন কমিশন”-এর রিপোর্টের ভিত্তিতে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বিধানসভা আসনসংখ্যা ৮৩ থেকে বাড়িয়ে ৯০ করা হয়েছে গত বছর। সাইত্রিশটি আসনের মধ্যে ছ’টি বেড়ে জম্মুতে ৩৭ থেকে ৪৩ টি আসন হয়েছে এবং কাশ্মীরে একটি আসন বেড়ে ৪৬ থেকে ৪৭টি আসন হয়েছে। কমিশন জানিয়েছে, ২০১১ সালের জনসংখ্যার ভিত্তিতেই আসন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই আসন বাড়ানো নিয়ে অভিযোগ উঠেছে যে, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে হিন্দুপ্রধান জম্মুতে মুসলিম প্রধান কাশ্মীর উপত্যকার তুলনায় বেশি আসন বাড়ানো হয়েছে। নতুন ব্যবস্থায় জম্মু-কাশ্মীরে যে পাঁচটি লোকসভা কেন্দ্র রয়েছে, তার প্রত্যেকটিতে এখন থেকে ১৮টি করে বিধানসভা কেন্দ্র থাকবে। অন্য দিকে, পূর্বতম রাজ্য জম্মু ও কাশ্মীর ভেঙে তৈরি হওয়া আর এক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাদাখে থাকবে একটি লোকসভা কেন্দ্র। অবিভক্ত জম্মু ও কাশ্মীরের অংশ লাদাখে থাকা ৪টি বিধানসভা কেন্দ্রের অস্তিত্ব ইতিমধ্যেই বিলোপ হয়েছে। কিন্তু বাকি অংশে কবে ভোট হবে, তা নিয়ে সংশয় থেকেই গেল।