মহানগর ডেস্ক: দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চেয়েছিল সংসদ হানায় মূলপাণ্ডা ললিত ঝাঁ। উদ্দেশ্য ছিল দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে তাদের দাবি মেটাতে কেন্দ্রীয় সরকারকে বাধ্য করা। আদালতে এমনটাই জানিয়েছে দিল্লি পুলিশ। সূত্রের খবর. ২০০১ সালের সংসদে হামলার বর্ষপূর্তিতে সংসদে হানার ঘটনা পুনর্নিমাণ করতে চেয়ে সংসদের অনুমতিও চেয়েছে তারা। এখনও পর্যন্ত সংসদের নিরাপত্তা লঙ্ঘন ও স্মোক বম্ব এবং প্রতিবাদের ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সংসদ কক্ষ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে সাগর শর্মা ও মনোরঞ্জন ডি-কে। অন্যদিকে সংসদের বাইরে থেকে আটক করা হয়েছে নীলম আজাদ ও অমল শিন্ডেকে।
পাতিয়ালা হাউস আদালতকে দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে সংসদ হানার মূল পাণ্ডা ললিত স্বীকার করেছে সংসদের নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ব্যাপারে ছক কষতে সে অন্যান্য অভিযুক্তদের সঙ্গে একাধিকবার দেখা করেছে। বিহারের বাসিন্দা ললিত কলকাতায় শিক্ষক হিসেবে চাকরি করতো। তাকে শুক্রবার সাতদিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। শুরুর দিকে সংসদের বাইরে প্রতিবাদ জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও ওই পরিকল্পনার তেমন জোরালো প্রভাব পড়বে না, এমনটা আঁচ করে আরও জোরালো পরিকল্পনার কথা ভাবে ললিত। তা হল সংসদের ভেতর ঢুকে প্রতিবাদ করা। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত তথ্য পেতে গুগলের সাহায্য নিয়েছিল। সংসদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কীরকম ছিল, তা জানার জন্য পুরনো ভিডিও খুঁটিয়ে দেখেছিল ললিত।
সেইসঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা খুব ভালোভাবে খতিয়ে দেখে সে। যাতে ধরা না পড়ে,সেজন্য অভিযুক্তরা শুধুমাত্র সিগনাল অ্যাপ ব্যবহার করে। কোনও শত্রুদেশের বা জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে তার কোনও যোগাযোগ আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে ধৃত ললিতকে জেরা করবে পুলিশ। সংসদে হানার পর রাজস্থানে পালিয়ে গিয়েছিল। তাই ওই রাজ্যে সে কীভাবে কোথায় কোথায় গিয়েছিল,তাকে সেখানে নিয়ে গিয়ে ফের খতিয়ে দেখবেন তদন্তকারীরা। পুলিশ জানিয়েছে ললিত তার মেবাইল ফোন ফেলে দেয় ও অন্যান্যদের মোবাইল পুড়িয়ে দিয়েছিল। দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে সংসদ হানার পর ললিত রাজস্থানে পালিয়ে গিয়ে সেখানে দুদিন ছিল এবং বৃহস্পতিবার রাতে দিল্লি ফিরে আসে। মূল পাণ্ডা ললিতের দাবি সে সংসদের নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনার উদ্দেশ্য ছিল বেকারত্ব নিয়ে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করা। তবে পুলিশ ওই ঘটনার পেছনে বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত পাচ্ছে, যে ষড়যন্ত্র বাস্তবায়িত করতে বিদেশি অর্থ জোগান পেয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে পুলিশ জুতোর ডিজাইনারদেরও খোঁজ করছে, যারা স্মোক ক্যানিস্টার লুকিয়ে রাখার জন্য জুতোর বিশেষ ডিজাইন তৈরি করেছিল। তদন্ত চলাকালীন সিসিটিভি ফুটেজ পুঙ্খানুপুঙ্ক্ষভাবে পরীক্ষা করে দেখছেন তদন্তকারীরা। পুলিশের ধারণা মূল ছক ব্যর্থ হলে প্ল্যান বি অনুসারে সংসদ হানা চালানো হতো।