মহানগর ডেস্ক: একমিনিট আগে হেসে হেসে কথা বলছিলেন মানুষটি। কিন্তু তারপরই রেগে অগ্নিশর্মা হয়ে এমন করে উঠলেন যে আপনি পালিয়ে যাওয়ার পথ পেলেন না। খামোখা মেজাজও হারিয়ে ফেললেন তিনি। এ ব্যাপারে তাঁদের দোষ দেওয়াটা উচিত নয়। কারণ দোষটা তাদের নয়। এমন ব্যাপারকে বাইপোলার ডিসঅর্ডার (Bi-Polar Disorder Symptom) বলা হয়ে থাকে।
যে অসুখে মানুষের মনের ভাব মিনিটে মিনিটে বদলে যায়। আর মনের ভাব তাঁরা কোনওভাবেই বাগে আনতে পারেন না। ম্যানিয়া হল বাইপোলার ডিজঅর্ডার অসুখের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট। ম্যানিয়া হচ্ছে কারও স্বাভাবিক ব্যবহারের দ্রুত পরিবর্তন, যা অনেকেরই চোখে পড়তে বাধ্য। যাঁরা এই উপসর্গে আক্রান্ত, অনেকক্ষেত্রেই তা বড়রকমের ঝুঁকি হয়ে দাঁড়ায়।
যেমন অনেকসময় এ ধরণের ব্যক্তি এমনকিছু কাজে নিজেদের জড়ান,তা শারীরিক,সামাজিক বা কখনও কখনও আর্থিক ক্ষতি ডেকে আনে। এঁরা জীবন বাজি রেখে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে যোগ দিতে পরোয়া করেন না।
ঘটনা হল এই অবস্থা সহজে ঠিক হওয়ার নয়। মৃত্যু পর্যন্ত চলে এমন ব্যবহার। তবে ম্যানিয়া জিনিসটা আস্তে আস্তে নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। ম্যানিয়ায় আক্রান্ত মানুষ বা তার থেকে কম ক্ষতিকর হাইপোম্যানিয়ার বশ যখন হন,তখন তাঁরা নিজেরাই ব্যাপারটা বুঝতে পারেন। তাঁর আশপাশে থাকা প্রিয়জনেরা টের পান আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে প্রায় নিঃশব্দে পরিবর্তন আসছে।
কেউ ম্যানিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আগে যদি সচেতন হয়ে সময়োচিত ব্যবস্থা নেওয়া হয়,তাহলে সমস্যা মিটে যাওয়া সম্ভব হয়। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন আসন্ন ম্যানিয়া পর্বের আগে আমাদের জানা উচিত কীভাবে ম্যানিয়া আমাদের বিচারবোধে প্রভাব ফেলতে পারে। বাইপোলার ওয়ান কমপক্ষে একটি ম্যানিয়াক পর্ব একসপ্তাহ চলে। কিন্তু বাইপোলার টু-য়ে আক্রান্ত ব্যক্তি হাইপারম্যানিয়ার সঙ্গে একটি বড় ধরণের অবসাদে ভোগেন।
যদিও ম্যানিয়া ও হাইপারম্যানিয়ার মধ্যে বিস্তর তফাত, দুটির মধ্যে পার্থক্যও অনেক। দুটি ক্ষেত্রেই আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রচণ্ড উত্তেজনায় ভোগেন, প্রচণ্ড উৎসাহ তাঁদের মধ্যে দেখা যায়। হাইপোম্যানিয়া পর্বে এই অসুখের আরেকটি পর্ব হল সাইক্লোথিমিয়া, যেটি হাইপোম্যানিয়ার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। তবে তাতে অবসাদে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই বললেই চলে।