মহানগর ডেস্ক : এবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সন্দেশখালির সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে মন্তব্য করলেন। উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে মহিলা নির্যাতনের যে সব অভিযোগ সামনে এতদিন পর উঠে এসেছে, তা শুনে তিনি বিস্মিত বলেই জানিয়েছেন, এমনকি প্রশ্ন তুলেছেন প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, ‘আমি ক্রুদ্ধ এবং ক্ষুব্ধ। কিন্তু আপাতত মুখ বন্ধ রাখছি।’ বছরের শুরুতে গত ৫ জানুয়ারি শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি করতে গিয়ে ইডি আধিকারিক দের উপর হামলার ঘটনায় রাজ্যের শাসকদলকে কটাক্ষ করেছেন তিনি। জানিয়ে রাখা ভাল যেই সমস্ত ইডি আধিকারিকরা আক্রান্ত হন সেই ইডি আধিকারিকদের দেখতে হাসপাতালেও গিয়েছিলেন তিনি । শাহজাহানের খোঁজ এখনও মেলেনি। সেই সঙ্গেই এলাকার মহিলারা বিভিন্ন অভিযোগ তুলেছেন, শাহজাহানের শাগরেদদের বিরুদ্ধে । অভিযোগ উঠছে নারীরা নির্যাতনের । বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ওই প্রসঙ্গে মঙ্গলবার উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুরে বলেন, ‘আমি আমার জ্ঞান হওয়া থেকে এ সব শুনিনি। যা দেখলাম টিভিতে। যে সব কথা ওঁনারা বলছেন— বলা হচ্ছে, রাতে ফোন করে ডাকা হত। জোর করে মিটিংয়ে নিয়ে যাওয়া হত!’ একটু থেমে বিচারপতির সংযোজন, ‘বিভিন্ন রাজনৈতিক দল জোর করে মিটিং-মিছিলে নিয়ে যায়। সেটা জানা থাকলেও রাত্রিবেলা কাউকে পার্টি অফিসে যেতে বলা হচ্ছে, এটা আমার কাছে পরিচিত ঘটনা নয়। আমি ব্যক্তিগত ভাবে বলতে পারি, আমি অত্যন্ত ক্রুদ্ধ এবং ক্ষুব্ধ। আপাতত আমি মুখ বন্ধ করেই রাখছি।’ মহিলা নির্যাতনের অভিযোগ প্রসঙ্গে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের আরও এক প্রশ্ন ছিল, ‘প্রশাসন কি জানত না এমন ঘটনা ঘটছে? নাকি পুলিশ প্রশাসন সব জেনেও চোখ বুজে ছিল?’
ঘটনাচক্রে সন্দেশখালির একাংশ গ্রামবাসীরা অভিযোগ করেছেন যে মহিলাদের আলাদা চোখে দেখতেন শাহজাহানের শাগরেদ শিবপ্রসাদ হাজরার দলের লোকেরা জোর করে তাঁদের মিটিং-মিছিলে ডেকে নিয়ে যাওয়া হত। এমনকি রাতের দিকেও বাড়িতে ডেকে পাঠানো হত, না গেলে হুমকি দেওয়া হত । এই সবরকম অভিযোগ নিয়ে রাজ্য জুড়ে তোলপার চলছিল। এই নিয়ে জাতীয় স্তরেও সরব হয়েছেন বিরোধীরা। সোমবার দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করেন এই বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। সন্দেশখালির মহিলাদের সঙ্গে ঠিক কী কী ঘটেছে, তা গোটা দেশের জানা উচিত বলেও মন্তব্য করেন স্মৃতি ইরানি । এখানেই শেষ নয় উত্তপ্ত পরিস্থিতি দেখে সন্দেশখালিতে যান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। গিয়েছিল রাজ্য মহিলা কমিশনের প্রতিনিধি দলও । মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, সন্দেশখালিতে এমন কোনও মহিলাকে পাননি যিনি শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেছেন। গ্রামবাসীরাই তাঁদের জানিয়েছেন মহিলাদের রাতে ডেকে নিয়ে গিয়ে বাড়ির কাজ করানো হত বলে দাবি ছিল লীনার। অন্য দিকে, সোমা দাস মিত্রের নেতৃত্বের ১০ সদস্যের বিশেষ দল তদন্ত করছে সন্দেশখালি নিয়ে ওই সব অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য ডিআইজি সিআইডি ।